if you want to remove an article from website contact us from top.

    শবে বরাত সম্পর্কে কোরআন হাদিসের আলোচনা

    Mohammed

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    এই সাইট থেকে শবে বরাত সম্পর্কে কোরআন হাদিসের আলোচনা পান।

    কোরআন ও হাদিসের আলোকে পবিত্র শবে বরাত ও তার মর্যাদা

    কোরআন ও হাদিসের আলোকে পবিত্র শবে বরাত ও তার মর্যাদা

    মুফতি নেয়ামত উল্লাহ: ইসলামী বার চন্দ্র মাসের মধ্যে পবিত্র শা’বান মাস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ মাসের ১৫ তারিখের রাত উল্লেখযোগ্য পাঁচ রাতের একটি যার ভিত্তি ও তাৎপর্য কুরআন, সুন্নাহ ও ফোকাহায়ে কিরামের অভিমত দ্বারা প্রমাণিত। এতদসত্ত্বেও কতিপয় আলেম বিভিন্ন মিডিয়া যেমন ইন্টারনেট, টিভি, পুন্তিকা, পত্রিকা ইত্যাদির মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, যা আদৌ সঠিক নয়। এ কারণে ‘লাইলাতুল বরাত’ বা শবে বরাত উদ্যাপনের ভিত্তি ও তাৎপর্য পবিত্র কুরআন, সুন্নাহ্ ও ফোকাহায়ে কিরামের সুস্পষ্ট অভিমত দ্বারা প্রমাণ করাই এ প্রবন্ধের প্রতিপাদ্য।

    ‘শবে বরাত’ পাঁচটি মর্যাদাপূর্ণ রাতসমূহের একটি। এ রাত ইবাদতের রাত হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র যুগ থেকে স্বীকৃত হয়ে আসছে। এ রাত স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করেছেন। তাই এ রাতে ইখলাছের সাথে আমল করা অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে কুরআন, সুন্নাহ ও ফোকাহায়ে কিরামের অভিমত তুলে ধরেছি,যাতে পাঠকরা সহজেই এ রাতের মর্যাদা বুঝতে পারে।

    পবিত্র কুরআনের আলোকে ঃ মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেনÑ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ - فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ “নিশ্চয় আমি এটি(কুরআন মাজিদ) নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে; অবশ্য আমি সতর্ককারী। সেই রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ কাজের ফয়সালা হয়।”(সূরা আদ-দুখানঃ৩)

    এ আয়াতখানা ‘শবে বরাত’র মর্যাদা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। এটি প্রখ্যাত তাবেঈ হযরত ইকরামাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সহ এক দল মুফাস্সিরীনে কিরামের অভিমত। সকল তাফসীরকারক এ মতটি তাঁদের স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের অভিমত থেকে বোঝা যায় যে, ‘লাইলাতুল বরাতের’ কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে।( ইমাম কুরতুবী,তাফসীরে কুরতুবী, দারুল কুতুব আল-মিসরিয়্যাহ, মিশর, ২য় সংস্করণ, ১৩৮৪ হি:, খ. ১৬, পৃ: ১২৬; ইমাম খাযেন,তাফসীরে খাযেন, দারুল ফিকর বৈরুত, ১৩৯৯ হিজরী, খ: ৬, পৃ: ১৪৩; ইমাম বগভী,তাফসীবে বগভী, দারু তাইয়িবাহ লিন- নশর ওয়াত্ তাওযীহ, ৪র্থ সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরী, খ: ৭, পৃ: ২২৮) হযরত ইবন আব্বাস,হযরত কাতাদাহ্,হযরত ইবন জুবাইর,হযরত মুজাহিদ,হযরত যাইদ,হযরত হাসান বসরি রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমসহ জমহুর উলামায়ে কিরামের মতে এ আয়াত লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।(ইমাম আলূসি,রুহুল মায়ানি,দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ্,বৈরুত,১ম সংস্করণ,১৪১৫হি,খ.১৩,পৃ.১১০;ইমাম কুরতুবি,প্রাগুক্ত) এটিই অধিকতর নির্ভরযোগ্য বর্ণনা।

    সুন্নাহর আলোকে ঃ ‘শবে বরাত’ উদ্যাপন ও তাৎপর্য সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস শরিফ বর্ণিত রয়েছে। তন্মধ্য থেকে কয়েকটি উল্লেখ করা হল।

    হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনÑ

    قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ : إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ ، فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا نَهَارَهَا ، فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا ، فَيَقُولُ : أَلاَ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ لِي فَأَغْفِرَ لَهُ , أَلاَ مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ , أَلاَ مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ , أَلاَ كَذَا أَلاَ كَذَا ، حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ.

