মুজিবনগর সরকারের তথ্য সচিব কে ছিলেন
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে মুজিবনগর সরকারের তথ্য সচিব কে ছিলেন পান।
মুজিবনগর সরকার
মুজিবনগর সরকার
English
মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ হয় মুজিবনগর। মুজিবনগর সরকারের কর্মকান্ড বাংলাদেশ ভূখন্ডের বাইরে থেকে পরিচালিত হয়েছিল বলে এ সরকার প্রবাসী মুজিবনগর সরকার হিসেবেও খ্যাত।সরকার গঠন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড তথা প্রধান নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি সরকার গঠিত হয়। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুক্তাঞ্চল বৈদ্যনাথতলায় সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আবদুল মান্নান এম.এন.এ এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী এম.এন.এ। নবগঠিত সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে এখানে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল সরকার গঠন এবং ১৭ এপ্রিল সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন হয় ১৮ এপ্রিল। এদিন সরকারের কাঠামো ছিল নিম্নরূপ:
মুজিবনগর সরকারকে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ভাগ করা হয়। এছাড়া কয়েকটি বিভাগ মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীনে থাকে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম নিম্নরূপ:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি (রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানে অন্তরীণ থাকার কারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের দায়িত্বপ্রাপ্ত)
তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীএবং প্রতিরক্ষা, তথ্য, সম্প্রচার ও যোগাযোগ, অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, পরিকল্পনা বিভাগ, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, শ্রম, সমাজকল্যাণ, সংস্থাপন এবং অন্যান্য যেসব বিষয় কারও ওপর ন্যস্ত হয়নি তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী
খন্দকার মোশতাক আহমদ মন্ত্রী, পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
এম মনসুর আলী মন্ত্রী, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
এ এইচ এম কামরুজ্জামান মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন এবং কৃষি মন্ত্রণালয়
মুজিবনগর সরকারের উপরাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ এবং প্রধান সেনাপতি
এস.এ সামাদ প্রতিরক্ষা সচিব। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম.এ.জি ওসমানী, চীফ অব স্টাফ কর্নেল আবদুর রব, উপ-সেনাপতি এ.কে খন্দকার, এবং ডি.জি মেডিকেল সার্ভিস ও বিভিন্ন পদবীর স্টাফ অফিসার এ দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুদ্ধরত অঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে প্রতিটিতে একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়। তবে ১০নং বা নৌ সেক্টরে কোন সেক্টর কমান্ডার ছিল না, কমান্ডোরা যখন যে এলাকায় অভিযান করত সে সেক্টরের কমান্ডারের অধীনে থাকত। এ ছাড়াও জেড ফোর্স, কে ফোর্স ও এস ফোর্স নামে তিনটি ব্রিগেড গঠন করা হয়। ব্রিগেডগুলির কমান্ডার হলেন যথাক্রমে মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ এবং মেজর কে.এম সফিউল্লাহ।
যুদ্ধের সময় বিদেশে বাংলাদেশ মিশন স্থাপন করে এবং বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল প্রেরণ করে বহির্বিশ্বের সরকার ও জনগণের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে এ মন্ত্রণালয়। এ লক্ষে কলকাতা, দিল্লি, লন্ডন, ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক, স্টকহোম প্রভৃতি স্থানে কূটনৈতিক মিশন স্থাপন করা হয় এবং জাতিসংঘ, আফগানিস্তান, সিরিয়া-লেবানন, নেপাল, শ্রীলংকা, বার্মা, থাইল্যান্ড, জাপান প্রভৃতি দেশের সমর্থন আদায়ের জন্য কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল প্রেরণ করে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে এ মন্ত্রণালয় থেকে পত্র প্রেরিত হয়। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোর প্রধান ছিলেন কলকাতায় হোসেন আলী, দিল্লিতে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, ইউরোপে বিশেষ প্রতিনিধি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, ওয়াশিংটনে এম আর সিদ্দিকী। স্টকহোমে আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বাংলাদেশ সরকার প্রেরিত কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সিরিয়া-লেবাননে মোল্লা জালাল উদ্দীন এমএনএ ও ড. মাহমুদ শাহ কোরেশী, আফগানিস্তানে আবদুস সামাদ আজাদ, আশরাফ আলী চৌধুরী এমএনএ, মওলানা খায়রুল ইসলাম যশোরী ও এডভোকেট নূরুল কাদের। নেপালে প্রেরিত হন আবদুল মালেক উকিল, সুবোধচন্দ্র মিত্র ও আবদুল মোমিন তালুকদার। এডভোকেট ফকির শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে শামসুল হক ও জ্যোতিপাল মহাথেরো শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও জাপান গমন করেন। মাহবুব আলম চাষী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পররাষ্ট্র দপ্তর অবস্থিত ছিল কলকাতার ৯ সার্কাস এভিনিউতে।
