ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম পান।
তালাক নোটিশের পরের ৯০ দিন দম্পতিদের মিটমাটের সুযোগ থাকে কতটা?
বাংলাদেশে স্বামী-স্ত্রী যারা সম্পর্কের ইতি টানতে চান, আইন অনুযায়ী তালাকের আগে মীমাংসার জন্য ৯০ দিন সময় দেয়া হয় তাদের। মূল উদ্দেশ্য থাকে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেয়া।
তালাক নোটিশের পরের ৯০ দিন দম্পতিদের মিটমাটের সুযোগ থাকে কতটা?
সাইয়েদা আক্তার বিবিসি বাংলা, ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
ছবির উৎস, GETTY IMAGES
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে নগর-গ্রাম নির্বিশেষে ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আইন অনুযায়ী মীমাংসার জন্য ৯০ দিন সময় দেয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সময়ে স্বামী-স্ত্রী যারা সম্পর্কের ইতি টানতে চান, তাদের উভয় পক্ষকে এক সঙ্গে নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেয়া।কিন্তু বাংলাদেশে এই আলাপ আলোচনার কাজটি এখনো মূলত পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং কাছের মানুষেরা করে থাকেন।
পৃথিবীর অনেক দেশে এ ক্ষেত্রে মনোবিদ বা ম্যারেজ কাউন্সেলরের পেশাদার সাহায্য নিতে পারেন কোন দম্পতি।
কিন্তু বাংলাদেশে পেশাদার কারো কাছ থেকে সাহায্য কমই পান বিবদমান পক্ষ দুইটি।
আরও পড়তে পারেন:তালাক হওয়া বাবা-মায়ের সন্তান থাকবে কার জিম্মায়?
‘বিবাহ-বিচ্ছেদের অধিকার চান হিন্দু নারীরা’
বাবা-মার বিচ্ছেদের পর কেমন কাটে সন্তানদের জীবন?
বিবাহবিচ্ছেদ এবং ৯০ দিন সময়
বাংলাদেশে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী তালাক দিতে চাইলে একজন ব্যক্তিকে তিন দফায় আইনি পত্র বা ডিভোর্স লেটার পাঠাতে হয়।
প্রতি ৩০ দিনের ব্যবধানে একেকটি চিঠি পাঠাতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যে কোন সমঝোতা না হলে তালাক কার্যকর হয়।
সব কটি দফায় প্রথম স্বামী বা স্ত্রী যাকে সেটি পাঠানো হবে, তার ঠিকানার সাথে স্বামী বা স্ত্রী যে এলাকায় বসবাস করেন সেখানকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বা সিটি কর্পোরেশন মেয়র বা কাউন্সিলরকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশের কপি পাঠাতে হয়।
এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বা সিটি কর্পোরেশন মেয়র বা কাউন্সিলর দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সালেহা বিনতে সিরাজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এ ধরনের আলোচনায় বসা গেলে অনেক সময়ই দুই পক্ষের জন্য ভালো হয়।
তিনি বলেন, "অনেক ক্ষেত্রে বিবাদ মিটিয়ে পুনরায় সংসারে ফিরিয়ে নেয়া যায় স্বামী-স্ত্রীকে। কারণ এ ধরনের আলোচনায় আমাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে রিকনসিলিয়েশন বা পুনর্মিলন ঘটিয়ে দেয়ার। সংখ্যায় কম হলেও সেটা করা যায় অনেক সময়।"
ছবির উৎস, GETTY IMAGES
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ২০২০ সালে সাড়ে ১২ হাজারের বেশি ডিভোর্স হয়েছে। এর অর্ধেকের মত হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে।
সালেহা বিনতে সিরাজ জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ২০২০ সালে তালাকের জন্য আবেদনকারী ৩৮৪টি দম্পতি আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মিটিয়ে নতুন করে সংসার শুরু করেছেন।
তবে তিনি জানিয়েছেন, অনেক সময়ই আলোচনায় বসানো যায় না দুই পক্ষকে।
অনেকে ডিভোর্স লেটারে ইচ্ছা করে ভুল ঠিকানা দেয়, তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার অনেকের প্রচণ্ড অনীহা থাকে আপোষ করার ব্যাপারে।
তবে এখনো সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব মনোবিদ বা ম্যারেজ কাউন্সেলর নেই।
আলোচনায় অনীহা
তালাক কার্যকর হবার আগে ৯০ দিন সময় দেয়া হয় যাতে কোন দম্পতির বিরোধ মীমাংসায় তৃতীয় আরেকটি পক্ষ, যিনি কোন একটি পক্ষের প্রতি বিশেষ অনুগত নন, নিরপেক্ষভাবে উভয়ের সমস্যা শুনে সমাধানের একটি উপায় বের করতে পারেন।
কিন্তু অনেকেই বাইরের মানুষের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত বিষয় আলাপ করতে চান না।
অন্যান্য খবর:
অকাস চুক্তি নিয়ে বিরোধ দূর করতে ম্যাক্রঁ ও বাইডেনের ফোনালাপ
মজুত করে রাখা ২৪ কোটি টিকা কি এখন ফেলে দিতে হবে?
ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকারের নতুন কিছু সিদ্ধান্ত
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী একজন নারী বিবিসিকে বলছিলেন, ২০১৭ সালে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্কে ইতি টেনেছেন।
তার তৎকালীন স্বামীকে প্রথম দফা ডিভোর্সের চিঠি পাঠানোর পর, স্থানীয় কাউন্সেলরের অফিস থেকে তাকে এবং তার স্বামীকে চিঠি দিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল।
কিন্তু তার স্বামী সেখানে যাননি।
বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেবার আগে যখন প্রায় নিয়মিত তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হচ্ছিল, তখনো তিনি কাউন্সেলরের কাছে যেতে চেয়েছেন একাধিকবার।
কিন্তু তখনো তার স্বামী রাজি হননি, তিনি এ বিষয়ে কারো সাথে আলাপ করতেই রাজি ছিলেন না।
পেশাদার ম্যারেজ কাউন্সেলর
বাংলাদেশে এক দশক আগেও পেশাদার ম্যারেজ কাউন্সেলর পদটির সঙ্গে পরিচয় ছিল না সাধারণ মানুষের।
গত এক দশকে শহর এলাকায় বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর মত বড় বিভাগীয় শহরে বেশ কিছু পেশাদার ম্যারেজ কাউন্সেলিং প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
কিন্তু এখনো এই সেবা গ্রহীতার সংখ্যা কম এবং তারা নাগরিক মানুষ।
ঢাকায় কাউন্সেলিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান 'ক্রিয়া'র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হাজেরা খাতুন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শুরুতে একেবারেই হাতে গোনা মানুষ আসতেন এই সেবা নিতে।
সেসময় অনেকে নাম পরিচয় গোপন রাখতে চাইতেন।
তবে ২০১৬ সালের পর থেকে ম্যারেজ কাউন্সেলিং বা ফ্যামিলি কাউন্সেলিং সেবা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।
মিজ খাতুন বলছেন, তারা ডিভোর্সের আগে, ডিভোর্সের সময় এবং ডিভোর্স পরবর্তী---এই তিন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কাউন্সেলিং সেবা দেন।
"প্রথমে সমস্যা শুনি, এরপর যিনি সেবা নিতে এসেছেন তার সাথে অপর পক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। উভয় পক্ষ সম্মত হলে একসঙ্গে নিয়ে বসে আলোচনা করি।
আমরা কোন সিদ্ধান্ত দেই না, বরং তারা যে পরিস্থিতিতে আছেন এবং যে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন, তার সম্ভাব্য ফলাফল ও প্রভাব সম্পর্কে উভয়ের কাছে একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরি।"
ছবির উৎস,
তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম ।। Legal Procedure of Divorce
তালাক শব্দটাই বিচ্ছেদের, তালাক মানেই ভাঙ্গন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে দুজন মানুষ একসঙ্গে পথচলা শুরু করে। সেই পথচলা সবসময় মসৃণ হয় না। বাস্তবতা কখনো এমন এক অবস্থার তৈরি করে যখন বিচ্ছেদই হয়ে উঠে একমাত্র সমাধান। আমাদের দেশে এখনো এই বিশ্বাস আছে যে, মুখে তিন বার তালাক বললেই তালাক হয়ে যায়। ইসলাম ধর্ম মতে ব্যাপারটা সত্য হলেও আমাদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মুখে উচ্চারিত তালাক আইনসম্মত নয়।
তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম ।। Legal Procedure of Divorce
সম্পর্কিত পোস্ট
হঠাৎ গ্রেফতার হলে করণীয় ।। What to do in sudden Arrest ?
হঠাৎ গ্রেফতার হলে করণীয়
স্বামী কর্তৃক তালাক নোটিশ ফরম পূরণের নিয়ম
সত্যায়নের বিড়ম্বনায় বাড়ছে মিথ্যায়ন !
তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম ।। Legal Procedure of Divorce সম্পর্কিত পোস্ট হঠাৎ গ্রেফতার হলে করণীয় ।। What to do in sudden Arrest ? হঠাৎ গ্রেফতার হলে করণীয় স্বামী কর্তৃক তালাক নোটিশ ফরম পূরণের নিয়ম সত্যায়নের বিড়ম্বনায় বাড়ছে মিথ্যায়ন ! রিয়েল এস্টেট আইন – ভূমি মালিক ও ডেভেলপারের অধিকার, দ্বায়-দ্বায়িত্ব ও বিচার
তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম
তালাক শব্দটাই বিচ্ছেদের, তালাক মানেই ভাঙ্গন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে দুজন মানুষ একসঙ্গে পথচলা শুরু করে। সেই পথচলা সবসময় মসৃণ হয় না। বাস্তবতা কখনো এমন এক অবস্থার তৈরি করে যখন বিচ্ছেদই হয়ে উঠে একমাত্র সমাধান। আমাদের দেশে এখনো এই বিশ্বাস আছে যে, মুখে তিন বার তালাক বললেই তালাক হয়ে যায়। ইসলাম ধর্ম মতে ব্যাপারটা সত্য হলেও আমাদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মুখে উচ্চারিত তালাক আইনসম্মত নয়।
বিয়ে করার ক্ষেত্রে যেমন আইনী বৈধতা জরুরী তেমনি তালাকের ক্ষেত্রেও বৈধতা জরুরী। আমাদের দেশের আইনমতে, কেউ যদি ডিভোর্স বা তালাক দিতে চায় তবে মুখে ‘তালাক’ বলার পর এই সংক্রান্ত লিখিত নোটিশও দিতে হবে। যাকে তালাক দেয়া হয় সে স্বামী বা স্ত্রী যাই হোক, তাকে নোটিশ দিয়ে তালাকের বিষয়ে অবগত করতে হবে। পাশাপাশি একই নোটিশ তালাক যাকে দেয়া হয় তার এলাকার চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠাতে হবে।
চেয়ারম্যান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে—
১। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,
২। পৌরসভার চেয়ারম্যান,
৩। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক,
৪। সেনানিবাস এলাকায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি,
চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো তালাক নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সালিশি কাউন্সিল তৈরি করবেন। যদি দুই পক্ষের মধ্যে কোনোভাবেই পুনঃমিলন সম্ভব না হয় তবে তালাক নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রীর ভরণপোষণ ও অন্যান্য খরচ বহন করবেন স্বামী। তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে সথাসময়ে তালাক নিবন্ধন করতে হবে।
তালাকের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যদি তালাক দেওয়ার সময় স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে থাকে তবে তার গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।
স্ত্রী কর্তৃক তালাকের নিয়ম
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাক দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই, যদি কাবিননামার ১৮ নং কলামে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া না থাকে। তবে, বর্তমানে সকল কাবিনেই স্ত্রীকে এই বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়। যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা কাবিনে উল্লেখ করা না থাকে তবুও মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন- ১৯৩৯ অনুযায়ী মুসলিম আইনে বিবাহিত কোন মহিলা এক বা একাধিক কারণে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। যেমন,
১। চার বছর পর্যন্ত স্বামীর কোন খোঁজখবর পাওয়া না গেলে।
Divorce Rate in Dhaka
২। দুই বছর যাবত স্বামী কর্তৃক অবহেলিত এবং স্বামী ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে।
৩। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১’র বিধান লঙ্ঘন করে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করলে।
৪। স্বামী ৭ বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলে।
৫। স্বামী কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে বিবাহিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
৬। বিয়ে করার সময় স্বামী পুরুষত্বহীন হলে এবং এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে।
৭। দুই বছর ধরে স্বামী অপ্রকৃতিস্থ থাকলে বা, কুষ্ঠ রোগ বা, সংক্রামক যৌন ব্যাধিতে ভুগলে।
৮। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই যদি অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ে দেওয়া হয় এবং ১৯ বছর বয়স হওয়ার আগেই এই বিয়ে প্রত্যাখ্যান করলে।
৯। স্ত্রীর প্রতি স্বামী নিষ্ঠুর আচারণ করলে।
এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণগুলো হল:ক) স্বভাবগতভাবে তাকে মারপিট বা, শারীরিক নির্যাতন ছাড়াও নিষ্ঠুর আচরণ করে স্ত্রীর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে।
খ) খারাপ চরিত্রের মহিলাদের সঙ্গে মেলামেশা করলে বা অনৈতিক জীবনযাপন করলে।
গ) স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপানে বাধ্য করার চেষ্টা করলে।
