শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয় পান।
শবে বরাতে যা করণীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাত একটি পুণ্যময় রজনী। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
শবে বরাতে যা করণীয় ও বর্জনীয়
মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ
০৯ এপ্রিল ২০২০, ১২:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
30 Shares
ShareShareShareTweetSharePrint
ছবি: সংগৃহীত
শবে বরাত একটি পুণ্যময় রজনী। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে আমার ধারণা হল, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন; আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়িশা!
তোমার কী এ আশঙ্কা হয়েছে? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আপনার দীর্ঘ সেজদা দেখে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না?
নবীজী (সা.) বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলই ভালো জানেন। তখন নবীজী (সা.) বললেন, এটা হল অর্ধশাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২)
শবে বরাতে আমাদের করণীয়হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, যখন শাবান মাস আগমন করত তখন রাসূল (সা.) বলতেন, এ মাসে তোমরা তোমাদের অন্তর্জগৎকে পূতপবিত্র করে নাও এবং নিয়তকে পরিশুদ্ধ ও সঠিক করে নাও। (তাবরানি)
অন্তরকে পূতপবিত্র করার কী অর্থ? এর অর্থ হল, বেশি বেশি নেক আমল করা ও তওবা- ইস্তেগফার করা। যখন শাবান মাস আসত, রাসূল (সা.) নফল আমলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতেন। দিনে রোজা রাখতেন এবং রাতে দীর্ঘ সময় নামাজ পড়তেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা পালন করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ রাতে বিশেষ করে আমরা কয়েকটি আমল করতে পারি।
১. বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা ২. জিকির-আজকার করা ৩. দীর্ঘসময় নিয়ে নফল নামাজ পড়া ৪. সালাতুত তাসবীহ পড়া ৫. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা ৬. অধিকপরিমাণে চোখের পানি ঝরিয়ে নিজের জন্য, সমস্ত মুসলমানের জন্য এবং মৃত আত্মীয়-স্বজনের জন্য দোয়া করা। ৭. লায়লাতুল বরাতের পরের দিন রোজা রাখা ৮. একাকী কবর জিয়ারত করা।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজী (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে গিয়ে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন।
তিনি আরও বলেন, নবীজী (সা.) তাকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া-বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)
ইমাম ইবনে রজব (রহ.) বলেন, শবে বরাতে নফল নামাজের জন্য মসজিদে ভিড় করা কিংবা মাহফিল করা মাকরূহ। (নফল ইবাদাত-বন্দেগি করতে হবে নিজের ঘরে)
তিনি আরও বলেন, একজন মুমিন বান্দার উচিত, এ রাতে জিকির ও দোয়ার জন্য পুরোপুরি অবসর হয়ে যাওয়া।
উচিত হল, প্রথমে খাঁটি মনে তওবা করা; এরপর মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রার্থনা করা; আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্য দোয়া করা এবং নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।
সব সময় সে সব গোনাহ থেকে বিরত থাকা, বিশেষত যেগুলো এই রাতের ফজিলত (ব্যাপক ক্ষমা) থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে। যেমন- শিরক, হত্যা, জিনা, হিংসা ইত্যাদি।
(সূত্র: লাতায়িফুল মাআরিফ ফীমা লিমাওয়াসিমিল ‘আমি মিনাল ওয়াযায়েফ)
শবে বরাতে যা করা যাবে না১. এই রাতকে উপলক্ষ করে মসজিদে বিপুল পরিমাণ কোনো জনসমাগমের আয়োজন করা যাবে না।
২. শুধু শবে বরাতকে কেন্দ্র করে মসজিদে বা ঘরে প্রয়োজন অতিরিক্ত লাইটিং করা যাবে না।
৩. ইবাদত মনে করে হালুয়া-রুটির আয়োজন করা যাবে না।
৪. ইবাদত মনে করে খাশি জবেহ করা যাবে না।
৫. আতশবাজি,পটকা ফোটানো যাবে না।
৬. ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে অযথা ঘোরাফেরা করা যাবে না।
৭. গর্হিত ও অশ্লীল কোনো কাজ করা যাবে না।
৮. অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না
৯. এবং দলবেঁধে কবরস্থানেও যাওয়া যাবে না।
30 Shares Share
যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও খবর
ওয়েলকাম টিউনে কুরআনের আয়াত বা আজান ব্যবহার করা যাবে?
