শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম পান।
শবে বরাতের নামাজ, নিয়ত ও সতর্কতা
শবে বরাতের নামাজ, নিয়ত ও সতর্কতা
Published by: LatestBDNews
ago
‘শব’ শব্দের অর্থ ‘রাত’ আর ‘বরাত’ হচ্ছে ‘ভাগ্য বা সৌভাগ্য’। অর্থাৎ শবে বরাত হচ্ছে সৌভাগ্যের রাত বা রজনী। মহিমান্বিত ও অতি পবিত্র এই রজনীতে পরম করুনাময় আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন তাঁর সৃষ্ট জীবের গুনাহ মাপ ও ভাগ্য নির্ধারন করেন। তাই এই রাতকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করেন।
আজ পবিত্র শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, এ রাতে বহু সংখ্যক বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি লাভ করেন। তাই, এ রজনীকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা ‘নিষ্কৃতি/মুক্তির রজনী’ বলা হয়।
এই রাত্রি সম্পর্কে হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেন, ‘এই রাত্রিতে এবাদত-কারিদের গুনাহরাশি আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেন। তবে কেবল আল্লাহর সাথে শিরককারী, সুদখোর,গণক, যাদুকর, কৃপণ, শরাবী, যিনাকারী এবং পিতা-মাতাকে কষ্টদানকারীকে আল্লাহ মাফ করবেন না।’
শবে বরাত সংক্রান্ত বর্ণনায় কোন কোন হাদিসে উল্লেখ পাওয়া যায়, এ রাতে আল্লাহ্ তাঁর প্রেমসিক্ত ধর্মপরায়ণ বান্দাদের মাঝে রহমত ও বরকত বর্ষণ করেন। মুসলিমদের মধ্যে কোন কোন গোষ্ঠি বিশ্বাস করেন, এ রাতে আল্লাহ্ সকল কিছুর ভাগ্য পুনর্বণ্টন করেন। কোন কোন সংস্কার মতে, এ রাতে কবর থেকে আত্মারা উঠে নিজ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আসে। ফলে, এ রাতে বিভিন্ন এলাকার আবাসিক গৃহে আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয়। তবে, এ ধরনের বিশ্বাস বা তথ্য কুরআন কিংবা হাদিস দ্বারা সমর্থিত নয়।
মুরতাদ্বা থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা) এর বাণী, যখন শাবানের ১৫তম রাতের আগমন ঘটে তখন তাতে কিয়াম (ইবাদত) করো আর দিনে রোজা রাখো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সূর্যাস্তের পর থেকে প্রথম আসমানে বিশেষ তাজাল্লী বর্ষণ করেন, এবং ইরশাদ করেনঃ কেউ আছ কি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনাকারী? তাকে আমি ক্ষমা করে দিব! কেউ আছ কি জীবিকা প্রার্থনাকারী? তাকে আমি জীবিকা দান করব! কেউ কি আছ মুসিবতগ্রস্ত? তাকে আমি মুসিবতমুক্ত করব! কেউ এমন আছ কি! কেউ এমন আছ কি! এভাবে সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ পাক তার বান্দাদেরকে ডাকতে থাকবেন। (— সুনানে ইবনে মাযাহ, ২য় খন্ড, পৃঃ ১৬০, হাদিস নং-১৩৮৮)
বুখারি ও মুসলিম বর্ণিত অনুরূপ একটি সহীহ হাদীসের বক্তব্য হল, আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষের দিকে নিকটতম আকাশে অবতরণ করে দু‘আ কবুলের ঘোষণা দিতে থাকেন।
এক হাদিসে উল্লেখ আছে, ব্যাভিচারী ও মুশরিক ছাড়া আর সবার মনোবাঞ্ছা এই রাত্রিতে পূরণ করা হবে। তাই এই সৌভাগ্যের রাতে আমরা যেন একটু কষ্ট করে আল্লাহর দরবারে হাত উঠাই। রহমত চাই, মাগফেরাত চাই, উন্নতি চাই আমারদের দেশ, দেশের মানুষ, নিজের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের জন্য।
শবে বরাতের নামাজ এবং নিয়ম কানুন:প্রকৃত অর্থে শবে বরাতের নামাজ বলে আলাদা কিছু নেই, যেহেতু এই রাতটি ইবাদত বন্দেগী করে কাটাতে হবে তাই হাদিসেই এই সমাধান দেয়া হয়েছে। আর বিশ্ব মুসলিম এই বিশেষ কিছু ইবাদত পালন করে থাকেন। হাদিসের আলোকে আমী সেগুলোর কথাই নিম্নে উল্লেখ করছি:
সন্ধ্যায়:এই রাতে মাগরিব নামাজের পর হায়াতের বরকত, ঈমানের হেফাযত এবং অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার জন্য দু রকাত করে মোট ৬ রকাত নফল নামায পড়া উত্তম।
এই ৬ রাকাত নফল নামাজের নিয়ম:প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহা এরপর যে কোন একটি সূরা পড়তে হবে। দু রকাত নামায শেষে করে সূরা ইয়াছিন বা সূরা ইফলাছ শরীফ ২১ বার তিলায়াত করতে হবে।
