শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখা উত্তম
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখা উত্তম পান।
শবে বরাতে কয়টি রোজা রাখা উত্তম
দেখতে দেখতেই চলে এলো পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাত মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই পবিত্র একটি রাত। এই রাতে মুসলিমরা সারা রাত আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন। এছাড়া এই দিনে রোজা রাখাও অনেক উত্তম। কিন্তু শবেবরা
শবে বরাতে কয়টি রোজা রাখা উত্তম
মার্চ ০৬, ২০২৩ , ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ
বিষয়বস্তু: জানা অজানা
দেখতে দেখতেই চলে এলো পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাত মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই পবিত্র একটি রাত। এই রাতে মুসলিমরা সারা রাত আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন। এছাড়া এই দিনে রোজা রাখাও অনেক উত্তম। কিন্তু শবেবরাতে ঠিক কয়টি রোজা রাখা উত্তম তা অনেকেই জানেন না।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত কর ও দিনে রোজা পালন কর। (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এছাড়া প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজের নফল রোজা তো রয়েছেই, যা আদি পিতা হজরত আদম (আ.) পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদও (সা.) পালন করতেন, যা মূলত সুন্নত।
সুতরাং তিনটি রোজা রাখলেও শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। সর্বোপরি রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের পর রজব ও শাবান মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদত তথা নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন; শাবান মাসে কখনো ১০টি নফল রোজা, কখনো ২০টি নফল রোজা, কখনো আরো বেশি রাখতেন। রজব ও শাবান মাসের নফল রোজা রমজান মাসের রোজার প্রস্তুতি।
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ। (ইবনে মাজা, হাদিস- ১৩৮৪)
যেহেতু বিভিন্ন সহিহ হাদিসে শাবান মাসের রোজার সাধারণ ফজিলত এবং আইয়ামে বিজের রোজার ফজিলত উল্লেখিত হয়েছে- পাশাপাশি দূর্বল সনদে উপরোক্ত হাদিসটিও বিদ্যমান রয়েছে; তাই কেউ যদি এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে পনেরো শাবানের রোজা রাখেন- তাহলে তিনি সওয়াব পাবেন- ইনশাআল্লাহ।
হাদিসে আছে, এ রাতে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরই আল্লাহতায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন। মাগরিব থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রহমত নিয়ে বান্দাদের রহমত দান করার জন্য প্রথম আসমানে আসেন এবং প্রচুর সংখ্যক মানুষের গোনাহকে ক্ষমা করেন। হাদিসের ভাষ্যমতে এটা স্পষ্ট যে, এই রাত হচ্ছে আল্লাহর কাছে পাওয়ার রাত, চাওয়ার রাত। এই রাত হচ্ছে আল্লাহর দরবারে কাঁদার রাত। এ রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গোনাহ মাফ করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। তাই যত বেশি সম্ভব ইবাদত-বন্দেগি করার রাত এটি।
আলেমরা বলেন, শবে বরাতের মূল কাজই হলো- দিনে রোজা রাতে তাহাজ্জুদ। যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল, পুরো রাত ইবাদত করার শক্তি রাখেন না, তারা শবে বরাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোররাতে উঠে যাবেন। যাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়। কারণ তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়।
শবে বরাতে কয়টি রোজা রাখবেন?
হাদিস শরীফে শবে বরাতের রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূল (সা.) বলেছেন রাতে ইবাদত কর এবং দিনে রোজা রাখো। তাহলে শবে বরাতের রোজা একটিও রাখা যায়। তবে বিভিন্ন হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ রোজা রাখতেন। এই হিসেবে শবে বরাতে তিনটি রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সে হিসেবে শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে।
এ বিষয়ে অন্য একটি হাদিসে এসেছে, হজরত উম্মে সালমা ও হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- শাবান মাসে প্রায় পুরোটা সময়ই রাসূলুল্লাহ (সা.) রোজা রাখতেন। ( তিরমিজি- ১৫৫,১৫৬,১৫৯) সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ। তথ্য সূত্র: মানব কন্ঠ।
শেয়ার করুন
Facebook Twitter Email WhatsApp Viber Telegram Share
শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কীভাবে রাখতে হয়?