    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন শা’বান মাসের পনের তারিখ উপনীত হলে তোমরা ইবাদতের মাধ্যমে রাত উদ্যাপন কর এবং দিনে রোযা রাখ। কেননা, মহান রাব্বুল আলামীন সূর্য অস্তমিত হবার পর প্রথম আসমানে অবতীর্ণ হয়ে বলেন, ক্ষমা প্রার্থনা করার কে আছে, যাকে আমি ক্ষমা করব? রিযিক প্রার্থনা করার কে আছে, যাকে আমি রিযিক প্রদান করব? কে বিপদগ্রস্ত আছে, যাকে আমি বিপদ মুক্ত করব? এভাবে ফজর পর্যন্ত বিভিন্ন কিছু প্রার্থনার জন্য আহ্বান করতে থাকবেন।”(ইমাম ইবনু মাজাহ, আস্ সুনান, দারুল ফিকর, বৈরুত, খ: ১ম, পৃ: ৪৪৪; কাযী শাওকানী, তুহফাতুজ জাকেরীন, দারুল ক্বলস, বৈরুত, ১ম সংস্করণ, ১৯৮৪ইং, খ: ১ম, পৃ: ২১৭;ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, মাকতাবাতুর রুশদ, ১ম সংস্করণ, ১২১৩ হিজরী, খ: ৫ম, পৃ: ৩৫৪)

    উল্লেখ্য, হাদিস শরিফে বর্ণিত “আল্লাহ তায়ালা প্রথম আকাশে অবতরণ করেন” এর মর্মার্থ হচ্ছে শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তায়ালা আপন বান্দাদেরকে অতীব নৈকট্য প্রদান করেন।( মুল্লা আলি কারি,মিরকাত,দারুল ফিকর,বৈরুত,১ম সংস্করণ,১৪২২হি,খ.৩,পৃ.৯৬৯;আল্লামা সনদি,হাশিয়া আলা সুনানু ইবনে মাজাহ্,প্রকাশনা ও তাং অনুল্লিখিত,খ.৩,পৃ.১৫৭; আল্লামা সনদি,হাশিয়া আলা সুনানু ইবনে মাজাহ্, প্রকাশনা ও তাং অনুল্লিখিত,খ.৩,পৃ.১৫৭)

    বাক্যটি রূপাকার্থে প্রয়োগ হয়েছে। যেমন আমাদের সমাজে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে। “কেউ যদি আমার জন্য এক হাঁটু পানিতে নামে,আমি তার জন্য একগলা পানিতে নামি।এর উদ্দেশ্য হচ্ছে -সামান্য কিছুর বিনিময়ে অধিক প্রতিদান দেয়া। কারণ আল্লাহ তায়ালা উঠা-নামা,স্থান-কাল ইত্যাদি অবস্থা থেকে পবিত্র।( ইমাম তাফতাযানি,শরহুল মাকাসিদ,দারুল মায়ারিফুন নুমানিয়্যাহ,পাকিস্থান,প্র.১৪০১ হি.,খ.২,পৃ.২৭০)

    হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনÑ

    فَقَدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَخَرَجْتُ فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ فَقَالَ أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعْرِ غَنَمِ كَلْبٍ.