ঘ) স্ত্রীর সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করলে বা, তার স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকারে বাধা প্রদান করলে।
ঙ) স্ত্রীর ধর্মকর্ম পালনে বাধা দিলে।
চ) একাধীক স্ত্রী থাকলে পবিত্র কোরআনেরর বিধান মোতাবেক সমভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে।
স্বামী কর্তৃক নিষ্ঠুর আচরণের জন্য কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা না থাকা সত্বেও স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারবেন। অন্য যে কোনও সংগত কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যে, উল্লেখিত যে কোনও একটি কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে হলে স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।
তালাক স্বামী বা, স্ত্রী যেই দিক না কেন, স্ত্রী তার প্রাপ্য মোহরানা যে কোনও সময় দাবী করতে পারবেন।মনে রাখতে হবে যে, তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে সথাসময়ে তালাক নিবন্ধন করাতে হবে। অনেকেই দেনমোহর এর টাকার জন্য মামলা করতে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু তালাক রেজিস্ট্রী সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকার কারনে আমরা কোন সহায়তা করতে পারিনা। একটু অবহেলা ও অজ্ঞতার কারনে অনেকেই নিজের অধিকার হারাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায় বিচার হতে।
Consult with our Divorce Specialist Lawyer
ADV Al Mahmud RajibPhone – 01675881964
Mail – ainbisharod@gmail.com
AIN BISHAROD– (A Legist Law Firm)Facebook Twitter LinkedIn
সাম্প্রতিক পোস্ট
বিদেশ থেকে তালাক দেওয়ার পদ্ধতি
বিদেশ থেকে আম-মোক্তার নামা দলিলের মাধ্যমে প্রতিনিধি নিযুক্ত করে তালাক প্রদানের যথাযর্থতা সম্পর্কে আইনে সুনির্দিষ্ট কোন বক্তব্য নেই। প্রচলিত প্রাকটিস এবং আইনজীবীদের পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই আম-মোক্তারনামা মূলে তালাকের একটা প্রচলন আছে। তবে এ ধরনের তালাক বহুল বিতর্কীত কারন তালাক সংশ্লিস্ট আইনের কিছু বিধান প্রকৃত অর্থে চর্চা করার সুযোগ থাকেনা।
বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম
বাংলাদেশের আইনে তালাক দেওয়ার নিয়ম। স্বামী কর্তৃক তালাক, স্ত্রী কর্তৃক তালাক, পারস্পারিক সম্মতিতে তালাক, আদালত কর্তৃক তালাক। কিভাবে স্বামী/স্ত্রী তালাক দিবেন
বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম
আইন / By BD Tweet
শুধু মুখে তিন তালাক উচ্চারণ করলেই তালাক কার্যকর হয় না। আবার লিখিতভাবে তালাক দিলেও সাথে সাথে তা কার্যকর হবে না। আইনের বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করার পর তালাক কার্যকর হবে।তালাক আইন অনুযায়ী তালাক হবে। তালাকের প্রকারভেদঃ-
১. স্বামী কর্তৃক তালাকঃ তালাক দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা স্বামীর সবচেয়ে বেশি। কোন কারন ব্যতীত স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে।
২. স্ত্রী কর্তৃক তালাকঃ তালাক দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা স্ত্রীর কম। আইনে উল্লেখিত কারণ ব্যতীত স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে না।তবে কাবিন নামার ১৮ নং কলামে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দেওয়া থাকলে (তালাক-ই-তৌফিজ) স্ত্রী তালাক দিতে পারবে।
৩. পারস্পারিক সম্মতিতে তালাকঃ
ক) খুলা – স্ত্রী তার স্বামীকে যেকোন কিছুর বিনিময়ে তালাক দেওয়ার জন্য রাজি করাবেন।
খ) মুবারত – স্বামী স্ত্রী উভয়ের পারস্পারিক সম্মতিতে তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
৪. আদালত কর্তৃক বিচ্ছেদঃ আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করে ডিভোর্স নেওয়া।
কিভাবে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিবেন
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে যেকোন পদ্ধতির তালাক ঘোষনার পর যথাশীঘ্র সম্ভব তালাকের নোটিশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিশোধ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে এবং উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি(নকল) স্ত্রীকে পাঠাতে হবে।
একই আইনের ৭(২) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি নোটিশ প্রদানের এ বিধান লংঘন করেন তবে তিনি এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। তবে স্বামী যদি নোটিশ প্রদান না করে তাহলে শাস্তি পাবে ঠিকই কিন্তু তালাক বাতিল হবে না।
৭(৪) ধারা অনুযায়ী, নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশিষ্ট পক্ষ দ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে একটি সালিশী পরিষদ গঠন করবেন।সালিশী পরিষদ যদি সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয় এবং স্বামী যদি ৯০ দিনের মধ্যে তালাক প্রত্যাহার না করে তবে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এই ৯০ দিন স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবে।
