রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস পান।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম তার রচিত কাব্য, উপন্যাস, ছোটোগল্প, নাট্যসাহিত্য, প্রবন্ধ, চিত্রকলা ও সঙ্গীতের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।উপন্যাস[সম্পাদনা]
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস বাংলা ভাষায় তার অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম। ১৮৮৩ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ মোট তেরোটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: , , , , , , ইত্যাদি। তবে উপন্যাসটি তার জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি।
উপন্যাসে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভারতীয় জনমানসে জাতীয়তাবাদের উত্থানের দিকটি আলোচিত হয়েছে। এই উপন্যাসে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদের সংমিশ্রণের বিপদ ও তার প্রতি রবীন্দ্রনাথের বিতৃষ্ণা ব্যক্ত হয়েছে। অন্যদিকে উপন্যাসের বিষয়বস্তুও কতকটা একই; তবে এই উপন্যাসে ভারতীয়ত্বের স্বরূপ সন্ধানেও ব্রতী হন কবি। উপন্যাসে আত্ম-পরিচিতি, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ধর্মবিশ্বাসের মতো বিষয়গুলি এক পারিবারিক উপাখ্যান ও ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কের আধারে আলোচিত হয়। একটি কাব্যিক উপন্যাস। সাহিত্যতত্ত্ববিদ সুকুমার সেন সংস্কৃত সাহিত্যের গদ্যপদ্যমিশ্রিত রচনাশৈলীর সঙ্গে এই উপন্যাসের তুলনা করেছেন। এই উপন্যাস রবীন্দ্রনাথের এক শ্লেষাত্মক উপন্যাস। এখানে দেখা যায়, নায়ক অমিত রায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামে এক বৃদ্ধ, সেকেলে ও অতি-নন্দিত কবির কাব্যদর্শনটিকে আক্রমণ করছেন।
রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসগুলি বাঙালি পাঠকসমাজে জনপ্রিয়তা পেলেও বহির্বঙ্গে এগুলি খুব একটা পরিচিতি পায়নি। পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্রায়ণের মাধ্যমে উপন্যাসটিকে পাশ্চাত্য বিদ্বজ্জন সমাজে তুলে ধরেন। রবীন্দ্র-উপন্যাসের আরও দুটি বহু-প্রশংসিত চলচ্চিত্রায়ণ হল ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ও সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ।
উপন্যাস প্রকাশকাল বিস্তারিত তথ্য
১৮৭৭-১৮৭৮ (১৯৬১) এটি রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রথম উপন্যাস। তবে এটি তার জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় নি। এটি 'ভারতী’ পত্রিকায় ১৮৭৭-১৮৭৮ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলীতে ‘করুণা’ প্রথম প্রকাশিত হয়। এটির পরিশেষ হয় নি বলে এটি উপন্যাসের সম্পূর্ণ মর্যাদা পায় নি (অসমাপ্ত উপন্যাস)। এটিকে বাদ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ মোট তেরোটি উপন্যাস লিখেছেন।
১৮৮৩ রবীন্দ্রনাথের প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত উপন্যাস। যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য ও বাকলার জমিদার রামচন্দ্রের বিবাদকে উপজীব্য করে রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১৩১৬ বঙ্গাব্দে অবলম্বনে রচিত হয় রবীন্দ্রনাথের নাটকটি। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে পুনর্লিখিত হয়ে নামে মুদ্রিত হয়।
১৮৮৭ ত্রিপুরার রাজপরিবারের ইতিহাস নিয়ে রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১২৯৭ বঙ্গাব্দে এই উপন্যাসের প্রথমাংশ অবলম্বনে নাটকটি রচিত হয়।
১৯০৩ সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। ২০০৩ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষ এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন।
১৯০৬ সামাজিক উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
১৯০৮ হাস্যরসাত্মক উপন্যাস। ১৩১১ বঙ্গাব্দে ('হিতবাদীর উপহার') সংকলনে নামে প্রকাশিত হয়। পরে নামে এই উপন্যাসের নাট্যরূপটি ১৩৩২ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়।