এম মনসুর আলী এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও খন্দকার আসাদুজ্জামান ছিলেন সচিব। যুদ্ধের সময় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উল্লেখযোগ্য কোন কাজ ছিল না। তবে অর্থ বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করে: সরকারের আয়-ব্যয়ের বাজেট প্রণয়ন; বাংলাদেশের অভ্যন্তর ও অন্যান্য উৎস হতে প্রাপ্ত সম্পদের হিসাব তৈরি; বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গকে অর্থ প্রদানের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন; আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা; রাজস্ব ও শুল্ক আদায়; এবং যেকোন আর্থিক অনিয়ম রোধের জন্য কমিটি গঠন।
বাংলাদেশ সরকার তার আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করে প্রথমে ছয় মাসের জন্য একটি বাজেট তৈরি করে। বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সংরক্ষণের জন্য ট্রেজারি স্থাপন করে এবং প্রবাসী বাঙালি ও বিভিন্ন বিদেশী নাগরিক ও সংস্থার তরফ থেকে প্রাপ্ত অর্থ বাংলাদেশ ফান্ড নামের একটি তহবিলে জমা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের প্রস্তাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপিত হত এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে সে অর্থ পৌঁছাত। সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদের সভায় বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন, সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ এবং এসব বিষয়াদি লিপিবদ্ধকরণ মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের আওতাভুক্ত ছিল। মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হবার পর পরিষদের প্রথম দুই মাসের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকাংশই তাজউদ্দীন আহমদ নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেন। এরপর এইচ টি ইমাম সচিব হিসেবে যোগ দেবার পর অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের সমনতয়ে সচিবালয় গড়ে ওঠে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয় সাধনে মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মুজিবনগর সরকার
মুজিবনগর সরকার
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার
মুজিবনগর সরকার ১৯৭১–১৯৭২ পতাকা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
অবস্থা অস্থায়ী সরকার
রাজধানী বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান মুজিবনগর)
নির্বাসনে রাজধানী কলকাতা
প্রচলিত ভাষা বাংলা
সরকার অস্থায়ী প্রজাতন্ত্র
রাষ্ট্রপতি • ১৯৭১–১৯৭২ শেখ মুজিবুর রহমান • ১৯৭১–১৯৭২
সৈয়দ নজরুল ইসলাম (অস্থায়ী)
প্রধানমন্ত্রী • ১৯৭১–১৯৭২ তাজউদ্দীন আহমদ
ঐতিহাসিক যুগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
• প্রতিষ্ঠা ১৭ই এপ্রিল ১৯৭১ • বিলুপ্ত ১২ই জানুয়ারি ১৯৭২
পূর্বসূরী উত্তরসূরীপূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ
মুজিবনগর সরকার (যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল জনগনের রায়ে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।পটভূমি[সম্পাদনা]
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইট সংঘটিত হবার সময় যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেফতার করে তার আগ মুহূর্তে ২৫ মার্চ দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ইপিআর এর একটি ছোট ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।[১] এরপর ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র হতে মেজর জিয়াউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ হতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন।[২][৩] মূলত সেই দিন হতেই বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