মুমিনের পরিচয়
এক মলাটে পাঁচ মুহাদ্দিসের জীবনী
কুরআনের প্রভাব ও শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবির চিন্তাধারা
শবেবরাত কবে, জানা যাবে মঙ্গলবার
রজবের বাতাসে রমজানের সুর
ওয়েলকাম টিউনে কুরআনের আয়াত বা আজান ব্যবহার করা যাবে?
মুমিনের পরিচয়
এক মলাটে পাঁচ মুহাদ্দিসের জীবনী
শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষায় করণীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষায় করণীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষায় করণীয় ও বর্জনীয়
মাওলানা মুনীরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম
প্রকাশিত: ১২:০০, ২৯ মার্চ ২০২১ আপডেট: ১২:৪৬, ২৯ মার্চ ২০২১
Share to Facebook Facebook Share to WhatsApp WhatsApp Share to Messenger Messenger Share to Copy Link Copy Link
ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং আরবি ‘বারাআত’ অর্থ মুক্তি। শবে বরাত মানে ‘মুক্তির রাত’। শবে বরাতে নিহিত রয়েছে মুমিন-মুসলমানের মুক্তি এবং কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এ রাতকে শবে বরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়েছে।
লওহে মাহফুজে মানুষের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সবকিছু অনেক আগে থেকেই লেখা রয়েছে। শবে বরাতের রাতে এ বছরের কপি সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করা হয়। মানুষের আমলনামা আল্লাহর কাছে পাঠানো হয়। এই রাতে নফল ইবাদতের আলাদা গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একে হাদিসের পরিভাষায় ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা শাবানের অর্ধ মাসের রাত বলা হয়েছে।
শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার কাছে শাবান মাসের রোজা অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের কাছে শাবানের রাত (শবে বরাত) হাজির হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাকো (নামাজ পড়ে, কোরআন তেলাওয়াত করে, তাসবিহ পড়ে, জিকির করে, দোয়া করে) এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে ঘোষণা করেন, আছে কি এমন কোনো ব্যক্তি যে তার গুনাহ মাফের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করবে? আমি তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেব। আছে কি এমন কোনো রিজিক প্রার্থনাকারী, যে আমার কাছে রিজিক প্রার্থনা করবে? আমি তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেব। আছে কি এমন কোনো বিপদগ্রস্ত, যে আমার কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে সারারাত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দাদের ওপর বৃষ্টির মতো রহমত নাজিল হতে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ১৩৮৪, বায়হাকি : ৩৮২৩)।
তাছাড়া শাবান মাসে অধিক পরিমাণ নফল রোজা রাখার কথা অনেক হাদিসে এসেছে এবং আইয়ামে বীজ তথা প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টি সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। (ইসলাহী খুতুবাত)
হাদিসের আলোকে এ রাতের আমল হলো, আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফার করা। অনাড়ম্বর ও স্বাভাবিকভাবে কবর জিয়ারত করা। অনির্ধারিতভাবে নফল ইবাদত করা। পরদিন রোজা রাখা।
এ রাতে বিশেষ ধরনের অপরাধী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। কিন্তু একাগ্রচিত্তে তাওবা না-করা পর্যন্ত কিছুসংখ্যক অপরাধীকে কখনই ক্ষমা করা হয় না। তারা হলো- মুশরিক, জাদুকর, গণক, ঈর্ষাপরায়ণ, অন্যের হক নষ্টকারী, গায়ক, বাদক, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছেদকারী, পরস্পরে শত্রুতা পোষণকারী, অত্যাচারী শাসক ও তাদের সহযোগী, মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রয়কারী, অহঙ্কার করে পায়ের গিরার নিচে কাপড় পরিধানকারী, মদ পানকারী, পরনারীগামী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, কৃপণ, পরনিন্দাকারী, জুয়াড়ি প্রমুখ।
সম্মিলিত কোনো আমলকে এই রাতে আবশ্যকীয় মনে করা বিদআত। এই রাতের আমলসমূহ বিশুদ্ধ মতানুসারে সম্মিলিত নয়; নিরিবিলি ইবাদতের রাত- শবে বরাত। পুরুষদের জন্য তো ফরজ নামাজ অবশ্যই মসজিদে আদায় করতে হবে। তারপর পুরুষ ও মহিলারা সাধ্যানুযায়ী নিজ নিজ ঘরে একাকী নফল ইবাদত-বন্দেগি করবেন। নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হাদিসে নেই। আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না। তবে কোনো ঘোষণা ছাড়া এমনিতেই কিছু লোক যদি মসজিদে এসে যান, তাহলে প্রত্যেকে নিজ নিজ আমলে মশগুল থাকবেন। একে অন্যের আমলে ব্যাঘাত সৃষ্টির কারণ হওয়া যাবে না। আর খেয়াল রাখতে হবে, এ রাতে জাগ্রত থাকতে গিয়ে ফজরের নামাজ যেন ছুটে না যায়। শবে বরাতের সারারাতের আমলও ফজরের ফরজ নামাজের সমতুল্য হবে না।
