কনস্টান্টিনোপল এর বর্তমান নাম কি
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে কনস্টান্টিনোপল এর বর্তমান নাম কি পান।
কনস্টান্টিনোপল
কনস্টান্টিনোপল
স্থানাঙ্ক: ৪১°০০′৫০″ উত্তর ২৮°৫৭′২০″ পূর্ব
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এই নিবন্ধটি ৩৩০ থেকে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বিদ্যমান একটি ঐতিহাসিক শহর সম্পর্কে। গ্রীক এবং রোমান সাম্রাজ্যের প্রথমদিককার সময়ের এই শহর সম্পর্কে জানার জন্য বাইজেন্টিয়াম দেখুন। এর বর্তমান অবস্থা অর্থাৎ আধুনিক শহরটি সম্পর্কে জানার জন্য ইস্তাম্বুল দেখুন।
"কনস্টান্টিনোপলিস" শিরোনামকে এখানে পুনর্নির্দেশ করা হয়েছে। প্রাচীন অসরোয়েনায় থাকা একই নামের শহরটি সম্পর্কে জানার জন্য কনস্টান্টিনোপল (অসরোয়েন) দেখুন। অটোমান গ্রিক সংবাদপত্র সম্পর্কে জানার জন্য কনস্টান্টিনোপলিস (সংবাদপত্র) দেখুন।
কনস্টান্টিনোপল
গ্রিক: Κωνσταντινούπολις
লাতিন:
কনস্টান্টিনোপলের মানচিত্র, যা বর্তমানে ইস্তাম্বুল শহরের ফাতিহ জেলার অন্তর্ভুক্ত
বিকল্প নাম বাইজান্টিওন (পুরাতন গ্রীক নাম), নোভা রোমা ("নতুন রোম"), মিকলাগার্ড/মিকলাগার্থ (প্রাচীন নর্স), সারিগ্রাদ (স্লাভীয়), কুস্তান্তিনিয়া (আরবি), বেসিলেয়ুসা ("শহরের রানী"), মেগালোপোলিস ("মহান শহর"), Πόλις ("শহর"), কনস্টান্টিনিয়ে (উসমানীয় তুর্কি), ইস্তাম্বুল (তুর্কি)
অবস্থান ফাতিহ, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক
অঞ্চল মারমারা অঞ্চল
স্থানাঙ্ক ৪১°০০′৫০″ উত্তর ২৮°৫৭′২০″ পূর্ব
ধরন সাম্রাজ্যিক শহর যার অংশ রোমান সাম্রাজ্য
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য
লাতিন সাম্রাজ্য উসমানীয় সাম্রাজ্য এলাকা
কনস্ট্যান্টিনীয় প্রাচীরের মধ্যে আবদ্ধ ৬ কিমি২ (২.৩ মা২)
থিওডোসীয় প্রাচীরের মধ্যে আবদ্ধ ১৪ কিমি২ (৫.৪ মা২)
ইতিহাস
নির্মাতা মহান কন্সট্যান্টাইন
প্রতিষ্ঠিত ১১ মে ৩৩০
সময়কাল ধ্রুপদী সভ্যতার পর থেকে মধ্যযুগের শেষ পর্যায়
সংস্কৃতি গ্রীক লাতিন উসমানীয়
কনস্টান্টিনোপল (গ্রিক: Κωνσταντινούπολις or Κωνσταντινούπολη ; লাতিন: ; উসমানীয় তুর্কি: قسطنطینیه, ; এবং আধুনিক তুর্কি: ) শহরটি ছিল রোমান সাম্রাজ্য, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য, লাতিন সাম্রাজ্য ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী। ৩২৪ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট কন্সটান্টাইন এটিকে নিজ রাজধানীতে পরিণত করেন।[১] তার নামে এটির নামকরণ করা হয় ও ৩৩০ এর ১১ মে উৎসর্গিত হয়।[১] ১২ শতকে[২] এটি ইউরোপের সর্ববৃহৎ ও সর্বাপেক্ষা ধনী শহর ছিল।[৩]নামকরণ[সম্পাদনা]
কনস্টান্টিনোপলের পূর্বনাম ছিল বাইজান্টিয়াম। সম্রাট কন্সটান্টাইন যখন এখানে রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী সরিয়ে আনেন তখন এই শহরের নামকরণ করেন কনস্টান্টিনোপল যার অর্থ কন্সটান্টাইনের শহর। পরবর্তীতে ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ কন্স্টান্টিনোপল জয় করে, এর নাম পরিবর্তন করে রাখেন "ইস্তাম্বুল" (মতান্তরের "ইসলামবুল", অর্থাৎ ইসলামের শহর) এ নামটিই এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