১৯১০ মহাকাব্যিক উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘতম উপন্যাস। পত্রিকার বিচারে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাংলা উপন্যাস।
১৯১৬ রাজনৈতিক উপন্যাস। চলিত ভাষায় লেখা রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাস। ১৯৮৪ সালে সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রখানি নির্মাণ করেন।
১৯১৬ সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। সাধুভাষায় লিখিত রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে বিবেচিত হয়। ২০০৮ সালে সুমন মুখোপাধ্যায় এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রখানি নির্মাণ করেন।
১৯২৯ সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। মাসিকপত্রে ধারাবাহিকরূপে প্রকাশিত হয় (আশ্বিন, ১৩৩৪ - চৈত্র, ১৩৩৫)। পত্রিকায় প্রকাশকালে নাম ছিল ।
১৯২৯ রোম্যান্টিক-মনস্তাত্ত্বিক কাব্যিক উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
১৯৩৪ সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। নরনারীর জটিল সম্পর্ক নিয়ে রচিত রবীন্দ্রনাথের একটি সংক্ষিপ্ত উপন্যাস।
১৯৩৪ রাজনৈতিক উপন্যাস। এই উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ সশস্ত্র বিপ্লববাদের বিরুদ্ধে বিতৃষ্ণা প্রকাশ করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। উৎপল দত্ত উপন্যাসটির নাট্যরূপ মঞ্চায়ন করেছিলেন।
কবিতা[সম্পাদনা]
কাব্যের ম্যাকমিলান সংস্করণের প্রচ্ছদ, ১৯১৩
রবীন্দ্রনাথের কাব্য বহুবর্ণময়। তার কাব্য কখনও রক্ষণশীল ধ্রুপদি শৈলীতে, কখনও হাস্যোজ্জ্বল লঘুতায়, কখনও বা দার্শনিক গাম্ভীরে, আবার কখনও বা আনন্দের উচ্ছ্বাসে মুখরিত। এই কাব্যগুলির উৎস পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকে রচিত বৈষ্ণব কবিদের পদাবলি সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথের কাব্যে গভীর প্রভাব বিস্তার করেন উপনিষদ রচয়িতা ঋষিকবিগণ। এঁদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হলেন ব্যাস। এছাড়াও অতিন্দ্রীয়বাদী সুফি সন্ত কবীর ও ভক্তিবাদী কবি রামপ্রসাদের প্রভাবও তার কাব্যে লক্ষিত হয়।[১] তবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা সৃষ্টিশীলতা ও সৌকর্যের সর্বোচ্চ চূড়ায় উপনীত হয়, গ্রামীণ বাংলার লোকসঙ্গীতের সঙ্গে তার পরিচিতি লাভের পরই। এই সময় লালন শাহ সহ বাংলার বিশিষ্ট বাউল সংগীতস্রষ্টাদের সান্নিধ্যে আসেন কবি।[২][৩] বাউল সংগীতকে পুনরাবিষ্কার করে জনপ্রিয় করে তুলতে রবীন্দ্রনাথ বিশেষ ভূমিকা নেন। এই সব বাউল গান উনিশ শতকের কর্তাভজাদের গানের মতো অন্তর্নিহিত দৈবসত্ত্বার অনুসন্ধান ও ধর্মীয় ও সামাজিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা ছিল।[৪][৫] শিলাইদহে অবস্থানকালে তার গীতিকবিতার জন্য একটি শব্দবন্ধ তিনি গ্রহণ করেন বাউল পদাবলি থেকে - । ধ্যান করেন তার -র। প্রকৃতি ও মানবচরিত্রের আবেগময় নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে এই যোগসূত্রটি পরমসত্ত্বার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ভানুসিংহের নামাঙ্কিত কবিতাগুলিতেও কবি এই শৈলীর ব্যবহার ঘটান। রাধা ও কৃষ্ণের প্রণয়লীলাকে উপজীব্য করে লেখা এই কবিতাগুলি পরবর্তী সত্তর বছরে বারংবার সংশোধন করেছিলেন কবি।[৬][৭]
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর রচিত উপন্যাস
এই পোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর রচিত উপন্যাসগুলি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত, কাদের উৎসর্গ করেন এবং উপন্যাসগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর রচিত উপন্যাস
Gupta Ji
Monday, January 18, 2021
জীবন পঞ্জি :
জন্ম – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ ক্রিষ্টাব্দে ৭ ই মে বাংলার ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ।
জন্মস্থান – কলকাতার বিখ্যাত জোঁড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে।