অনেকে এই রাতে বিভিন্ন বিদআত ও কুসংস্কারে জড়িয়ে পড়েন। এগুলো অবশ্যই বর্জনীয়। যেমন:
১. শবে বরাত উপলক্ষে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ-মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা করা। এসব কাজে একদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করা হয়, অন্যদিকে এগুলো অগ্নিপূজকদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
২. আতশবাজি ফোটানো। ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। এটি নিতান্তই কুসংস্কার। ৩. হালুয়া-রুটি খাওয়া। সে দিন গরিব মানুষও টাকা ঋণ করে হলেও এক বেলা গোশত কিনে খায়। তারা মনে করে, এদিন ভালো খাবার খেলে সারা বছর ভালো খাওয়া যাবে। এটাও বিদআত ও কুসংস্কার।
৪. ছবি ও মূর্তি তৈরি। কোনো কোনো এলাকায় শবে বরাত উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন পদার্থ দ্বারা কুমির, ভোদর, গুইসাপ, মাছ ইত্যাদি প্রাণীর আকৃতিতে পাউরুটি, কেক, সন্দেশ ইত্যাদি বানাতে দেখা যায়। এদিন এ ধরনের খাবারের আয়োজন করাকে সওয়াবের কাজ মনে করা সুস্পষ্ট বিদআত ও কুসংস্কার। আর এগুলোর বেচাকেনাও জায়েয নয়।
৫. মৃতদের আত্মা দুনিয়াতে পুনঃআগমনের বিশ্বাস করা। কারণ মানুষ মারা গেলে তাদের আত্মা আবার দুনিয়াতে ফিরে আসা মুসলমানদের আকিদা নয়।
৬. নির্দিষ্ট নিয়মে নফল নামাজ পড়া। ইসলামে নফল নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট নিয়ম সম্পূর্ণ নতুন আবিষ্কৃত বিদআত। এ ব্যাপারে সবযুগের সকল আলেম একমত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদিন কখনো তা পড়েননি।
এ পবিত্র রাতের মাহাত্ম্য পূর্ণভাবে পেতে চাইলে আগে থেকেই দেহমন পবিত্র করে নিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার হক আদায় করে দিতে হবে। কারো সঙ্গে কোনো অন্যায় করে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। আর আল্লাহকে পেতে হলে সারাবছরই নামাজ-রোজা, ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। শবে বরাতের ইবাদত হলো নফল ইবাদত। প্রতিদিনের ফরজ ইবাদত যথাযথভাবে পালন করার পরই শবে বরাতের ইবাদতের সওয়াবের আশা করা যায়।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম** ফকিহ-মনীষীদের চোখে শবে বরাতঢাকা/তারা 23 Shares সম্পর্কিত বিষয়: শবে বরাত সংশ্লিষ্ট খবর
পবিত্র শবে বরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
আরো পড়ুন
লিলি খান: ভাষা-আন্দোলনের গৌরবময় সৈনিক
পবিত্র শবে বরাত: করণীয় ও বর্জনীয়
মুসলিম জীবনে শবে বরাত অন্যতম একটি দিন। শবে বরাত ফারসি শব্দ। শব মানে রাত, বরাত মানে মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। এর আরবি হলো- ‘লাইলাতুল বারাত।’
ইসলাম আমল পবিত্র শবে বরাত: করণীয় ও বর্জনীয়
পবিত্র শবে বরাত: করণীয় ও বর্জনীয়
০২:৫৮ পিএম | ২১ এপ্রিল, ২০১৯
৮ বৈশাখ ১৪২৬ ১৪ শা'বান ১৪৪০
ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
AddThis Sharing Buttons
Share to Facebook Share to Messenger Share to WhatsApp Share to Twitter Share to Print
শবে বরাত ইবাদত-বন্দেগির রাত, ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম
মুসলিম জীবনে শবে বরাত অন্যতম একটি দিন। শবে বরাত ফারসি শব্দ। শব মানে রাত, বরাত মানে মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। এর আরবি হলো- ‘লাইলাতুল বারাত।’ হাদিস শরিফে এ রাতকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্যরাত বলা হয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে এ রাত শবে বরাত নামেই বেশি পরিচিত।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হা মীম! শপথ! স্পষ্ট কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়।’ -সূরা দুখান: ১-৩
কোরআনের ব্যাখ্যাকারগণ বলেন, আয়াতে ‘লাইলাতুম মোবারাকা’ বা বরকতময় রাত বলে শাবান মাসের পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। -তাফসিরে মাজহারি, রূহুল মাআনি ও রূহুল বায়ান