“শবে বরাত” মূলত ফারসি শব্দ। তবে হাদিসের ভাষায় বলা হয় ‘লাইলাতু নিসফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রজনী । তাফসিরের...
শিরোনাম
ধবল ধোলই থেকে রক্ষা পেল সাবিক-তামিমরা একসাথে থাকছি না আমি আর আলিয়া : নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী দুজন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী চালাতেন সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন প্ল্যান্ট পাটপণ্যই হবে আমাদের বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস: বস্ত্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে দূষণমুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী চার্লসের রাজ্যাভিষেকে আমন্ত্রিত হ্যারি-মেগান বঙ্গবন্ধু সকল প্রজন্মের কাছেই অনুসরণীয়: শামীম ২৫ মার্চ ১ মিনিট ব্ল্যাক আউট থাকবে বাংলাদেশ
ধর্ম
হজের সময় বাড়ালেও কোটা খালি ৭৬ হাজার
হজের প্যাকেজ কমিয়ে ৪ লাখ টাকা করতে লিগ্যাল নোটিশ
খুলে দেওয়া হলো যুক্তরাজ্যের বড় মসজিদ বায়তুল ফুতুহ
খুতবার আজানের উত্তর দেওয়া ও দোয়া পড়া জায়েজ কি?
আবারো বাড়লো হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়
বাড়ল বিমান ভাড়া, চাপের মুখে হজযাত্রীরা
‘জুমা মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা বিনিময়, জায়েজ কী?
পবিত্র শবে বরাত আগামী ৭ মার্চ
এবার হজ পালনে ৪ শর্ত দিলো সৌদি সরকার
Google +0 0 0
শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কীভাবে রাখতে হয়?
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৭
ধর্ম ডেস্ক প্রিন্ট অঅ-অ+
“শবে বরাত” মূলত ফারসি শব্দ। তবে হাদিসের ভাষায় বলা হয় ‘লাইলাতু নিসফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রজনী । তাফসিরের ভাষায় এটাকে ‘লাইলাতুস সাক’, ‘লাইলাতুর রাহমাহ’ ও ‘লাইলাতুল বারাআত’ বলা হয়।
শবে মানে হচ্ছে রাত আর বরাত মানে হচ্ছে মুক্তি। অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ হচ্ছে মুক্তির রাত। কারন এ রাতে আল্লাহ্ তার অগনিত বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন।
হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (র) বলেন, রাসূল (সঃ) তাকে বলেছেন, এই রাতে আল্লাহ ভেড়া বকরীর পশমের সংখ্যার পরিমানের চেয়েও বেশি সংখ্যা পরিমাণ গুনাহ্গারকে ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি – ৭৩৯)
শাবান মাসের ১৫ই রাত অর্থাৎ, ১৪ই শাবান দিবাগত রাতই হল শবে বরাত।
হাদিস শরীফে শবে বরাতের রোজার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূল (সঃ) বলেন, ১৫ শাবানের রাতে তোমরা নফল ইবাদাত করো এবং পরদিন রোজা রাখো। এই হাদিস দিয়ে শবে বরাতের একটি নফল রোজা রাখা প্রমাণিত হয়। তবে বিভিন্ন হাদিসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে তিন দিন তিনটি রোজা রাখতেন এবং তিনি নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সে হিসেবে শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে।
এ বিষয়ে অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি গোটা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। (তিরমিজি – ১৫৫, ১৫৬, ১৫৯)
সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ।
শবে বরাতের আমল অনেক ফজিলতপূর্ণ। আসুন জেনে নেই শবে বরাতে কি কি আমল করা যেতে পারে। এশার নামাজের পর নির্জনে (বাসায় নফল নামাজ পড়া উত্তম) দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে থাকবেন। কত রাকাত পড়লেন তা মুখ্য নয় বরং কতটা মনোযোগ ও দীর্ঘ্য করলেন সেটাই মুখ্য বিষয়।