শবে বরাতের নফল নামাজ:১। দুই রকাত তহিয়াতুল অযুর নামায।নিয়মঃ প্রতি রকাতে আল হামদুলিল্লাহ ( সূরা ফাতিহা) পড়ার পর , ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ শরীফ ( সূরা এখলাছ) । ফযীলতঃ প্রতি ফোটা পানির বদলে সাতশত নেকী লিখা হবে।
২। দুই রকাত নফল নামায।নিয়মঃ ১নং নামাযের মত, প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ শরীফ, অতপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ। ফযীলতঃ রুজিতে রবকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখসিস পাওয়া যাবে।
৩। ৮ রকাত নফল নামায , দু রকাত করে পড়তে হবে।নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর , সূরা এখলাছ ৫ বার করে। একই নিয়মে বাকি সব। ফযীলতঃ গুনাহ থেকে পাক হবে , দু’আ কবুল হবে এবং বেশী বেশী নেকী পাওয়া যাবে।
৪। ১২ রকাত নফল নামায , দু রকাত করে।নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামায শেষ করে , ১০ বার কলমা তওহীদ, ১০ বার কলমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ।
৫। ১৪ রকাত নফল নামায, দু রকাত করে।নিয়মঃপ্রতি রকাত সূরা ফাতিহার পর যে কোন একটি সূরা পড়ুন। ফযীলতঃ যে কোন দু’আ চাইলে তা কবুল হবে।
৬। চার রকাত নফল নামায, ১ সালামে পড়তে হবে।নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফযীলতঃ গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভুমিষ্ঠ হয়েছে।
৭। ৮ রকাত নফল নামায, ১ সালামে।নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ শরীফ।
ফজিলত:এর ফজিলতে সর্ম্পকে বর্ণিত আছে যে, হযরতে সৈয়্যদাতুনা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহুমা এরশাদ করেছেন, “ আমি ঐ নামাজ আদায় কারীর সাফা’য়াত করা ব্যাতিত জান্নাতে কদম রাখবো না। রোযার ফযীলত হুজুর সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে শাবানে ১ দিন রোযা রেখেছে, তাকে আমার সাফা’য়াত হবে। আরো একটি হাদীস শরীফে আছে যে, হুজুর সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যাক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোযা রাখবে, তাকে জাহান্নামের আগুন ছোঁবে না। এছাড়াও পড়তে পারেন ‘সালাতুল তাসবীহ এর নামাজ। এই নামাজের অনেক অনেক ফযীলত রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
“হে চাচা জান! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার করে এই নামায পড়বেন। যদি দৈনিক না পারেন, তবে সপ্তাহে একবার পড়বেন। যদি সপ্তাহে না পারেন, তবে মাসে একবার পড়বেন। যদি মাসে না পারেন, তবে বছরে একবার পড়বেন। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে একবার হলেও এই নামায পড়বেন ( তবুও ছাড়বেন না)”।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
মাওলানা মুনীরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম
প্রকাশিত: ১৫:২২, ২৯ মার্চ ২০২১ আপডেট: ০৫:৫৯, ৩০ মার্চ ২০২১
শবে বরাত মানে ‘মুক্তির রাত’। শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার কাছে শাবান মাসের রোজা অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের কাছে শাবানের রাত (শবে বরাত) হাজির হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাকো (নামাজ পড়ে, কোরআন তেলাওয়াত করে, তাসবিহ পড়ে, জিকির করে, দোয়া করে) এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে ঘোষণা করেন, আছে কি এমন কোনো ব্যক্তি যে তার গুনাহ মাফের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করবে? আমি তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেব। আছে কি এমন কোনো রিজিক প্রার্থনাকারী, যে আমার কাছে রিজিক প্রার্থনা করবে? আমি তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেব। আছে কি এমন কোনো বিপদগ্রস্ত, যে আমার কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে সারারাত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দার ওপর বৃষ্টির মতো রহমত নাজিল হতে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ১৩৮৪, বায়হাকি : ৩৮২৩)
শবে বরাতে নফল নামাজের নিয়ম হলো, অন্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে নামাজ পড়া। প্রতি রাকাতেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোনো সুরা পড়া। এরপর যথানিয়মে রুকু-সিজদা করা এবং অন্য রুকনগুলো আদায় করা। এভাবে দুই রাকাত নামাজ শেষ করা।