    “আমি এক রাত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঘরে পাইনি। অতঃপর আমি ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁকে জান্নাতুল বক্বীতে পেয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি ভয় কর যে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার উপর অন্যায় করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! মূলত তা-ই নয়; বরং আমি মনে করেছি যে আপনি আপনার কোন স্ত্রীর নিকট এসেছেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত কুদরতিভাবে প্রথম আসমানে আসেন আর ‘কাল্ব’ নামক গোত্রের ছাগলের সমুদয় পশমের চেয়েও বেশি সংখ্যক ব্যক্তিদেরকে ক্ষমা করে দেন।”(ইমাম তিরমিযী, আল-জামেঈ আস-সহীহ, দারু, ইহইয়ায়িত্ তুরাসিল আরবি, বৈরুত, খ. ৩য়, পৃ. ১১৬; ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, মুসনাদ, আলামুল কুতুব, বৈরুত, ১ম সংস্করণ, ১৪১৯ হিজরী, খ. ৬, পৃ. ২৩৮;বদরুদ্দীন আইনী, উমদাতুল ক্বারী, তারিখ বিহীন, খ. ১৭, পৃ: ৪৯; ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান; দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ১ম সংস্করণ, ১৪১০ হিজরী, খ. ৩য়, পৃ. ৩৭৯)

    সূত্র : projonmonews24.com

    কোরআন

    কোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত এর বাস্তবতা আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়া, অনুগ্রহ ও করুণা করে ফযিলত মণ্ডিত কিছু মাস ও কিছু রাত দান করেছেন। মাহে শা’বান ও শবে বরাত তারই অন্যতম। আরবী শা’বান (ﺷﻌﺒﺎﻥ) শব্দটি এক বচন, এর বহুবচন হচ্ছে শা’আবীন (ﺷﻌﺎﺑﻴﻦ ) অর্থ বিক্ষিপ্ততা ছড়ানো ও শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট হওয়া। মাস হিসেবে শা’বান যে ...

    Read moreকোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত এর বাস্তবতা

    কোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত এর বাস্তবতা

    কোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত এর বাস্তবতা

    আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়া, অনুগ্রহ ও করুণা করে ফযিলত মণ্ডিত কিছু মাস ও কিছু রাত দান করেছেন। মাহে শা’বান ও শবে বরাত তারই অন্যতম।

    আরবী শা’বান (ﺷﻌﺒﺎﻥ) শব্দটি এক বচন, এর বহুবচন হচ্ছে শা’আবীন (ﺷﻌﺎﺑﻴﻦ ) অর্থ বিক্ষিপ্ততা ছড়ানো ও শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট হওয়া। মাস হিসেবে শা’বান যে ফযিলতপূর্ণ তা তার শাব্দিক গঠন প্রক্রিয়া থেকেই বুঝা যায়। পাঁচটি হরফ (শীন, আইন, বাআলিফ, এবং নূন) দ্বারা শব্দটি গঠিত। তাঁর প্রত্যেকটি হরফই একেকটি ফযিলতের ইঙ্গিত বহন করে। যেমন ‘শীন’ দ্বারা ﺷﺮﺍﻑ (শারফুন) বা সম্মান, ‘আইন’ দ্বারা ﻋﻠﻮ (উলুব্বুন্) বা উচ্চ মর্যাদা, ‘বা’ দ্বারা ﺑﺮ ও ﺑﺮﻛﺔ (বিররুন ও বারাকাতুন) বা নেক আমল ও বরকত, ‘আলিফ’ দ্বারা ﺍﻟﻔﺔ (উলফাতুন) যার অর্থ মহব্বত এবং ‘নূন’ দ্বারা ﻧﻮﺭ (নূরুন) বা হেদায়তের আলোর দিকে ঈশারা করা হয়েছে বলে বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলায়হি অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

    পক্ষান্তরে ‘শবে বরাত’ শব্দটি ফার্সি অর্থ: ভাগ্য রজনী আর এ পবিত্র রাতের বিভিন্ন নাম পাওয়া যায়।

    ১. ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺒﺮﺍﺋﺔ (লায়লাতুল বরাত) বা বন্টনের রাত,

    ২. ﻟﻴﻠﺔ ﻣﺒﺎﺭﻙ (লায়লাতুল মুবারাকা) বা বরকতময় রজনী,

    ৩. ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺮﺣﻤﺔ (লায়লাতুর রাহমা) বা করুণার রাত ও

