if you want to remove an article from website contact us from top.

    আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    Mohammed

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    এই সাইট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পান।

    স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    English

    স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র  প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ ঘোষণা প্রবাসী মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান হিসাবে কার্যকর। এমনকি ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ ঘোষণা দেশের সংবিধান হিসাবে কার্যকর থাকবে।

    একটি অতীব সংকটময় অবস্থার মোকাবেলায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সামরিক বাহিনীর আক্রমণের অব্যবহিত পূর্বে এবং পাকিস্তান বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের প্রাক্কালে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ছিল নিম্নরূপ:

    এটিই সম্ভবত আমার শেষ বার্তা: আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণের নিকট আমার আহবান, আপনারা যে যেখানেই থাকুন এবং আপনাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করুন। যতদিন পাক হানাদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত না হয় এবং যতদিন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হয় ততদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।

    শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে প্রচারের জন্য মধ্যরাতের কিয়ক্ষণ পরে চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়। মার্চ মাসের ২৬ ও ২৭ তারিখে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র (পরের নামকরণ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র) থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার আরও দুটি ঘোষণা প্রচার করা হয়। এর একটি প্রচারিত হয় চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ হান্নান কর্তৃক এবং অন্যটি মেজর জিয়াউর রহমান কর্তৃক।

    ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী কর্তৃক ঢাকা ও দেশের অন্যান্য অংশে জনগণের উপর আক্রমণ চালানোর প্রাক্কালে ঊর্ধ্বতন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, গণপরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যগণ নিরাপত্তার জন্য সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নেন। ৩০ মার্চের মধ্যেই তাদের অনেকে কলকাতায় সমবেত হন। গণপরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের যেসকল সদস্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতায় মিলিত হন তারা একটি প্রবাসী আইন পরিষদ গঠন করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়ন করেন। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী বৈদ্যনাথতলায় (পরবর্তী নাম মুজিবনগর) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গণপরিষদ সদস্য অধ্যাপক এম ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে নবগঠিত আইন পরিষদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে। এ ঘোষণায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করা হয়। ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কার্যকর বলে ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণাবলে প্রবাসী মুজিবনগর সরকার বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং এ ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকলের মধ্যে চেইন অব কমান্ড স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। নিম্নে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পূর্ণ বিবরণ দেয়া হলো:

    মুজিবনগর, বাংলাদেশ

    তারিখ: ১০ এপ্রিল ১৯৭১

    যেহেতু ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল; এবং

    যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় ১৬৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল; এবং

    যেহেতু জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের  ৩ মার্চ তারিখে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহবান করেন; এবং

    যেহেতু তিনি আহূত এই অধিবেশন স্বেচ্ছাচার এবং বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন; এবং

    যেহেতু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করার পরিবর্তে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনাকালে ন্যায়নীতি বহির্ভূত এবং বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করেন; এবং

    যেহেতু উল্লিখিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, এবং বাংলাদেশের অখন্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান; এবং

    যেহেতু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনা করেছে এবং এখনও বাংলাদেশের বেসামরিক ও নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন গণহত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে; এবং

    যেহেতু পাকিস্তান সরকার অন্যায় যুদ্ধ ও গণহত্যা এবং নানাবিধ নৃশংস অত্যাচার পরিচালনা দ্বারা বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের পক্ষে একত্রিত হয়ে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব করে তুলেছে; এবং

    যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর তাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে;

    সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সে ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করছি

    এবং এর দ্বারা পূর্বাহ্ণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করছি; এবং

    এতদ্বারা আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন; এবং

    রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন; ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতাসহ সর্বপ্রকার প্রশাসনিক ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী থাকবেন; এবং

    তাঁর কর ধার্য ও অর্থব্যয়ের ক্ষমতা থাকবে; এবং

    বাংলাদেশের জনসাধারণের জন্য আইনানুগ ও নিয়মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতারও তিনি অধিকারী হবেন।

    বাংলাদেশের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, কোনো কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধান প্রদত্ত সকল দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন। আমরা আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি যে, বিশ্বের একটি জাতি হিসাবে এবং জাতিসংঘের সনদ মোতাবেক আমাদের উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তেছে তা যথাযথভাবে আমরা পালন করব।

    সূত্র : bn.banglapedia.org

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

    এই নিবন্ধটির তথ্যসমূহের যথার্থতা সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে। প্রাসঙ্গিক আলোচনা আলাপ পাতায় পাওয়া যেতে পারে। অনুগ্রহ করে বিতর্কিত উক্তি বা তথ্যসমূহের জন্য অবশ্যই নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র প্রদান করুন।

    মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত প্রথম বাংলাদেশের পতাকা

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র

    তৈরি ২৬ মার্চ ১৯৭১

    অনুমোদন ১০ এপ্রিল ১৯৭১

    অবস্থান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

    শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ

    লেখক(গণ) প্রথমে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঘোষণা

    পরে ১৯৭১ সালের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষণা

    স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ গণপরিষদ

    উদ্দেশ্য পাকিস্তান থেকে বিচ্ছেদ ঘোষণা এবং তার ব্যাখ্যা করা

    বাংলাদেশের ইতিহাস

    দেখান প্রাচীন ইতিহাস দেখান মধ্যযুগীয় ইতিহাস দেখান মধ্যযুগীয় ইতিহাস দেখান

    বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম

    দেখান স্বাধীন বাংলাদেশ

    বাংলাদেশ প্রবেশদ্বার

    দেস

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বলতে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার বা মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ১০ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে প্রণীত একটি ঘোষণাপত্র বোঝায় যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণাপত্র প্রচার করা হয়। ইংরেজিতে এটিকে বলা হয়েছিল “প্রোক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্স”। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশ নামে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কারণ ঘোষণাপত্রে লেখা হয়েছে: ‘আমাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে’।

    যতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলেছে ততদিন মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান বা ক্রান্তিকালীন বিধান হিসেবে এই ঘোষণাপত্র কার্যকর ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পরও এই ঘোষণাপত্র নবপ্রতিষ্ঠ দেশের সংবিধান হিসেবে কার্যকর ছিল। ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হয় তখন সংবিধান হিসেবে এর কার্যকারিতার সমাপ্তি ঘটে।

    ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রণীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ ছিল বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান। ২০১১ সালের ৩০শে জুন তারিখে বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে মূল সংবিধানের অঙ্গীভূত করা হয়েছে।[১]

    প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

    ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন[সম্পাদনা]

    ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ

    ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। দলটি পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসন হতে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে এবং ৩১৩ আসনবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জ্জন করে, যা আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনের আইনী অধিকার প্রদান করে। কিন্তু নির্বাচনে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো শেখ মুজিবের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিরোধিতা করেন। তিনি প্রস্তাব করেন পাকিস্তানের দুই প্রদেশের জন্যে থাকবে দু-জন প্রধানমন্ত্রী। "এক ইউনিট কাঠামো" নিয়ে ক্ষুব্ধ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে এরূপ অভিনব প্রস্তাব নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার করে। ভুট্টো মুজিবের ৬-দফা দাবি মেনে নিতেও অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন। মার্চের ৩ তারিখ পূর্ব ও পশ্চিম অংশের এই দুই নেতা পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের ভাগ্য নির্ধারণে ঢাকায় বৈঠকে মিলিত হন। তবে বৈঠক ফলপ্রসূ হয় নাই। মুজিব সারা দেশে ধর্মঘটের ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। এই ভাষণে তিনি ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের আগেই বাস্তবায়নের জন্য চার দফা দাবি পেশ করেন:

    অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে।

    সামরিক বাহিনীকে সেনানিবাসে ফিরে যেতে হবে।

    নিহত ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা অনুসন্ধান করতে হবে।

    ২৫ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের আগে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

    শেখ মুজিব তার ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা বলেন: "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম"। তার এই ভাষণ গোটা জাতিকে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উন্মাতাল করে তোলে।

    পাকিস্তানের সামরিক সরকার ক্ষমতা কোনো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি ছিলনা। যদিও ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের তারিখ নির্ধারিত হয়, কিন্তু ভেতরে ভেতরে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং সামরিক বাহিনীর অফিসারদের নিয়ে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বুনতে শুরু করেন। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ কোনো কারণ ছাড়াই ৩ তারিখের নির্ধারিত অধিবেশন বাতিল করা হয়। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। সারা দেশে বিক্ষোভের বিস্ফোরণ হয়। ঢাকা পরিণত হয় মিছিলের নগরীতে। মুজিবুর রহমান সারা দেশে ৫ দিনের হরতাল এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তার আহ্বানে সারা পূর্ব পাকিস্তান কার্যত অচল হয়ে যায়। সামরিক সরকার কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, কিন্তু এতে আন্দোলন প্রশমিত হয়নি। ৫ দিন হরতাল শেষে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন।

    সূত্র : bn.wikipedia.org

    সূত্র : chromewebdata

    আপনি উত্তর বা আরো দেখতে চান?
    Mohammed 22 day ago
    4

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    উত্তর দিতে ক্লিক করুন