পিতা – মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
মাতা – সারদাসুন্দরী দেবী।
পারিবারিক উপাধি – কুশারী।
পত্নী – মৃণালিনী দেবী (ভবতারিণী দেবী)।
সন্তান – ৫ সন্তান, ২ পুত্র – রথীন্দ্রনাথ ও শমীন্দ্রনাথ এবং ৩ কন্যা মাধুরীলতা, মীরা ও রেনুকা।
মৃত্যু – কবিগুরু ৮০ বছর বয়সে ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ই আগষ্ট পরলোকগমন করেন।
আরও পড়ুন -চর্যাপদ : বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর রচিত প্রথম উপন্যাস “করুণা”। উপন্যাস টি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি।
১৮৭৭ থেকে ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ধারাবাহিকভাবে উপন্যাস টি ‘ভারতী পত্রিকা’ –য় প্রকাশিত হয়।
উপন্যাস টি কবিগুরু তাঁর বৌদি কাদম্বরী দেবীর অনুপ্রেরণায় রচনা করেন।
উপন্যাস টি তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে রচনা করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর প্রথম সার্থক উপন্যাস “বউ ঠাকুরাণীর হাট” ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর শেষ উপন্যাস “চার অধ্যায়”, উপন্যাস টি ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত উপন্যাস :
১ করুণা ১৮৭৭ ২ বউ ঠাকুরাণীর হাট ১৮৮৩ ৩ রাজর্ষি ১৮৮৭ ৪ চোখের বালি ১৯০৩ ৫ নৌকাডুবি ১৯০৬ ৬ গোরা ১৯১০ ৭ চতুরঙ্গ ১৯১৬ ৮ ঘরে বাইরে ১৯১৬ ৯ যোগাযোগ ১৯২৯ ১০ শেষের কবিতা ১৯২৯ ১১ দুই বোন ১৯৩৩ ১২ মালঞ্চ ১৯৩৪ ১৩ চার অধ্যায় ১৯৩৪
আরও পড়ুন -পত্রিকায় সাহিত্যিকদের প্রথম আত্মপ্রকাশ
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত্ উপন্যাস :
উপন্যাস পত্রিকা ১ করুণা ভারতী ২ বউ ঠাকুরাণীর হাট ভারতী ৩ রাজর্ষি বালক ৪ চোখের বালি নবপর্যায় বঙ্গদর্শন ৫ নৌকাডুবি নবপর্যায় বঙ্গদর্শন ৬ গোরা প্রবাসী ৭ চতুরঙ্গ সবুজপত্র ৮ ঘরে বাইরে সবুজপত্র ৯ যোগাযোগ বিচিত্রা ১০ শেষের কবিতা প্রবাসী ১১ দুই বোন বিচিত্রা ১২ মালঞ্চ বিচিত্রা
আরও পড়ুন -মালাধর বসু : ভাগবতের প্রথম অনুবাদক
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উৎসর্গকৃত উপন্যাস :
১ করুণা কাদম্বরী দেবী ২ বউ ঠাকুরাণীর হাট সৌদামিনী দেবী ৩ গোরা রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৪ ঘরে বাইরে প্রমথ চৌধুরী ৫ দুই বোন রাজশেখর বসু
রবীন্দ্র উপন্যাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা :
“করুণা” (১৮৭৭) :
উপন্যাস টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাত্র ১৬ বছর বয়সে বৌদি কাদম্বরী দেবীর অনুপ্রেরণায় রচনা করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত প্রথম উপন্যাস।
উপন্যাস টি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি।
১৮৭৭ থেকে ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ধারাবাহিকভাবে উপন্যাস টি ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
১৯৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলীতে “করুণা” প্রথম প্রকাশিত হয়।
"বউ ঠাকুরাণীর হাট" (১৮৮৩) :
উপন্যাসে তৎকালীন বাংলার রাজা প্রতাপাদিত্যের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।
এই উপন্যাসটিতে প্রতাপচন্দ্র ঘোষ রচিত “বঙ্গাধিপ পরাজয়” (১৮৬৯) গ্রন্থটির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
এই উপন্যাস –এর কাহিনি অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথ তাঁর “প্রায়শ্চিত্ত” এবং “পরিত্রান” নাটক দুটি রচনা করেন।
চরিত্র – প্রতাপাদিত্য, উদয়াদিত্য, বিভা, বসন্ত রায়।
"রাজর্ষি" (১৮৮৭) :
উপন্যাস টি ত্রিপুরার রাজবংশের একটি কাহিনি অবলম্বনে রচিত।
এই উপন্যাস থেকে উপাদান নিয়েই তিনি তাঁর “বিষর্জন” নাটক টি রচনা করেন।
রাজা গোবিন্দমানিক্য দেবী মন্দিরে বলিদানের ঘোর বিরোধী ছিলেন। মন্দিরের পুরোহিত রঘুপতির নিদারুণ দ্বন্দ্বের পটভূমিকায় উপন্যাসের কাহিনি পরিকল্পিত।
এই উপন্যাস টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর স্ত্রী চরিত্র বিহীন উপন্যাস।
চরিত্র – গোবিন্দ মানিক্য, রঘুপতি, জয় সিংহ, নক্ষত্র রায়।