সম্রাট কন্সটান্টাইনের সময়ের বহু আগে থেকেই এই শহর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এটি ছিল ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী বসফরাস প্রণালীর তীরে অবস্থিত। ধারণা করা হয় খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকে মেগাররা এখানে চালসেডন(Chalcedon) নামে একটি শহর স্থাপন করে। এটি অবস্থিত ছিল বসফরাসের অপর পারে। পরবর্তীতে মেগারদের এক গোত্রপ্রধান বাইজাস এর নামে বাইজান্টিয়াম শহরটি স্থাপিত হয়। এই বিষয়ে হেরোডোটাস থেকে শুরু করে অনেক গ্রিক ও রোমান ইতিহাসবিদ অনেক তথ্য রেখে গেছেন।
দীর্ঘকাল ধরে এই শহরের মূল গুরুত্ব ছিল বাণিজ্যবন্দর হিসেবে। দ্বিতীয় শতকের শেষ দিকে সম্রাট সেপ্তিমিয়াস সেভারাস তার প্রতিদ্বন্দ্বী পেসিনিয়াস নিগারকে হারানোর পর এই শহরের অনেক ক্ষতি সাধন করেন। কন্সটান্টাইন যখন রোমান সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানীর জন্য জায়গা অনুসন্ধান করছিলেন তখন শুরুতে আরও অন্যান্য শহরের কথাও চিন্তা করেছিলেন। ৩২৪ খ্রিষ্টাব্দেও এটি গ্রামের মত ছিল। অনেকটা হঠাৎ করেই তিনি এখানে রাজধানী স্থাপন করেন। খ্রিষ্টান ঐতিহাসিকগণ অলৌকিক প্রভাবের কথা বলেছেন।
রাজধানী হবার পরই এই শহরের অভুতপুরব উন্নতি ঘটে। চতুর্থ শতকের শুরুতে এখানে দুই লক্ষাধিক লোক বাস করত। পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য যতদিন গুরুত্বপূর্ণ ছিল ততদিন এই শহরও জৌলুশময় ছিল। কিন্তু ১২০৪ সালে চতুর্থ ক্রুসেডের সময় ক্রুসেডাররা এই শহরের ব্যাপক ক্ষতি করে। পরবর্তী ২০০ বছর এই শহর অধঃপতনের দিকেই ছিল। তবে খ্রিষ্টান ধর্মের একটি প্রধান শহর হিসেবে এর গুরুত্ব সবসময়ই ছিল। এই শহরের প্রতিরক্ষা পদ্ধতিও ছিল অত্যন্ত দৃঢ়। তাই আরব ও তুর্কিরা বহু শতাব্দী ধরে চেষ্টা করেও এই শহর জয় করতে পারেন নি। মুহাম্মাদ(সাঃ) এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ১৪৫৩ সালে ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ এই শহরটি জয় করার মাধ্যমে ১১০০ বছরের খ্রিষ্টীয় রোমান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং তিনি এটিকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন।[৪][১]
গ্যালারি[সম্পাদনা]
বাইজেন্টাইন যুগে কনস্টান্টিনোপল এবং প্রোপোন্টিস (মারমারা সাগর)
আয়া সোফিয়া
রোমান সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী হিসাবে কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠার স্মরণে ৩৩০ সালে কন্সট্যান্টাইন কর্তৃক নির্মিত কন্সট্যান্টাইনের স্তম্ভ
থিওডোসিয়াসের স্মৃতিস্তম্ভ হলো ফেরাউন তৃতীয় থুতমোজের প্রাচীন মিশরীয় স্মৃতিস্তম্ভ
পামাক্যারিস্টোস গির্জা বা থিওটোকোস পামাক্যারিস্টোস গির্জা হলো ইস্তাম্বুলের অন্যতম বিখ্যাত গ্রীক অর্থোডক্স বাইজেন্টাইন গীর্জা
একটি সাধারণ ক্রস, যা ইস্তাম্বুলের আয়া আইরিন গির্জার আইকনোক্লাস্ট শিল্পের উদাহরণ