    ৪. ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺼﻚ (লায়লাতুছ্ ছাক্) বা সনদ প্রাপ্তির রাত। [সূত্র: তাফসীরে কাশশাফ, জুমাল, সাবী, সিরাজুন মুনীর]

    হযরত আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলায়হি গুনিয়াতুত্ ত্বালেবীনে উল্লেখ করেন এ রাতকে লায়লাতুল বরাত বলা হয় এ জন্য যে, কেননা এ রাতে দু’ধরনের বরাত হাছিল হয়। একটি হলো: হতভাগাদের আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া, অপরটি হলো: আল্লাহর প্রিয়জনদের অপমান থেকে মুক্তি ও নিরাপদ থাকা।

    [গুনিয়াতুত্ ত্বালেবীন]

    📌 মাহে শা’বানঃ

    ‘ইমাম রাফে’ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু উল্লেখ করেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এ মাসের নাম ‘শা’বান’ এ জন্য রাখা হয়েছে যে, এ মাসে রোযা পালনকারীর সাওয়াব, মঙ্গল ও সৌন্দর্য শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তার লাভ করে যাতে রোযাদার জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মাঝে সকল সৃষ্টির একটি বড় আশা-আকাক্সক্ষা ও আরজু থাকে মহানবী হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় হওয়া। মাহে শা’বান এমন এক মর্যাদামণ্ডিত মাস যে মাসকে আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজের মাস বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন ‘‘শা’বান আমার মাস, রমযান আমার উম্মতের মাস।’’ [ফিরদাউসূল আখবার]

    আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ মাসের মধ্যে বেশি রোযা রেখে শা’বানকে সম্মানিত করেছেন। হাদীস শরীফে এসেছে।

    ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺼﻮﻡ ﺣﺘﻰ ﻧﻘﻮﻝ ﻻﻳﻔﻄﺮ ﻭﻳﻔﻄﺮ ﺣﺘﻰ ﻧﻘﻮﻝ ﻻ ﻳﺼﻮﻡ ﻓﻤﺎ ﺭﺃﻳﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﺳﺘﻜﻤﻞ ﺻﻴﺎﻡ ﺷﻬﺮ ﺍﻻ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻣﺎ ﺭﺍﻳﺘﻪ ﺍﻛﺜﺮ ﺻﻴﺎﻣﺎ ﻣﻨﻪ ﻓﻰ ﺷﻌﺒﺎﻥ –

    অর্থাৎ হযরত আয়শা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ধারাবাহিকভাবে এতোবেশী রোযা রাখতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হয়তো আর রোযা ছাড়বেন না আবার কখনো এতো বেশী রোযা থেকে বিরত থাকতেন যে, আমরা বলতাম হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হয়তো আর রোযা রাখবেন না। তাই রোযা রাখতে দেখিনি এবং সবচেয়ে যে মাসে সর্বাধিক নফল রোযা রাখতেন তা হলো শা’বান মাস।[বুখারী ও মুসলিম]

    এভাবে আরো অসংখ্য হাদিস শরীফ সিহাহ্ সিত্তা ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে শা’বানের গুরুত্ব ও ফযিলতের প্রমাণ পাওয়া যায়। যা এ ছোট পরিসরে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। শবে বরাত তথা ‘ভাগ্য রজনী’ এ রাতকে ক্বোরআনুল করীমে ﻟﻴﻠﺔ ﻣﺒﺎﺭﻛﺔ বা বরকতময় রাত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর হাদীসে পাকে ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ বা শা’বানের মধ্য রজনী হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে।

    📌ক্বোরআনের আলোকে শবে বরাত এরশাদ হয়েছে –

    ﺣﻢ – ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴْﻦِ ﺍِﻧَّﺎ ﺍَﻧْﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻰْ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣُّﺒَﺎﺭَﻛَﺔٍ ﺍِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻨْﺬِﻳْﺮِﻳْﻦَ ﻓِﻴْﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺍَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴْﻢٍ –

    অনুবাদ: হা-মীম, সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ। নিশ্চয় আমি পবিত্র ক্বোরআনকে বরকতময় রাতে অবতীর্ণ করেছি। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। ওই রাত্রিতে ফয়সালাকৃত বিষয়সমূহ বন্টন করা হয়। [সূরা দোখান: আয়াত ১-৪]

    উল্লিখিত আয়াতে বরকতময় রাত বলতে শবে বরাতকে বুঝানো হয়েছে। এ রাতে গোটা ক্বোরআন শরীফকে ‘লওহে মাহফুয’ থেকে প্রথম আসমানের দিকে অবতীর্ণ করা হয়েছে। অতঃপর সেখান থেকে ২৩ বছরে অল্প অল্প করে হুযূরে পাক (ﷺ) উপর অবতীর্ণ করা হয়। এ রাতে গোটা বছরের রিয্ক, মৃত্যু, জীবন, সম্মান ও লাঞ্চনা মোটকথা সমস্ত কর্ম ব্যবস্থাপনা ‘লওহে মাহফুয’ থেকে ফিরিশতাদের সহীফাগুলোতে স্থানান্তরিত করে প্রত্যেকটা সহীফা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ফিরিশতাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়। যেমন মালাকুল মওতকে সমস্ত মৃত্যু বরণকারীদের তালিকা ইত্যাদি। [তাফসীরে কানযুল ঈমান]

    হাদীসের আলোকে শবে বরাত

    শা’বান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত তথা শবে বরাত সম্পর্কে সিহাহ্ সিত্তাহর উল্লেখযোগ্য কিতাবাদিসহ নানা নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে প্রমাণ মিলে; যা নিম্নরূপ-

    শবে বরাতে খোদায়ী আহ্বানঃ

    ﻋﻦ ﻋﻠﻰ ﺍﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﻃﺎﻟﺐ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﺍ ﻟﻴﻠﻬﺎ ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ ﻧﻬﺎﺭﻫﺎ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻨﺰﻝ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻐﺮﻭﺏ ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻻ ﻣﻦ ﻣﺴﺘﻐﻔﺮ ﻟﻰ ﻓﺎﻏﻔﺮﻟﻪ ﺍﻻ ﻣﺴﺘﺮﺯﻕ ﻓﺎﺭﺯﻗﻪ ﺍﻻ ﻣﺒﺘﻠﻰ ﻓﺎﻋﺎﻓﻴﻪ ﺍﻻ ﻛﺬﺍ ﺍﻻﻛﺬﺍ ﺣﺘﻰ ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻔﺠﺮ –

    অর্থাৎ হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যখন শা’বানের মধ্য রজনী উপস্থিত হবে, তখন তোমরা এ রাতটিকে (ইবাদতের মাধ্যমে) উদযাপন কর এবং আগত দিনটিকে রোযার মাধ্যমে। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা ওই রাতের সূর্যাস্তের পরক্ষণ থেকেই পৃথিবীবাসীর প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি দেন এবং ঘোষণা করেন- আছ কি কেউ ক্ষমা চাওয়ার? তাকে ক্ষমা করবো। আছ কি কেউ রিযিক প্রার্থনা করার? রিযিক দ্বারা ধন্য করবো। আছে কি কেউ অসুস্থ? তাকে আরোগ্য দান করব। আছ কি এমন কেউ? আছ কি এমন কেউ? সুবহে সাদেক পর্যন্ত এভাবে বলা হবে। কোন কোন বর্ণনা মতে সূর্যোদয় পর্যন্ত এ ঘোষণা চলতে থাকে।

    [ইবনু মাজা, মিজবাহুয যুজাজাহ্, তারগিব]

    📌শবে বরাতে ভাগ্য বন্টিত হয়

    ইমাম মহিউস্ সুন্নাহ্ বগভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, শবে বরাতের বরকতময় রজনীতে গোটা বিশ্ববাসীর পূর্ণ এক বৎসরের লেনদেনের দপ্তর ফেরেশতাদেরকে সোপর্দ করা হয়। এমনকি মানব জাতির বিবাহ্ শাদী, তার ঘরে সন্তান সন্ততির জন্ম গ্রহণ, সন্তানের আগমনে খুশী উদযাপন তার বসতবাড়ি ও গৃহ নির্মাণ সব কিছু তালিকাভুক্ত করা হয়।