"চোখের বালি" (১৯০৩) :
এই উপন্যাস টি বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।
এই উপন্যাসটির পূর্বনাম ছিল “বিনোদিনী”।
এই উপন্যাসের বাল বিধবা বিনোদিনী চরিত্রের আদর্শ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কে তাঁর “চরিত্রহীন” উপন্যাসের কিরণময়ী চরিত্রাঙ্কনে প্রেরণা দিয়েছিল।
২০০৩ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষ এই উপন্যাস অবলম্বনে "চোখের বালি" চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন।
চরিত্র – মহেন্দ্র, আশালতা, বিনোদিনী, বিহারী, অন্নপূর্ণা, রাজলক্ষী।
আরও পড়ুন -মুকুন্দ চক্রবর্তী : “চণ্ডীমঙ্গল” কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি
"নৌকাডুবি" (১৯০৬) :
বহু সমালোচকের মতে এই উপন্যাস টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর দুর্বলতম রচনা।
এই উপন্যাস টি কবিগুরু তাঁর “ভগ্নতরী” কবিতা অবলম্বনে রচনা করেন।
চরিত্র – রমেশ, কমলা, নলিনাক্ষ, হেমনলিনী।
"গোরা" (১৯১০) :
এই উপন্যাস টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর এক মহাকাব্যিক উপন্যাস।
৪৪ টি পরিচ্ছদ নিয়ে উপন্যাসটির প্রথম খণ্ড ১৩১৫ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসে প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর স্বদেশ চেতনার সর্বোত্তম প্রকাশ ঘটেছে তাঁর এই “গোরা” উপন্যাসে।
উপন্যাসে কাহিনির পটভূমি প্রথমত ও প্রধানত কলকাতা মহানগরী।
এই উপন্যাসে নীল আন্দোলনের প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর সহমর্মিতা প্রকাশিত হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় এই উপন্যাস পরিকল্পনায় ভগিনী নিবেদিতা –র প্রত্যক্ষ প্রভাব লক্ষ করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর এই উপন্যাস টি ইউরোপের “Epic Novel” –এর সঙ্গে তুলনীয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব উপন্যাসের তালিকা এবং সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বছর বয়সে উপন্যাস লেখা শুরু করেন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস মোট কতটি? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ উপন্যাস কোনটি?
সাহিত্য মার্চ ২৮, ২০২২
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব উপন্যাসের তালিকা এবং সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস লেখার প্রথম প্রচেষ্টা হলো 'করুণা'। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি এটি লিখেছিলেন। তবে এটি তাঁর জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি এবং এটি তাঁর অসম্পূর্ণ উপন্যাস। 'করুণা' বাদ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ১৩ টি।
আহমেদ মিন্টো
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন অনন্ত জীবন, চিরজীবী মানবাত্মা ও প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্যের কবি। মৃত্যুকে তিনি দেখেছেন মহাজীবনের যতি হিসেবে। জীবন-মৃত্যু ও জগৎ-সংসার তাঁর নিকট প্রতিভাত হয় এক অখন্ড রূপে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস বাংলা ভাষায় তার অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম। ১৮৮৩ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ১৩ টি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এছাড়া একটি অসমাপ্ত উপন্যাসও রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসমাপ্ত উপন্যাসের নাম— করুণা। করুণা উপন্যাসটি তাঁর জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। করুণা বাদ দিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মোট উপন্যাস ১৩ টি ধরা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব উপন্যাসের পরিচিতি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৩ টি উপন্যাসের তালিকা—বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩)
রাজর্ষি (১৮৮৭) চোখের বালি (১৯০৩) নৌকাডুবি (১৯০৬)
প্রজাপতির নির্বন্ধ (১৯০৮)