সম্রাট প্রথম কনস্টান্টাইন, আয়া সোফিয়া, আনু. 1000 খ্রিষ্টাব্দ
আয়া আইরিন
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
↑ ঝাঁপ দিন:
"Constantinople" in , Oxford University Press, Oxford, 1991, p. 508. আইএসবিএন ০-১৯-৫০৪৬৫২-৮
↑ Rosenberg, Matt. "Largest cities through history." About.com.
↑ Pounds, Norman John Greville. , p. 124. CUP Archive, 1979. আইএসবিএন ০-৫২১-২২৩৭৯-২.
↑ Alexander, Vasiliev। ।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
উইকিমিডিয়া কমন্সে কনস্টান্টিনোপল সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
মুসলমানরা যেভাবে ইস্তাম্বুল জয় করে
তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর ইস্তাম্বুল আগে কনস্টান্টিনোপল নামে পরিচিত ছিল। ১৪৫৩ সালে উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ ওই শহরটি জয় করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখান। এটি ছিল রোমান (বাইজেন্টাইন) সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।
মুসলমানরা যেভাবে ইস্তাম্বুল জয় করে
যুগান্তর ডেস্ক
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
281 Shares
ShareShareShareTweetSharePrint
ফাইল ছবি
তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর ইস্তাম্বুল আগে কনস্টান্টিনোপল নামে পরিচিত ছিল। ১৪৫৩ সালে উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ ওই শহরটি জয় করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখান। এটি ছিল রোমান (বাইজেন্টাইন) সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৪৫৩ সালের ৬ এপ্রিল থেকে ২৯ মে পর্যন্ত অবরোধের সম্মুখীন হয়। এরপর চূড়ান্তভাবে শহরটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধিকারে আসে। তারও পুর্বে মহান সেলজুক সুলতান আল্প আরসালান ও শহরটি জয় করেছিলেন কিন্তু এর দখল ধরে রাখতে পারেননি।
কনস্টান্টিনোপলে বিজয়কে ১৫০০ বছরের মত টিকে থাকা রোমান সাম্রাজ্যের সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। উসমানীয়দের এই বিজয়ের ফলে উসমানীয় সেনাদের সামনে ইউরোপে অগ্রসর হওয়ার পথে আর কোনো বাধা থাকল না। খ্রিস্টানদের জন্য এই শোচনীয় পতন ছিল অকল্পনীয়।
বিজয়ের পর সুলতান মুহাম্মদ তার রাজধানী এড্রিনোপল থেকে সরিয়ে কনস্টান্টিনোপল বা ইস্তাম্বুলে নিয়ে আসেন। শহর অবরোধের আগে ও পরে শহরের বেশ কিছু গ্রীক ও অগ্রীক বুদ্ধিজীবী পালিয়ে যায়। তাদের অধিকাংশ ইতালিতে চলে যায় এবং ইউরোপীয় রেনেসাতে সাহায্য করে।
অনেক ঐতিহাসিক বিশ্লেষক, মুসলমানদের কনস্টান্টিনোপলের বিজয় ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতনকে মধ্য যুগের সমাপ্তি হিসেবে দেখেন।
কনস্টান্টিনোপল কখন থেকে রোমানদের হাতে ছিলএর আগে রোমান সম্রাট কন্সট্যান্টাইন কর্তৃক ৩৩০ সাল থেকে কনস্টান্টিনোপল রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পরবর্তী ১১ শতাব্দী যাবত শহরটি বেশ কয়েকবার অবরোধ সম্মুখীন হলেও ১২০৪ সালে চতুর্থ ক্রুসেডের সময় ছাড়া এটি কেউ দখল করতে পারেনি।