এদিকে ২৫ মার্চের ভয়াবহ, দুর্বিষহ গণহত্যার সময় আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান নেতা তাজউদ্দীন আহমদ নিজ বাসভবন ছেড়ে পালিয়ে যান।[৩] এসময়েই তিনি বাংলাদেশ সরকার গঠনের পরিকল্পনা শুরু করেন। প্রথমে আত্মরক্ষা তারপর প্রস্তুতি এবং সর্বশেষে পালটা আক্রমণ এই নীতিকে সাংগঠনিক পথে পরিচালনার জন্য তিনি সরকার গঠনের চিন্তা করতে থাকেন। এরই মধ্যে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় তিনি ফরিদপুর-কুষ্টিয়া পথে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে পৌছান।[৪] ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ মার্চ মেহেরপুর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পদার্পণ করেন। সীমান্ত অতিক্রম করার বিষয়ে মেহেরপুরের তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী তাদের সার্বিক সহায়তা করেন। সীমান্ত অতিক্রম করার পর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিদর্শক গোলক মজুমদার তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে যথোপযুক্ত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। গোলক মজুমদারের কাছে সংবাদ পেয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক কেএফ রুস্তামজী তাদের আশ্রয়স্থলে এবং তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেন এবং পূর্ববাংলা সার্বিক পরিস্থিতি এবং বাঙালির স্বাধীনতা লাভের অদম্য স্পৃহা সম্পর্কে সম্যক অবগত হন। সীমান্তে পৌছে তাজউদ্দীন দেখেন যে বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী সেনাদের সমর্থনে ভারত সরকার থেকে নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছুই করার নেই। মুক্তিফৌজ গঠনের ব্যপারে তাজউদ্দীন আহমদ বিএসএফ এর সাহায্য চাইলে তৎকালীন বিএসএফ প্রধান তাকে বলেন যে মুক্তিসেনাদের ট্রেনিং এবং অস্ত্র প্রদান সময় সাপেক্ষ কাজ । তিনি আরো বলেন যে ট্রেনিংয়ের বিষয়ে তখন পর্যন্ত ভারত সরকারের কোন নির্দেশ না থাকায় তিনি মুক্তিবাহিনীকে ট্রেনিং ও অস্ত্র দিতে পারবেন না। কেএফ রুস্তামজী দিল্লির ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে নিয়ে দিল্লি যাওয়ার জন্য।[৫] উদ্দেশ্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং তাজউদ্দীন আহমদের বৈঠক। দিল্লিতে পৌছানোর পর ভারত সরকার বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হন যে, তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠতম সহকর্মী। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের আগে ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমদের কয়েক দফা বৈঠক হয় এবং তিনি তাদের বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার জন্য যেসব সাহায্য ও সহযোগিতার প্রয়োজন তা বুঝিয়ে বলেন। এসময় তিনি উপলব্ধি করেন যে আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে তিনি যদি সাক্ষাৎ করেন তবে সামান্য সহানুভূতি ও সমবেদনা ছাড়া তেমন কিছু আশা করা যায় না। সরকার গঠন ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ঐ সরকারের দৃঢ় সমর্থন ছাড়া বিশ্বের কোন দেশই বাংলাদেশের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে না। এছাড়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের আগের দিন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাজউদ্দীনের কাছে জানতে চান যে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে কোনো সরকার গঠিত হয়েছে কিনা। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি রূপে নিজেকে তুলে ধরবেন। কারণ এতে 'পূর্ব বাংলার জনগণের সংগ্রামকে সাহায্য করার জন্য ৩১ মার্চ ভারতীয় পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়'[৬] তা কার্যকর রূপ লাভ করতে পারে বলে তাজউদ্দীনের ধারণা হয়। ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বৈঠকের সূচনাতে তাজউদ্দীন জানান যে পাকিস্তানি আক্রমণ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ২৬ মার্চেই বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করে সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেই স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রেসিডেন্ট এবং মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকে যোগদানকারী সকল প্রবীণ সহকর্মীই মন্ত্রিসভার সদস্য। শেখ মুজিবের গ্রেফতার ছাড়া তখন পর্যন্ত দলের অন্যান্য প্রবীণ নেতাকর্মীর খবর অজানা থাকায় সমাবেত দলীয় প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শক্রমে দিল্লীর উক্ত সভায় তাজউদ্দীন নিজেকে প্রধানমন্ত্রী রূপে তুলে ধরেন।[৪][৭] । ঐ বৈঠকে তাজউদ্দীন আহমদ ইন্দিরা গান্ধীর কাছে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য অনুরোধ করেন। ইন্দিরা গান্ধী তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, উপযুক্ত সময়ে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হবে। এভাবেই অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের ধারনার সূচনা।
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নাম কী?
