কান্টের শর্তহীন আদেশ এর সূত্র
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে কান্টের শর্তহীন আদেশ এর সূত্র পান।
কান্টের শর্তহীন আদেশ কি? এর বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা কর
ভূমিকাঃ বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের চিন্তাধারায় আমরা বুদ্ধিবাদ বা বিচারবাদের সর্বশ্রেষ্ঠ। দার্শনিক বিচারধর্মী ব্যাখ্যা পাই। বুদ্ধিবৃত্
কান্টের শর্তহীন আদেশ কি? এর বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা কর
মে ২২, ২০২২
প্রশ্নঃ কান্টের শর্তহীন আদেশ কি? এর বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা কর।
ভূমিকাঃ বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের চিন্তাধারায় আমরা বুদ্ধিবাদ বা বিচারবাদের সর্বশ্রেষ্ঠ। দার্শনিক বিচারধর্মী ব্যাখ্যা পাই। বুদ্ধিবৃত্তি জীব হিসেবে মানুষের মধ্যে একদিকে রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তি এবং অন্যদিকে রয়েছে জীববৃত্তি। বুদ্ধিবৃত্তির কল্যাণেই মানুষ অপরাপর জীব থেকে পৃথক। তাই মানুষের উচিত বুদ্ধি বৃত্তিকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়।কান্টের শর্তহীন আদেশঃ আধুনিক নীতি দর্শনে কান্ট বুদ্ধিবাদ বা বিচারবাদের সব থেকে উল্লেখযােগ্য চিন্তবিদ। তার মতে, 'সদিচ্ছা’ ছাড়া কোনাে কিছুই সৎ নয়। সদিচ্ছা হচ্ছে বুদ্ধি প্রসূত ইচ্ছা। তার মতে, মানুষের জীবন দু’টি ছকে বাঁধা, একটি হচ্ছে জীববৃত্তির ছক এবং অপরটি হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তির ছক। জীববৃত্তির নিয়ম অনুসারে মানুষের কাছে সুখই কাম্য এবং বুদ্ধিবৃত্তির নিয়ম অনুসারে মানুষ ইন্দ্রিয় সুখের পরিবর্তে বুদ্ধির উচ্চতর নিয়ম অনুসারে কাজ করে।
নিজ গুণে গুণান্বিত হিসেবে শর্তহীন আদেশঃ শর্তহীন আদেশ হচ্ছে এমন এক ধরনের আদেশ, যা তার নিজ গুণেই গৃহীত হয়। কান্টের মতে, সব বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন মানুষের দ্বারা গৃহীত হতে পারে এমন ধরনের যদি কোনাে আচরণের নীতি থাকে, তাহলে তাকে তার নিজ গুণেই অবশ্যই গৃহীত হতে পারে এবং তাকে অবশ্যই শর্তহীন আদেশ হতে হবে।কর্তব্যের জন্য কর্তব্যঃ কান্ট বলেন যে, সেই কাজই ন্যায়, যা কর্তব্যের জন্য সম্পাদিত হয়। কর্তব্যের জন্য কর্তব্য হচ্ছে জীবনের প্রকৃত নিয়ম। কোনাে ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে কেবল কর্তব্যের জন্য কর্তব্য করতে হবে। ভয় ভীতিকে উপেক্ষা করে সত্য কথা বলতে হবে এবং জগৎ যদি ধ্বংস হয়, তথাপি ন্যায়পরতাকে রক্ষা করতে হবে। তাই কান্টের মতে, নৈতিক নিয়ম শর্তহীন,আদেশ, যা প্রতিটি নৈতিক কর্তার জন্য অপরিহার্য এবং যার নিজস্ব মূল্য রয়েছে।
মানুষ নিজেই লক্ষ্য, পন্থা নয়ঃ কান্ট বলেন, “এমনভাবে কাজ করতে হবে, যাতে তুমি নিজেকে বা অপর কাউকে কোনাে সময় পন্থা বা উপায় হিসেবে মনে না করে সব সময় লক্ষ্য হিসেবে গণ্য কর।” মানুষ নিজেই লক্ষ্য এবং মানুষকে অন্য কোনাে লক্ষ্য হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়।লক্ষ্য রাজ্যের সদস্য হিসেবে মানুষঃ কান্ট বলেন, “লক্ষ্য রাজ্যের সদস্য হয়ে আচরণ বা কাজ কর।” এই সূত্র দ্বারা কান্ট মানুষের নিজস্ব মূল্য রয়েছে, এ কথাটি বুঝাতে চান। লক্ষ্য রাজ্যের সদস্য হিসেবে প্রতিটি মানুষই একদিকে শাসক ও অপরদিকে শাসিত। শাসক হিসেবে প্রত্যেক মানুষই তার নিজের উপর নৈতিক নিয়ম চাপিয়ে দেয় এবং শাসিত হিসেবে প্রত্যেক মানুষই নৈতিক নিয়মকে পালন করে থাকে।