দুই বা চার রাকাত নামাজ পড়ার পর কিছু সময় দোয়া-দরুদ, তাসবি-তাহলিল পড়া, জিকির করা, কোরআন তেলাওয়াত করা। এরপর আবার নামাজে দাঁড়ানো। নামাজের পর আবার জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, তাওবা-ইস্তেগফার করা, দীনি আলোচনা শোনা, কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা পড়া ইত্যাদি।
এভাবে সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত নামাজ পড়া যায় পড়তে পারেন। রাকাতেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। পবিত্র কুরআনে যথাসাধ্য নফল ইবাদত করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সাধ্যের বাইরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেন না। এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি কোনোটাই করা যাবে না। এই নিয়মটি এজন্য বলা হলো যে, একাধারে একটি আমল করতে থাকলে হয়তো কারো কারো একঘেয়েমি আসতে পারে, তাই পরিবর্তন করে আমলগুলো করে এই বরকতময় রাতটি ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়া সহজ হবে।
ইসলামে নফল নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট নিয়ম বানিয়ে নেওয়া সম্পূর্ণ নতুন আবিষ্কৃত বিদআত। এ ব্যাপারে সব যুগের সব আলেম একমত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সাহাবায়ে কেরাম কখনো তা পড়েননি। এ রাতে যেহেতু দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়, তাই আমরা ফজিলতময় নামাজ সালাতুত তাসবিহ পড়তে পারি। এই নামাজ জীবনে একবার হলেও পড়ার তাগিদ রয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেছেন, হে চাচা! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে প্রদান করব না? ...আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য একটি সুরা পড়বেন। প্রথম রাকাতে যখন কেরাত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন- সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদু লিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
এরপর রুকুতে যাবেন এবং রুকু অবস্থায় দোয়াটি ১০ বার পড়বেন। এরপর রুকু থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এরপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার। আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন।
যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন, তবে তা করুন। আর যদি না পারেন, তবে প্রতি জুমাবারে একবার। যদি প্রতি জুমাবারে না করেন, তবে প্রতি মাসে একবার। আর যদি তা-ও না পারেন, তবে জীবনে একবার। যখন দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহুদ পড়ার জন্য বসবেন তখন আগে ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বেন, তারপর তাশাহুদ পড়বেন। তাশাহুদের পর তাসবিহ পড়বেন না। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠবেন। এরপর তৃতীয় রাকাত ও চতুর্থ রাকাতেও উক্ত নিয়মে ওই তাসবিহ পাঠ করবেন।
কোনো এক স্থানে ওই তাসবিহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক, সেখানকার সংখ্যার সঙ্গে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নেবেন। আর এই নামাজে কোনো কারণে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সিজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে ওই তাসবিহ পাঠ করতে হবে না। তাসবিহর সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙুলের কর গণনা করা যাবে না, তবে আঙুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।
(আবু দাউদ: হাদিস ১২৯৭, ইবনে মাজাহ: হাদিস ১৩৮৭, বায়হাকি কুবরা: হাদিস ৪৬৯৫)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের শবে বরাতের পরিপূর্ণ সওয়াব ও ফজিলত লাভ করার তাওফিক দিন।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামঢাকা/তারা সম্পর্কিত বিষয়: শবে বরাত আরো পড়ুন
ফেরদৌসের ‘এই কাহিনী সত্য নয়’ নিয়ে প্রকাশনার অভিযোগ