হাদিস শরীফে আছে, হজরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ একবার রাসূল (সঃ) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এতো দীর্ঘ্য সিজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল নাড়া দিলাম। এরপর তিনি সিজদা থেকে উঠে নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন:
হে আয়েশা, তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে? আমি বললাম ইয়া রাসূল (সঃ) আপনার দীর্ঘ্য সিজদা দেখে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবী (সঃ) বললেনঃ তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) ভালো জানেন।
তখন রাসূল (সঃ) বলেনঃ এটা হলো মধ্য শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমা পার্থনকারীদের ক্ষমা করে দেন। অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন, আর বিদ্বেষ পোষণকারীদেরকে তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ঈমান তৃতীয় খন্ড পৃষ্ঠা ৩৮২)
এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি যে নামাজে অত্যন্ত মনোযুগী হতে হবে। এবং বেশি করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে আল্লাহ দুই ধরণের ব্যক্তি ছাড়া বাকিদের ক্ষমা করে দেন। তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শিরক করে এবং অন্ন ব্যক্তি হলো যে হিংসা করে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন এই দুই ব্যক্তিদের মধ্যে পরে না যাই।
হযরত আলী (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী করিম (সঃ) বলেছেনঃ ১৪ই শাবান দিবাগত রাত যখন আসে তোমরা এই রাতটি ইবাদাত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কেননা এই দিনে আল্লাহ সূর্যাস্তের পর প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি যাদের আমি ক্ষমা করবো? কোনো রিযিক প্রার্থী আছো কি যাদের আমি রিযিক দিবো? আছো কি কোনো বিপদগ্রস্ত যাদের আমি উদ্ধার করবো? এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ (হাদীসটি ইবনে মাজাহ তে বর্ণিত আছে)
এ রাতে কাজা হয়ে যাওয়া নামায পড়তে পারেন। তবে শুধুমাত্র ফরজ ও বিতির নামাজের কাজা পড়বেন।
শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারেন। যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়।
বিবার্তা/এসবি সর্বশেষ খবর
ধবল ধোলই থেকে রক্ষা পেল সাবিক-তামিমরা
মাদক মামলায় পুলিশ-আইনজীবীসহ ১৩ জনের জেল
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
হজের সময় বাড়ালেও কোটা খালি ৭৬ হাজার
একসাথে থাকছি না আমি আর আলিয়া : নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী
সরাইলে অনুমতিবিহীন ইটভাটাকে জরিমানা
গ্রিসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত
প্রয়োজনে হজের জন্য ভর্তুকি দিতে হবে: জিএম কাদের
আরো খবর সর্বাধিক পঠিত
সাধারণের নাগালের বাইরে ওষুধের দাম!
অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে নতুন আইন যুক্তরাজ্যে
বিএনপির আন্দোলনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখার কিছু নেই: কাদের
বাংলাদেশ-কাতার দৃঢ় ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী
ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে গিয়ে ২০ রোহিঙ্গা গ্রেফতার
বয়স ৩০ পেরিয়ে গর্ভধারণ, ঝুঁকি না ভাবনাহীন?
ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্টের কমান্ড সেন্টারে রুশ হামলা
ডিইউএমসিজেএএ-এর নৌ-বিহার ও মিলনমেলা
‘পাটশিল্পের অবদান—স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’
টঙ্গীতে দুই তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ড
শীর্ষ ১০ থেকে বের হল ঢাকা
ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ায় রুশ হামলা, শিশুসহ নিহত ১০
শবে বরাতের নামাজ, রোজা, আমল ও ফজিলত
শবে বরাতের নামাজ, রোজা, আমল ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা। শবে বরাত কত তারিখে?/শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত ও কিভাবে পড়বো?/শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কিভাবে রাখতে হয় ?/শবে বরাতের আমল ও ফজিলত
ইসলাম ও জীবনফজিলত Trending
শবে বরাতের নামাজ, রোজা, আমল ও ফজিলত
Rimon Follow on Twitter Send an email
1 week agoLast Updated: March 2, 20232 24,504 3 minutes read
শবে বরাতের নামাজ, রোজা, আমল ও ফজিলত
“শবে বরাত” মূলত ফার্সি শব্দ। তবে হাদিসের ভাষায় বলা হয় ‘লাইলাতু নিসফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রজনী । তাফসিরের ভাষায় এটাকে ‘লাইলাতুস সাক’, ‘লাইলাতুর রাহমাহ’ ও ‘লাইলাতুল বারাআত’ বলা হয়।
শবে মানে হচ্ছে রাত আর বরাত মানে হচ্ছে মুক্তি। অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ হচ্ছে মুক্তির রাত। কারন এ রাতে আল্লাহ্ তার অগনিত বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন।
হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (র) বলেন, রাসূল (সঃ) তাকে বলেছেন,
এই রাতে আল্লাহ ভেড়া বকরীর পশমের সংখ্যার পরিমানের চেয়েও বেশি সংখ্যা পরিমাণ গুনাহ্গারকে ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি – ৭৩৯)
আরও পড়ুন ঃ
যেভাবে দোয়া করলে আল্লাহ্ অবশ্যই তা কবুল করবেন
দোয়া কবুলের ২০ টি উত্তম সময়
শাবান মাস আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার নির্ধারিত ১২ মাসের একটি অন্যতম মাস। এ মাসের রয়েছে অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। এ মর্যাদার কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতেন।
শবে বরাত কত তারিখে?
শাবান মাসের ১৫ই রাত অর্থাৎ, ১৪ই শাবান দিবাগত রাতই হল শবে বরাত।
শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত ও কিভাবে পড়বো?
শবে বরাতে নির্দিষ্ট পরিমান নামাজের কথা কোনো হাদিস এবং কুরআনে উল্ল্যেখ নেই। তবে হাদিসে পাওয়া যায়, রাসূল (সঃ) বলেন,
যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদাত করবে এবং দিনে রোজা পালন করবে। ইবাদাতের মধ্যে শ্রেষ্ট ইবাদাত হল নামাজ। সুতরাং নফল ইবাদাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদাত হল নফল নামাজ। (ইবনে মাজাহ – ১৩৮৪)
তাই দুই রাকাত করে যত খুশি নামাজ পড়তে পারেন। নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। এখন নিয়ত করবেন কিভাবে? বলবেন আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ছি, আল্লাহু আকবার। এইভাবে নিয়ত করলে আপনার নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে আপনি চাইলে আরবিতে এইভাবেও করতে পারেন।
নাওয়াইতু আন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা-আলা- রাকা’আতাই ছলা-তি লাইলাতিল বারায়াতিন্ নাফ্লি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।
নামাজে সূরাতুল ফাতিহা পড়ার পর তিন বার সূরা ইখলাস বা সূরা ওয়াকিয়াহ পড়তে হবে এমন কোন কথা হাদিসে নেই। রাসূল (সঃ) সুস্পষ্টভাবে এ ব্যাপারে কিছু বলেন নি। আপনি পবিত্র কুরআনের যেকোনো সূরাই পড়তে পারেন।
শবে বরাতের রোজা কয়টি ও কিভাবে রাখতে হয় ?