সুনিশ্চিত হিসেবে নৈতিক আদেশঃ কান্টের মতে, যেহেতু নৈতিক আদেশ শর্তহীন, সেহেতু এ ব্যক্তির ইচ্ছার বাইরের কোনাে লক্ষ্যর বিবেচনা থেকে উদ্ভূত হতে পারে না। কেননা প্রতিটি বাহ্যিক লক্ষ্যই অভিজ্ঞতাপ্রসূত এবং তা কেবল শর্তসূচক আদেশেই পর্যবসিত হয়।শর্তহীন হিসেবে নৈতিক আদেশঃ কান্টের মতে, ফলাফলের পরিবর্তে উদ্দেশ্যের উপরে কোনাে ঐচ্ছিক ক্রিয়ার ন্যায়ত্ব বা অন্যায় নির্ভর করে। তিনি উদ্দেশ্যের ন্যায়ত্বের মানদণ্ড সম্পর্কে বলেন যে, একটা কাজ ন্যায় বা সঠিক হতে পারে না, যদি না তা নৈতিক কর্তার দ্বারা গৃহীত কোনাে সাধারণ নীতির উপর ভিত্তি করে সম্পাদিত হয়।
বাধ্যবাধকতাপূর্ণ হিসেবে নৈতিক আদেশঃ নৈতিক কর্তা হিসেবে মানুষের মধ্যে কর্তব্য সম্পাদনের জন্য বাধ্যবাধকতার বােধ জেগে উঠে। ঔচিত্য বা বাধ্যবাধকতার এই বােধের সঙ্গে আমাদের পছন্দ বা অপছন্দ জাতীয় প্রবণতার কোনাে সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে বুদ্ধির একটা নিছক নির্দেশ বা আদেশ, যার সঙ্গে অপরাপর বাহ্যিক বিবেচনার কোনাে সম্পর্ক নেই।উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, তিনি মানুষকে নৈতিকতার ক্ষেত্রে বুদ্ধির কাছে আবেদন জানানাের কথা বলে মানুষের মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই কান্ট তার নৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেন, সেগুলাের নীতিবিদ্যার আলােচনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট মূল্য রয়েছে।Tags: দর্শন নবীনতর
ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা কর
পূর্বতন
নীতিবিদ্যার প্রকৃতি ও পরিধি আলােচনা কর
সূত্র : www.banglalecturesheet.xyz
শর্তহীন বিধান
শর্তহীন বিধান
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এই নিবন্ধটিতে কোনো উৎস বা তথ্যসূত্র উদ্ধৃত করা হয়নি। দয়া করে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্যসূত্র প্রদান করে এই নিবন্ধটির মানোন্নয়নে সাহায্য করুন। তথ্যসূত্রবিহীন বিষয়বস্তুসমূহ পরিবর্তন করা হতে পারে এবং অপসারণ করাও হতে পারে। "শর্তহীন বিধান" – সংবাদ · সংবাদপত্র · বই · স্কলার · জেস্টোর
শর্তহীন বিধান দার্শনিক ইমানুয়েল কাণ্টের নীতি-শাস্ত্রে ব্যবহৃত একটি পারিভাষিক শব্দবন্ধ। কান্টের মতে নৈতিক জীবনে যে সমস্ত বিধান কার্যকরী সেগুলিকে শর্তসাপেক্ষ এবং শর্তহীন বলে বিভক্ত করা চলে। শর্তসাপেক্ষ বিধানের নিয়ামক হচ্ছে কোনো বিশেষ অভীষ্ট। আমার সন্তানকে যদি আমি এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভালবাসি যে, সেও একদিন আমার বৈষয়িক জীবনে সাহায্যকারী হবে তা হলে সন্তানের প্রতি এই ভালবাসা শর্তসাপেক্ষ ভালবাসা। ভবিষ্যতের প্রতিফলের আকাঙ্ক্ষাই আমার বর্তমানের ভালবাসার নিয়ামক। এখানে সন্তানের প্রতি ভালবাসা শর্তসাপেক্ষ বিধানেরই একটি দৃষ্টান্ত। শর্তসাপেক্ষ বিধান একটি লক্ষ্য অর্জনের উপায় মাত্র।