ক্রুসেডাররা কনস্টান্টিনোপলকে ঘিরে একটি অস্থায়ী ল্যাটিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। তবে সাম্রাজ্যের বাকি অংশ বেশ কিছু গ্রীক রাষ্ট্র, বিশেষ করে নাইসিয়া, এপিরাস ও ট্রেবিজন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই গ্রীকরা মিত্র হিসেবে ল্যাটিন শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করলেও বাইজেন্টাইন মুকুটের জন্যও নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়।
নাইসিয়ানরা ১২৬১ সালে কনস্টান্টিনোপল অধিকার করে নেয়। দুর্বল এই সাম্রাজ্যে অল্প পরিমাণে শান্তি বিরাজ করছিল। এরপর ল্যাটিন, সার্বিয়ান, বুলগেরিয়ান ও উসমানীয় তুর্কিরা আক্রমণ করে।
১৩৪৬ থেকে ১৩৪৯ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ব্ল্যাক ডেথ বলে পরিচিত মহামারীতে শহরের প্রায় অর্ধেক অধিবাসী মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও দুই শতাব্দী আগে ক্রুসেডারদের আক্রমণে ফলে অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক আধিপত্য খর্ব হওয়ার কারণে লোকসংখ্যা কমছিল। ফলে ১৪৫৩ সালে শহরটি বড় মাঠ দ্বারা পৃথক করা কিছু দেয়ালঘেরা গ্রামের সমষ্টি ছিল। পুরো শহরটির চারদিক পঞ্চম শতাব্দীর থিওডোসিয়ান দেয়াল দ্বারা ঘেরা ছিল।
১৪৫০ সাল নাগাদ সাম্রাজ্য ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পড়ে। এসময় শহরের বাইরের কয়েক বর্গ মাইল, মারমারা সাগরের প্রিন্স দ্বীপ ও পেলোপন্নিস ও এর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিস্ট্রাস নিয়ে গঠিত ছিল। চতুর্থ ক্রুসেডের ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট স্বাধীন ট্রেবিজন্ড সাম্রাজ্য কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে টিকেছিল।
সুলতান মুহাম্মদের উত্থান হলো যেভাবে১৪৫১ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ তার পিতার উত্তরাধিকারী হন। মাত্র ১৯ বছর বয়সী একজন তরুণ শাসক হিসেবে কতটুকু যোগ্য তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠে। বলকান ও এজিয়ান অঞ্চলে তিনি খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো সফল ব্যক্তি হতে পারবেন না-বলেই সবার ধারণা ছিল। কিন্তু দিন যতই যেতে থাকে ততই তার প্রজ্ঞা ও কৌশল সবার সামনে স্পষ্ট হয়েছে। অভিনব রণকৌশল প্রয়োগ করে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেন একজন যোগ্য শাসক হিসেবে।
উসমানীয় সাম্রাজ্যের সামরিক শক্তি ও রণকৌশলসুলতান মুহাম্মদ সমুদ্রের দিক থেকে শহর অবরোধের জন্য একটি নৌবহর গড়ে তোলেন। এটি অংশত গেলিপোলির গ্রিক নাবিকদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল।
উসমানীয়রা মাঝারি আকারের কামান তৈরীতে দক্ষ একথা অবরোধের আগে সবার জানা ছিল। কিন্তু গোলা ছোড়ার পাল্লা প্রতিপক্ষের ধারণার বাইরে চলে যায়। অস্ত্রের ক্ষেত্রে উসমানীয়দের এই সক্ষমতা উরবান নামক এক হাঙ্গেরিয়ান (কারো মতে জার্মান) ব্যক্তির কারণে সম্ভব হয়।