লিলি খান: ভাষা-আন্দোলনের গৌরবময় সৈনিক
একুশে ফেব্রুয়ারি মিছিলের অন্যতম নারী নেত্রী হালিমা খাতুন
২১ ফেব্রুয়ারি আমতলার সমাবেশের একাংশের নেতৃত্বে ছিলেন শাফিয়া খাতুন
ভাষাসৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি
‘প্রতিটি মেয়ের সমর্থন থাকলেও সবাই মিছিলে যেত না’
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম~শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখে
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম~শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখে শবে বরাতের ফজিলত শবে বরাতের নফল নামাজের নিয়ম shab e barat namazer niyom 2023
Info Trending
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম~শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখে
5 days ago 4 minutes read
4.9/5 - (16 votes)
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম কি, শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত, শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখে। শবে বরাত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস ও শবে বরাতের ফজিলত নিয়ে থাকছে আজকের প্রতিবেদনটি। ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের জন্য একটি ইবাদতের রাত হলো শবে বরাতের রাত। এই রাতে আল্লাহর বান্দার মনের ইচ্ছা পূরণ করেন এবং বান্দা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ বান্দার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন। এই রাতে পৃথিবীর সকল মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নানা ধরনের ইবাদত করে থাকেন আর তার মধ্যে অন্যতম শবে বরাতের রাতে অনেক বেশি বেশি পরিমাণ নফল নামাজ আদায় করা । প্রথমেই জানানো হবে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে।শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
অনেকে মনে করেন শবেবরাতের জন্য আলাদাভাবে নামাজ আদায় করতে হয়। আসলে শবে বরাতের জন্য আলাদাভাবে স্পেশাল কোন নামাজ নেই। তবে শবে বরাতের দিন (আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়ে ৬ রাকাত নফল নামাজ পড়া উত্তম। এই ছয় রাকাতের প্রথম দুই রাকাত বান্দার হায়াতের বরকত বৃদ্ধি করে পরের দুই রাকাত বান্দার ঈমানকে হেফাজত করে এবং শেষের দুই রাকাত বান্দাকে অন্যের মুখাপেক্ষী হাওয়া থেকে বিরত রাখে।
এছাড়াও সারা বিশ্বের মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নানা ধরনের ইবাদত করে থাকেন আর এ সকল ইবাদতের মধ্যে শবে বরাতের রাতে বান্দা অনেক বেশি বেশি পরিমাণ নফল নামাজ আদায় করে। এক্ষেত্রে শবে বরাতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কত রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে তার হিসাব নেই। তবে শবে বরাতের রাতটি মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বরকত ময় রাত তাই এই রাতে বান্দা যত বেশি আল্লাহর ইবাদত করবে আল্লাহ খুশি হয়ে বান্দার সকল গুনাহ মাফ করে দিবে। এজন্য মুসলমানরা এই রাতে অনেক বেশি নফল নামাজ আদায় করে চলুন দেখে আসি নফল নামাজ আদায়ের নিয়ম।
শবে বরাতের নফল নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের রাতে নফল নামাজ আদায়ের নিয়ম যেহেতু শবে বরাতের জন্য আলাদাভাবে কোন নামাজ নেই তাই এক্ষেত্রে মুসল্লিরা এই রাতে অনেক বেশি বেশি পরিমাণ নফল নামাজ আদায় করবে। নফল নামাজ সাধারণত প্রত্যেকবার দুই রাকাত করে পড়তে হয়। শবে বরাতের রাতে আদায় করা নফল নামাজও অন্য সময় পড়া নফল নামাজের মত করে আদায় করতে হয়। সে ক্ষেত্রে প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজের নিয়ত করে বুকে হাত বেঁধে দাঁড়াতে হবে। পরে সুরা ফাতেহা একবার পাঠ করে সাথে একবার আয়তুল কুরসি এবং ১৫ বার করে সূরা ইখলাস পাঠ করতে হয়। শেষ বৈঠক এরপর সালাম ফিরিয়ে প্রত্যেক রাকাতে ১২বার করে দুরুদ শরীফ পড়তে হয়।
শবেবরাতে ৮ রাকাত নফল নামাজ পড়ার নিয়ম