ইমানুয়েল কাণ্টের মত অনুযায়ী মানুষের নৈতিক জীবনের নিয়ামক হবে শর্তহীন বিধান। শর্তহীন বিধান দ্বারা কাণ্ট এমন একটি বিধানকে বুঝাতে চেয়েছেন যে বিধান অপর কোনো লক্ষ্য অর্জনের উপায়মাত্র নয়ে, যে-বিধান নিজেই লক্ষ্য। পিতা যদি সুখশান্তি-সম্পদ অর্থাৎ কোনো প্রকার প্রতিদানের আকাঙ্ক্ষা না করেতার সন্তানকে শুধু ভালবাসার জন্য ভালবাসতে পারে তবেই সে ভালবাসা অপর কোনো লক্ষ্যের উপায়মাত্র না হয়ে নিজেই লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াবে। আর এরূপ ভালবাসাই হচ্ছে সন্তানের প্রতি পিতার আদর্শ ভালবাসা। অনুরূপভাবে ব্যক্তি তার সমাজ জীবনে কেবল শর্তহীন বিধান দ্বারা পরিচালিত হবে, শর্তসাপেক্ষ বিধান দ্বারা নয়। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের যে-কোন কাজের পেছনেই একটি নীতি বা লক্ষ্য থাকে। সমাজে যে বিরোধ, বৈপরিত্য বা সংঘর্ষের সৃষ্টি হয় তার কারণ ব্যক্তি নিজের স্বার্থসাধনের লক্ষ্যকেই চরম মনে করে। সমাজে যে অধকার সে নিজে ভোগ করতে চায় সে অধিকার অপরের প্রাপ্য একথা সে স্মরণ করে না। কিন্তু যে অধিকার ব্যক্তি নিজে ভোগ করবে সে অধিকার অপরকেও ভোগ করতে না দেওয়ার নীতি অযৌক্তিক।
মানুষ যুক্তিবাদী জীবন। তার পক্ষে অযৌক্তিক কাজ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি তার যে-কোন সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে এমন নীতি দ্বারা পরিচালিত হবে, যে নীতি শুধু তার নিজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়; যে নীতি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যে নীতি সার্বিক। যে ব্যক্তি চুরি করতে যাচ্ছে তাকে বিবেচনা করতে হবে, যে চুরির অধিকার সে ভোগ করতে যাচ্ছে সে চুরির অধিকার অপর সকলেরই আছে; সে মনে করবে যে মুহুর্তে অপরের দ্রব্য সে আত্মসাৎ করছে। এরূপ চিন্তায় ব্যক্তি তার আচরণের অন্তর্নিহিত অসঙ্গতি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে। যে নীতিকে সে সার্বিক নীতি হতে দিতে চায় না সে নীতিকে নিজেও পরিত্যাগ করবে। এমনিভাবে আদর্শ সঙ্গতিপূর্ণ সমাজ সৃষ্টি হবে। কাণ্ট তার শর্তহীন বিধান দ্বারা এক কল্পলোক বা ইউটোপিয়া তৈরীর চেষ্টা করেছেন। শর্তহীন বিধান দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তি পরিচালিত হলে একটি আদর্শ সমাজের সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে ব্যক্তি কেন স্বার্থপর হয়, কেন সে নিজে যে অধিকার ভোগ করে অপরকে সে অধিকার দিতে চায় না এর কারণের কোনো বিশ্লেষণ কাণ্টের নীতিশাস্ত্রে নেই। ফলে, শর্তহীন বিধান একটি অবাস্তব ইচ্ছায় মাত্র পর্যবসিত হয়েছে। নীতিশাস্ত্র মানুষের সামাজিক আচরণের আলোচনা। বাস্তব অর্থনীতিক ও সামাজিক অবস্থাই ব্যক্তির আচরণের নিয়ামক। কোনো বিশেষ সমাজের বাস্তব অবস্থার বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে ব্যক্তির আচরণের সঙ্গতি-অসঙ্গতি নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কহীনভাবে কোনো চরম আদর্শ ব্যক্তির সামনে পেশ করা নিরর্থক। কাণ্ট তার নীতিশাস্ত্রে এই সত্যকে অস্বীকার করেছেন।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
503 Service Temporarily Unavailable
Server Error
503
Service Temporarily Unavailable
The server is temporarily unable to service your request due to maintenance downtime or capacity problems. Please try again later.
That's what you can do
Reload Page Back to Previous Page Home Page
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?