তার নকশা করা একটি কামানের নাম ছিল “শাহি”। এটির দৈর্ঘ্য ছিল ২৭ ফুট (৮.২ মি) এবং এটি ৬০০ পাউন্ডের (২৭২ কেজি) একটি গোলা প্রায় এক মাইল (১.৬ কিমি) দূরে ছুড়ে মারতে পারত।
বেশ কয়েকবার চেষ্টার পরও বালতুঘলুর অধীন উসমানীয় নৌবহরগুলো যখন গোল্ডেন হর্নে প্রবেশ করতে পারছে না তখন অভিনব বুদ্ধি মাথায় আসে সুলতান মুহাম্মদের। তিনি গোল্ডেন হর্নের উত্তরে গালাটার উপর দিয়ে চর্বি মাখানো কাঠের একটি রাস্তা তৈরির আদেশ দেন। অর্থাৎ, স্থলপথে নৌকা চালানোর অবিশ্বাস্য ঘটনা!
জাহাজগুলোকে টেনে গোল্ডেন হর্নে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে বাইজেনটাইনদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। ২৮ এপ্রিল রাতে উসমানীয় জাহাজগুলো ধ্বংস করার একটা চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু উসমানীয়রা পূর্বে সংকেত পাওয়ায় খ্রিস্টান বাহিনী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পিছু হটে।এভাবে নানা ঘটনা পরিক্রমায় মুসলমানদের হাতে পতন হয় কনস্টান্টিনোপল। শুরু হয় ইস্তাম্বুলের নতুন ইতিহাস।
281 Shares Share
যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও খবর
মেধা তালিকায় শীর্ষে ‘হট গার্ল’!
সৌদি আরবের এবার রিয়াদ এয়ার
নেপালে একা পর্বতারোহণে নিষেধাজ্ঞা
কনস্টান্টিনোপল কীভাবে ইস্তাম্বুল হলো?
তুরস্কের ইস্তাম্বুল নানা কারণে ঐতিহাসিক শহর। এটি বিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে বিরলও বটে। কারণ, শহরটি একই সঙ্গে এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য) এবং ইউরোপের অংশ। অবস্থানগত দিক থেকে এই বিশেষত্বই বলে দেয় কেন শহরটি শত শত বছর ধরে সাম্রাজ্যগুলোর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। একসময় ইস্টার্ন রোমান এম্পায়ার বা বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল এই শহর, তখন এর নাম ছিল কনস্টান্টিনোপল। পরবর্তী সময়ে এটি অটোমান সাম্রাজ্যেরও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়।
একটু থামুন
ইতিহাস
ইতিহাস কনস্টান্টিনোপল কীভাবে ইস্তাম্বুল হলো?
লেখা:মিজানুর রহমান
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪: ৩০
সহজ মানচিত্রে ইস্তাম্বুলের অবস্থানঅলংকরণ: ম্যাপস ডটমি
তুরস্কের ইস্তাম্বুল নানা কারণে ঐতিহাসিক শহর। এটি বিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে বিরলও বটে। কারণ, শহরটি একই সঙ্গে এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য) এবং ইউরোপের অংশ। অবস্থানগত দিক থেকে এই বিশেষত্বই বলে দেয় কেন শহরটি শত শত বছর ধরে সাম্রাজ্যগুলোর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। একসময় ইস্টার্ন রোমান এম্পায়ার বা বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল এই শহর, তখন এর নাম ছিল কনস্টান্টিনোপল। পরবর্তী সময়ে এটি অটোমান সাম্রাজ্যেরও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়।
কিন্তু কনস্টান্টিনোপলের নাম কীভাবে ইস্তাম্বুল হলো?