হাদিস শরীফে শবে বরাতের রোজার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূল (সঃ) বলেনঃ ১৫ শাবানের রাতে তোমরা নফল ইবাদাত করো এবং পরদিন রোজা রাখো। এই হাদিস দিয়ে শবে বরাতের একটি নফল রোজা রাখা প্রমাণিত হয়। তবে বিভিন্ন হাদিসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে তিন দিন তিনটি রোজা রাখতেন এবং তিনি নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সে হিসেবে শাবান মাসে তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে।
এ বিষয়ে অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ
শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি গোটা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। (তিরমিজি – ১৫৫, ১৫৬, ১৫৯)
সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ।
শবে বরাতের আমল ও ফজিলত
শবে বরাতের আমল অনেক ফজিলতপূর্ণ। আসুন জেনে নেই শবে বরাতে কি কি আমল করা যেতে পারে। এশার নামাজের পর নির্জনে (বাসায় নফল নামাজ পড়া উত্তম) দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে থাকবেন। কত রাকাত পড়লেন তা মুখ্য নয় বরং কতটা মনোযোগ ও দীর্ঘ্য করলেন সেটাই মুখ্য বিষয়।
হাদিস শরীফে আছে, হজরত আয়েশা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ একবার রাসূল (সঃ) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এতো দীর্ঘ্য সিজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল নাড়া দিলাম। এরপর তিনি সিজদা থেকে উঠে নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন:
হে আয়েশা তুমি কি আশঙ্খা হয়েছে? আমি বললাম ইয়া রাসূল (সঃ) আপনার দীর্ঘ্য সিজদা দেখে আমার আশঙ্খা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবী (সঃ) বললেনঃ তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) ভালো জানেন।
তখন রাসূল (সঃ) বলেনঃ এটা হলো মধ্য শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমা পার্থনকারীদের ক্ষমা করে দেন। অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন, আর বিদ্বেষ পোষণকারীদেরকে তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ঈমান তৃতীয় খন্ড পৃষ্ঠা ৩৮২)
এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি যে নামাজে অত্যন্ত মনোযুগী হতে হবে। এবং বেশি করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে আল্লাহ দুই ধরণের ব্যক্তি ছাড়া বাকিদের ক্ষমা করে দেন। তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শিরক করে এবং অন্ন ব্যক্তি হলো যে হিংসা করে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন এই দুই ব্যক্তিদের মধ্যে পরে না যাই।
হযরত আলী (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী করিম (সঃ) বলেছেনঃ ১৪ই শাবান দিবাগত রাত যখন আসে তোমরা এই রাতটি ইবাদাত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কেননা এই দিনে আল্লাহ সূর্যাস্তের পর প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি যাদের আমি ক্ষমা করবো? কোনো রিযিক প্রার্থী আছো কি যাদের আমি রিযিক দিবো? আছো কি কোনো বিপদগ্রস্ত যাদের আমি উদ্ধার করবো? এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ (হাদীসটি ইবনে মাজাহ তে বর্ণিত আছে)
এ রাতে কাজা হয়ে যাওয়া নামায পড়তে পারেন। তবে শুধুমাত্র ফরজ ও বিতির নামাজের কাজা পড়বেন।
শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারেন। যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়।
বেশি করে তাওবা ও ইস্তেগফার করা।
বেশি করে দুরূদশরীফ পাঠ করা।
বেশি করে তসবিহ পাঠ করা (সুবহানাল্লাহ , আলহামদুলিল্লাহ , আল্লাহুআকবার)
বেশি করে দান-সদকা করা। গরীব-মিসকিনদের সাহায্য করা।
ফজর নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা।
প্রতিবছরই শবে বরাত আসে। আসে মুক্তি ও ক্ষমার বার্তা নিয়ে। আল্লাহর ভয়ে কম্পমান হৃদয়ে এ রাতে তাওবার উদ্রেক হয়। তাওবাকারীর জন্য ক্ষমার সওগাত নিয়ে আসে শবেবরাত। পাপ আক্রান্ত মন এ রাতে পরিশুদ্ধ জীবনে ফেরার তাগিদ অনুভব করে।
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?