অন্যদিকে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। -সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু সালাবা (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন অর্ধ শাবানের রাত আসে, তখন আল্লাহতায়ালা মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদের ক্ষমা করে দেন, কাফেরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিংসুকদের হিংসা পরিত্যাগ ছাড়া ক্ষমা করেন না। -কিতাবুস সুন্নাহ, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলতহজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন; আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে (মৃত্যুর)? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.), আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না। নবী করিম (সা.) বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলই ভালো জানেন। তখন নবী করিম (সা.) বললেন, এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত; এই রাতে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। -শোয়াবুল ঈমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২
হাদিসে আরও ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে এবং দিনে নফল রোজা পালন করবে। -ইবনে মাজাহ
ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ। আর নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য নতুন অজু মোস্তাহাব।
এ ছাড়া প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বীজের নফল রোজা তো রয়েছেই।
শবে বরাত হলো- ইবাদত-বন্দেগির রাত। দান-খয়রাত করা ও মানুষকে খাওয়ানো একপ্রকার ইবাদত। তবে এ দিন ও রাতকে হালুয়া-রুটি খাওয়ার রাতে পরিণত করে ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
শবে বরাত উপলক্ষে নফল রোজা রাখা, নফল নামাজ পড়া, কেরাত ও রুকু-সিজদা দীর্ঘ করা; কোরআন তেলাওয়াত করা; দরুদ শরিফ বেশি পাঠ করা, ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা; ফজিলতপূর্ণ বিভিন্ন দোয়া, তাসবিহ-তাহলিল ও জিকির-আজকার ইত্যাদি করা। সম্ভব হলে কবর জিয়ারত করা, নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা।
শবে বরাতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে খামাখা ঘোরাঘুরি করা, অযাচিত আনন্দ-উল্লাস করা, বেহুদা কথাবার্তা ও বেপরোয়া আচরণ করা, অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো, হালুয়া-রুটি বা খাবারদাবারের পেছনে বেশি সময় নষ্ট করা ও ইবাদতে উদাসীনতা সমীচীন নয়।
আরও পড়ুন:প্রাণীর আকৃতিতে শবে বরাতের খাবার বানানো নাজায়েজশবে বরাতের বিশেষ নামাজ বলে কিছু নেইশবে বরাত হালুয়া রুটি barta24 বার্তা২৪
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
নোয়াখালীতে সাজাপ্রাপ্ত দুই পলাতক আসামি গ্রেফতার
জাতীয়
ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ৫ শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার
ক্যাম্পাস
অবৈধ ইটভাটা দ্রুত বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ
জাতীয়
টাঙ্গাইলে পিকআপ উল্টে নিহত ৩
জাতীয়
বিকাশের উদ্যোগে বইমেলায় সংগৃহীত বই হাতে পেল সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা
জাতীয়
পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয়
উৎসবের নির্বাচন এখন আতঙ্ক হয়ে পড়েছে: জিএম কাদের
রাজনীতি
সঠিক তদন্তের পর বীমার দাবি পরিশোধ নিশ্চিত করুন : প্রধানমন্ত্রী
জাতীয়
তিন দেশীয় টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ভারতে গেল বাংলাদেশ দল
জাতীয়
ধানক্ষেত থেকে পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
জাতীয়
বৃহস্পতিবার যেসব এলাকায় ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
জাতীয়
ইবির ৫ ছাত্রীকে বহিষ্কারের নির্দেশ হাইকোর্টের
আইন-আদালত
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবারও সিঙ্গাপুরে গেলেন ওবায়দুল কাদের
জাতীয়
রাশিয়ায় ড্রোন হামলার পর ইউক্রেন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে পুতিনের নির্দেশ
আন্তর্জাতিক
জি-২০ সম্মেলনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাবে ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয়
ঢাকা আজও বায়ুদূষণের শীর্ষে
জাতীয়
বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ শুরু আজ
খেলা
এক ফলে জব্দ তিন রোগ
লাইফস্টাইল
গ্রাহকের বিমা দাবি যথাসময়ে পরিশোধের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
জাতীয়
প্রাথমিকে বৃত্তির সংশোধিত ফল প্রকাশ আজ
জাতীয়
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?