কনস্টান্টিনোপলের সবচেয়ে পুরোনো মানচিত্র, আঁকা হয়েছিল ১৪২২ সালেছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
অনেকে মনে করতে পারেন, শহরটি দখল করার পর অটোমানরা এর নাম পরিবর্তন করেছিল। আসলে তা নয়। বহু বছর ধরে শহরটি পরিচিত ছিল ‘Constantinople’ শব্দেরই বিভিন্ন রূপে। যেমন অটোমানরা শহরটির নামের বানান লিখত ‘Kostantiniyy’। আবার কনস্টান্টিনোপলের আগেও শহরটি বেশ কিছু নামে পরিচিত ছিল। শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল গ্রিকরা, ৬৫৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। তখন এর নাম ছিল Bazantion। এই শব্দেরই লাতিন সংস্করণ হচ্ছে Byzantium। নিউ রোম, অগাস্টা অ্যান্টোনিনা, কুইন অব সিটিস, দ্য সিটি ইত্যাদি নামেও একসময় শহরটিকে চিনত মানুষ। ৩৩০ সালে রোমান সম্রাট কনস্টানটিন ক্ষমতায় এসে নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে এর নাম রাখেন কনস্টানিনোপল। সম্রাট কনস্টান্টিন ছিলেন প্রথম রোমান সম্রাট, যিনি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। রোমানদের পর অটোমানরা ক্ষমতা দখল করলেও শহরের নাম তারা পরিবর্তন করেনি।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের বিখ্যাত জাদুঘর আয়া সোফিয়াকে ২০২০ সালে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
তবে রোমান সাম্রাজ্যের মানুষ গ্রিক শব্দভান্ডারের is timˈbolin বা eis tan polin-এর সঙ্গে মিল রেখে কনস্টান্টিনোপলকে Istanpolin নামে ডাকতে শুরু করে, যার অর্থ ‘শহরের দিকে’। কিন্তু শহরের দাপ্তরিক নাম তখনো পরিবর্তন করা হয়নি। এরপর কয়েক শতাব্দী পার হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামের উচ্চারণ ও বানানেও ধীরে ধীরে পরিবর্তন এসেছে।
ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ার, পেছনে তাকসিম মসজিদছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর ১৯২২ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তুরস্ক। এর কয়েক বছর পর, ১৯৩০ সালে তুর্কি ডাকসেবা শহরের নাম স্থায়ীভাবে ‘ইস্তাম্বুল’ করার সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের দাপ্তরিক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় শহরটির নাম ‘ইস্তাম্বুল’ হিসেবে ব্যবহার করে। পরবর্তী সময়ে একই পথ অনুসরণ করে বাকি দেশগুলো। তবে এটা নিশ্চিত করে বলার জো নেই যে ঠিক কবে, কখন শহরটির নাম কনস্টান্টিনোপল থেকে ইস্তাম্বুল হলো। কারণ, আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তাম্বুল নামকরণের অনেক আগে থেকেই মানুষ শহরটিকে এ নামেই চিনত।
একটু থামুন থেকে আরও পড়ুন
ইতিহাসরিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানতুরস্কএশিয়াইউরোপ
মন্তব্য করুন
ইতিহাস নিয়ে আরও পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চা কেউ করছে না, রাজনীতিই হচ্ছে
মাটি খুঁড়ে মিলল হাজার বছরের পুরোনো সোনার গয়না-মুদ্রা
গুনে গুনে ১২৭টি স্বপ্ন পূরণের অভিযানে নেমেছিলেন তিনি
টাইম সাময়িকীর শততম জন্মদিনে সেরা ১০০ প্রচ্ছদ
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?