উত্তর: প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ ( মন্ত্রী পরিষদ নয়) সচিব ছিলেন সদ্য প্রয়াত এইচ টি ইমাম।
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নাম কী?
সাজান আব্দুল আলীম খান
বইপ্রেমী (2001–বর্তমান)লেখকের 272টি উত্তর রয়েছে ও 4.9 লা বার সেগুলি দেখা হয়েছে1 বছর
প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ।
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ ( মন্ত্রী পরিষদ নয়) সচিব ছিলেন সদ্য প্রয়াত এইচ টি ইমাম।
Faiyaz Zamal
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি-এ কম্পিউটার বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ে পিএইচডি (2015)1 বছর
সম্পর্কিত
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সচিব কে ছিল?
এইচ টি ইমাম Sadat Karim
লেখকের 1.1 হাটি উত্তর রয়েছে ও 32.9 লা বার সেগুলি দেখা হয়েছে3 বছর
সম্পর্কিত
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্য কত জন ছিলেন—৭ না ৮ জন?
মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীগণ
মন্ত্রণালয়সমূহের নাম
১ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৩ অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
৪ মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়।
৫ সাধারণ প্রশাসন বিভাগ।
৬ স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
৭ তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়।
৮ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৯ ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়।
১০ সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
১১ কৃষি বিভাগ। ১২ প্রকৌশল বিভাগ। মন্ত্রীর নাম
দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়
তাজউদ্দীন আহমদ
ক- প্রধানমন্ত্রী খ- প্রতিরক্ষা
গ- তথ্য ও বেতার এবং টেলিযোগাযোগ
ঘ- অর্থনৈতিক বিষয়, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন
ঙ- শিক্ষা,স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সরকার, স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজকল্যাণ
চ- সংস্থাপন ও প্র নীলা হাসান ইংরেজি জানেন1 বছর সম্পর্কিত
মুজিব নগর সরকারের ত্রাণ ও পূর্নবাসন মন্ত্রী কে?
এ.এইচ.এম. কামারুজ্জামান
Al Jaber
Daudkandi Adarsha (pilot) High School এ/তে পড়াশোনা করেছেনলেখকের 164টি উত্তর রয়েছে ও 19.9 হা বার সেগুলি দেখা হয়েছে1 জানু
সম্পর্কিত
মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম কী?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণার বাস্তবায়ন এবং আনুষ্ঠানিক ও সাংগঠনিক রূপ প্রদান করা। মুক্তিযুদ্ধকে সুষ্ঠু ও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে দ্রুত দেশকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করা। মুক্তিযােদ্ধাদের সংগঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা।🫠
সম্পর্কিত প্রশ্ন
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নাম কী?
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্য কত জন ছিলেন—৭ না ৮ জন?
চুয়াড় বিদ্রোহের প্রধান নেতা কে ছিলেন?
মুজিবনগর সরকারে সদস্য সংখ্যা কত ছিল?
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রথম কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
দেশ পরিচালনায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শাসনের পার্থক্যগুলো জানতে চাই, মুজিবনগর সরকারে সেখ মুজিব রাষ্ট্রপতি ছিলো কিন্তু ৭৩ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি ত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রী শাসনে চলে গেলেন, এর পিছনে কী কী যুক্তি থাকতে পারে বলে মনে করেন?
মালয়েশিয়ার রাজধানীর নাম কী?
সরকারের চতুর্থ অঙ্গ কী?
ক্লাইভের জামাতার নাম কী?
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সরকারের নাম কী?
বাংলাদেশের সরকারি নাম কী?
শেখ মুজিব এবং মেজর জিয়া স্বৈরশাসক হয়েও কিভাবে বাংলাদেশের হিরো হয়ে আছেন?
বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর নাম কী?
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম কী?
বাংলাদেশের মন্ত্রীপরিষদ সচিবের ক্ষমতা কেমন?
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?