৭(৩) ধারা মতে, চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। কিন্তু তালাক ঘোষণার সময় স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে তাহলে ৭(৫) অনুযায়ী গর্ভাবস্থা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ৯০ দিন পর তা কার্যকর হবে।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪ এর ৬ ধারা মতে বিয়ের তালাক ও রেজিষ্ট্রি করতে হয়। কাজী নির্ধারিত ফি নিয়ে তালাক রেজিষ্ট্রি করবেন এবং ফি ব্যতীত প্রত্যয়ন কপি প্রদান করবেন।
কি কি কারণে স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবেন
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে অত্যান্ত সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যেসব কারণে স্ত্রী আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন-
১. চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে।
২. দুই বছর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হলে।
৩. স্বামীর সাত বছর কিংবা তার চেয়ে বেশী কারাদণ্ড হলে।
৪. স্বামী কোন যুক্তি সংগত কারণ ব্যতীত তিন বছর যাবৎ দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
৫. বিয়ের সময় পুরষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায় করা পর্যন্ত বজায় থাকলে।
৬. স্বামী দুই বছর ধরে পাগল থাকলে অথবা কুষ্ঠ ব্যধিতে বা মারাত্মক যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত থাকলে।
৭. বিবাহ অস্বীকার করলে। কোন মেয়ের বাবা বা অভিবাবক যদি ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেন, তাহলে মেয়েটি ১৯ বছর হওয়ার আগে বিয়ে অস্বীকার করে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারে, তবে যদি মেয়েটির স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক(সহবাস) স্থাপিত না হয়ে থাকে তখনি কোন বিয়ে অস্বীকার করে আদালতে বিচ্ছেদের ডিক্রি চাইতে পারে।
৮. স্বামী ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লংঘন করে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে।
৯. স্বামী নিষ্ঠুর ব্যবহার করলে।
উপরের যেকোন এক বা একাধিক কারণে স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে। স্ত্রী আভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আদালত বিয়ে বিচ্ছেদের ডিক্রি দিতে পারে। ডিক্রি প্রদানের সাত দিনের মধ্যে একটি সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবে। চেয়ারম্যান নোটিশকে তালাক সংক্রান্ত নোটিশ হিসাবে গণ্য করে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিবে এবং চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ পাবে সেদিন থেকে ঠিক নব্বই দিন পর তালাক চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।
কখন দ্বিতীয় বা বহুবিবাহ করা যাবে-
ক. বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব
খ. দৈহিক দূর্বলতা
গ. দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য দৈহিক অনুপযুক্ততা
ঘ. দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য প্রদত্ত আদালতের কোন ডিক্রিকে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়ানো
ঙ. বর্তমান স্ত্রীর মানসিক অসুস্থতা ইত্যাদি
তবে এক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি থাকলে এবং একটি সালিশী পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় চেয়ারম্যান যদি অনুমতি পত্র দেয় তাহলে দ্বিতীয় বিবাহ করতে আইনত কোন বাধা থাকে না।
স্বামীর আদালত স্বীকৃত নিষ্ঠুর ব্যবহার সমূহ-
ক. অভ্যাসগতভাবে স্ত্রীকে আঘাত করলে বা নিষ্ঠুর আচরণ করলে, উক্ত আচরণ দৈহিক পীড়নের পর্যায় না পড়লেও তার জীবন শোচনীয় করে তুলছে এমন হলে।
খ. স্বামী খারাপ মেয়ের সাথে জীবন যাপন করলে।
গ. স্ত্রীকে অনৈতিক জীবন যাপনে বাধ্য করলে।
ঘ. স্ত্রীর সম্পত্তি নষ্ট করলে।
ঙ. স্ত্রীকে ধর্ম পালনে বাধা দিলে।
চ. একাধিক স্ত্রী থাকলে সকলের সাথে সমান ব্যবহার না করলে।
ছ. এছাড়া অন্য যেকোন কারণে( যে সকল কারণে মুসলিম আইনে বিয়ের চুক্তি ভঙ্গ হয়) ।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হলে সন্তান কার কাছে থাকবে
ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর এবং মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত তার মায়ের কাছে থাকবে।এরপর থেকে তার বাবার কাছে থাকবে।তবে যার কাছে থাকলে সন্তানের কল্যাণ হবে আদালত তার কাছে থাকার অনুমতি দিতে পারেন।
মনে রাখতে হবে তালাক বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া কখনোই কল্যাণ বয়ে আনে না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি তালাকের প্রয়োজন দেখা দেয় তবে অভিজ্ঞ উকিলের পরামর্শ গ্রহন করাই যুক্তিযুক্ত।
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?