গোরা (১৯১০) ঘরে বাইরে (১৯১৬) চতুরঙ্গ (১৯১৬) যোগাযোগ (১৯২৯) শেষের কবিতা (১৯২৯) দুই বোন (১৯৩৩) মালঞ্চ (১৯৩৪) চার অধ্যায় (১৯৩৪)
করুণা (১৮৭৭-১৮৭৮) (১৯৬১)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস লেখার প্রথম প্রচেষ্টা হলো ‘করুণা’। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি এটি লিখেছিলেন। তবে এটি তাঁর জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। এটি ‘ভারতী’ পত্রিকায় ১৮৭৭-১৮৭৮ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলীতে ‘করুণা’ প্রথম প্রকাশিত হয়। এটির পরিশেষ হয়নি বলে এটি উপন্যাসের সম্পূর্ণ মর্যাদা পায় নি (অসমাপ্ত উপন্যাস)। এটিকে বাদ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ মোট তেরোটি উপন্যাস লিখেছেন।
অসমাপ্ত ‘করুণা’ উপন্যাসের চরিত্র— করুণা, নরেন্দ্র, মহেন্দ্র, পন্ডিত রঘুনাথ, মহিনী এবং অনূপকুমার।
বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩)
রবীন্দ্রনাথের প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত উপন্যাস হলো বৌ-ঠাকুরাণীর হাট। যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য ও বাকলার জমিদার রামচন্দ্রের বিবাদকে উপজীব্য করে রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১৩১৬ বঙ্গাব্দে বৌ-ঠাকুরাণীর হাট অবলম্বনে রচিত হয় রবীন্দ্রনাথের ‘প্রায়শ্চিত্ত’ নাটকটি। প্রায়শ্চিত্ত ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে পুনর্লিখিত হয়ে ‘পরিত্রাণ’ নামে মুদ্রিত হয়। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৌ-ঠাকুরাণীর হাট’ উপন্যাসের প্রশংসা করেছেন।
‘বৌ-ঠাকুরাণীর হাট’ উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৫৩ সালে ‘বউ ঠাকুরাণীর হাট’ নামে একটি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন নরেশ মিত্র।
রাজর্ষি (১৮৮৭)
রাজর্ষি হলো ত্রিপুরার রাজপরিবারের ইতিহাস নিয়ে রচিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। উপন্যাসটি মানবতা পক্ষে ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে রাজর্ষি উপন্যাসের প্রথম অংশের ওপর ভিত্তি করে রচিত হয় তার বিখ্যাত নাটক ‘বিসর্জন’।
রাজর্ষি উপন্যাসের চরিত্র— গোবিন্দমাণিক্য, পুরোহিত রঘুপতি, হাসি ও তাতা, জয়সিংহ, নক্ষত্ররায়।
চোখের বালি (১৯০৩)
চোখের বালি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। ১৯০১-০২ সালে নবপর্যায় বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯০৩ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়।
চোখের বালি উপন্যাসের বিষয় ‘সমাজ ও যুগযুগান্তরাগত সংস্কারের সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের বিরোধ’। আখ্যানভাগ সংসারের সর্বময় কর্ত্রী মা, এক অনভিজ্ঞা বালিকাবধূ, এক বাল্যবিধবা ও তার প্রতি আকৃষ্ট দুই পুরুষকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে।
চোখের বালি উপন্যাসের চরিত্র— মহেন্দ্র, আশা, বিহারী, বিনোদিনী, রাজলক্ষ্মী, অন্নপূর্ণা।
১৯০৪ সালে অমরেন্দ্রনাথ দত্ত এই উপন্যাসের নাট্যরূপ দেন। ১৯৩৮ সালে অ্যাসোসিয়েট পিকচার্সের প্রযোজনায় চোখের বালি অবলম্বনে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। ২০০৩ সালে বিশিষ্ট পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ এই উপন্যাস অবলম্বনে চোখের বালি নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। চোখের বালি ইংরেজি (২ বার), হিন্দি ও জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়।
নৌকাডুবি (১৯০৬)
নৌকাডুবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসটি ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। নৌকাডুবি উপন্যাসের মূল চরিত্রগুলো হচ্ছে— রমেশ, হেমনলিনী, কমলা, নলিনাক্ষ, অন্নদাবাবু।
নৌকাডুবি উপন্যাস অবলম্বনে ঋতুপর্ণ ঘোষ একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, এটি জানুয়ারি ২০১১-তে মুক্তি পায়।
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?