শবে বরাতের ৮ রাকাত নফল নামাজের মধ্যে প্রত্যেকবার দুই রাকাত করে নফল নামাজ আদায় করতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতে নিয়াত শেষে বুকে হাত বেঁধে সুরা ফাতেহা পাঠ করার পর সূরা ইখলাস ৫ বার পাঠ করতে হয়। এভাবে করে শেষ রাকাতে শেষ বৈঠকের পর সালাম ফেরাতে হয়।
শবে বরাতের ১২ রাকাত নফল নামাজের নিয়ম
১২ রাকাত নফল নামাজ প্রত্যেকবার দুই রাকাত করে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতে নিয়ত করে বুকে হাত বাধে প্রতিরাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর দশবার সূরা এখলাছ পাঠ করতে হয়। এভাবে প্রতিবার সালাম ফিরিয়ে ১০ বার কালেমায়ে তাওহীদ ১০বার কালেমায় তামজিদ এবং ১০বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হয়।
শবেবরাতে ১৪ রাকাত নফল নামাজ পড়লে প্রতি রাকাতে নিয়ত করে বুকে হাত বেঁধে সূরা ফাতিহা ও যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে করতে হবে এভাবে করে দুই রাকাত করে ১৪ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত | শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের জন্য আলাদা করে কোন নামাজ বা ইবাদত নেই। তবে এই রাতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অনেক বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা যায়। শবে বরাতের নফল নামাজ দুই রাকাত করে করতে হয়। এক্ষেত্রে শবে বরাতের নামাজের নিয়ত হলো “নাওয়াইতুয়ান উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই ছালাতি লাইলাতিল বারাতিন নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লা হু আকবর”
এছাড়াও শবে বরাতের নামাজ এর নিয়ত বাংলায়ও করা যায় সে ক্ষেত্রে শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজের বাংলায় নিয়ত “শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ কিবলামুখী হয়ে আদায় করছি আল্লাহু আকবার ”
শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখে বাংলাদেশে
গত ২২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বাংলাদেশের আকাশে আরবি ১৪৪৪ হিজরীর পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে সেই হিসাবে আগামী ৭ই মার্চ রোজ মঙ্গলবার দিবাগত রাত্রে বাংলাদেশে শবে বরাতের রাত নির্ধারিত হয়েছে। শবে বরাত সম্পর্কে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন একদা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহু ওসাল্লাম বলেছিলেন তোমরা শাবান মাসের অর্ধেক হলে ( ১৪ তারিখ) দিবাগত রাত্রে আল্লাহর ইবাদত কর এবং তোমাদের মনে যা ইচ্ছা তা পাওয়ার জন্য আল্লাহর তায়ালার কাছে চাবে।
শবে বরাতের ফজিলত | শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাত প্রত্যেক মুসলমানের জন্য একটি বরকত ময় রাত। বান্দা ক্ষমা চাইলে আল্লাহ এই রাতে বান্দাদের সব রকমের পাপ থেকে মুক্তি দেন তাই এই রাতের নামকরণ করা হয়েছে শবেবরাত। হাদীস শরীফে বর্ণিত আল্লাহ শবে বরাতের রাতে বান্দা ক্ষমা চাইলে সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন শুধুমাত্র মুশরিক ও হিংসুক ব্যক্তি ছাড়া। এ প্রসঙ্গে ইবনে মাজাহ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তয়ালা মধ্য সাবানের রাত ( শবে বরাত)আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তার সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করে দেন।
আরো পড়ুন আজকের সোনার দাম কত ২০২৩~১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ বাংলাদেশ
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে অন্য আরো একটি হাদীস শরীফে আলী ইবনে আবি তালেব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন মধ্য সাবানের রাত আসে ( আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ ) তখন তোমরা রাত জেগে নামাজ আদায় করবে আর দিনে রোজা পালন করবে। কেননা আল্লাহ তাআলা সূর্যাস্তের পর দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করে বলেন, আছে কি কোন ক্ষমা প্রার্থনাকরী আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোন বিপদে নিপতিত ব্যক্তি আমি তাকে সুস্থতা দান করব। এভাবে ফজর পর্যন্ত বলা হয়ে থাকে।
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?