    সূত্র : www.madina786.com

    কোরআন ও হাদিসের আলোকে পবিত্র শবে

    কোরআন ও হাদিসের আলোকে পবিত্র শবে-বরাত

    কোরআন ও হাদিসের আলোকে পবিত্র শবে-বরাত

    একুশে টেলিভিশন

    প্রকাশিত : ১৩:৫০, ১ মে ২০১৮

    AddThis Sharing Buttons

    Share to Facebook Share to Twitter Share to LinkedIn Share to More

    আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে লাইলাতুল বরাত কিংবা শবেবরাত বলে। ‘শব’ কিংবা ‘লাইলা’ শব্দের অর্থ রাত। আর ‘বারাআত’ অর্থ হচ্ছে মুক্তি। বাংলায় ‘বরাত’ শব্দটি ভাগ্য বা সৌভাগ্য অর্থে ব্যবহৃত হলেও আরবিতে এ শব্দটির অর্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আরবিতে “বারাআত” শব্দটির অর্থ বিমুক্তি, সম্পর্কচ্ছিন্নতা, মুক্ত হওয়া, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া ইত্যাদি।

    ফার্সি ‘শবেবরাত’, আরবি “লাইলাতুল বারাআত” বা “বিমুক্তির রজনী” বলতে আরবি ৮ম শাবান মাসের মধ্যম রজনী বুঝানো হয়। সুতরাং মানুষ যদি এ রাতে নিজ কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে চক্ষু হতে অশ্রু প্রবাহিত করে তাহলে মহান রাব্বুল আলামিন তার পাপরাশি মুক্ত করে দেন। কুরআন ও হাদিসে “লাইলাতুল বারাআত” পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়নি। সাহাবী-তাবিয়ীগণের যুগেও এ পরিভাষাটির ব্যবহার জানা যায় না। এ রাতকে হাদিস শরীফে “লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান” বা “মধ্য শা’বানের রজনী” বলা হয়েছে। সাহাবী-তাবিয়ীগণের যুগের অনেক পরে এ রাতকে “লাইলাতুল বারাআত” বা “বিমুক্তির রজনী” বলে আখ্যায়িত করার প্রচলন শুরু হয়। মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেছেন যে, ৪৪৮ হিজরি সনের বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রথম এ রাতে এ পদ্ধতিতে সালাত আদায়ের প্রচলন শুরু হয়। মিরকাতুল মাফাতীহ ৩/৩৮৮

    তবে কুরআনুল কারীমের একটি আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাস্সিরগণ “শবেবরাত” প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তো তা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারক (বরকতময়) রজনীতে এবং আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরিকৃত হয়। (সূরা দুখান-৩-৪ আয়াত)। অবশ্য অধিকাংশ মুফাসসির একে শবেকদরের সাথেই সম্পৃক্ত করেছেন। অবশ্য ‘শবেবরাত’ বা ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

    শবেবরাতের গুরুত্ব : এ সম্পর্কে হাদিসে ব্যাপক আলোচনা বিদ্যমান রয়েছে। এক হাদিসে রয়েছে- নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা রমজান মাসের জন্যে শাবান চাঁদের হিসাব রাখো। হুজুর (সা.) রমজানের রোজা ব্যতীত শাবান মাসে যতো অধিক রোজা রাখতেন, অন্য মাসে ততো অধিক রোজা রাখতেন না। এ জন্যেই হুজুর (সা.) শাবান মাসকে নিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন। হযরত আসমা ইবনে জায়েদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত-রাসূল ইরশাদ করেছেন: শাবান আমার মাস, আর রমজান আল্লাহ্র মাস।

    আবু মুসা আশআরী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,“মহান আল্লাহ বরাত রজনীতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন (ইবনু খাজাহ)।” আবু সা’লাবা আল-খুশানী (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন : “যখন মধ্য শাবানের রাত আসে, তখন আল্লাহ্ তা’য়ালা তাঁর সৃষ্টি জীবের প্রতি দৃকপাত করেন। অতঃপর মুমিনদেরকে মার্জনা করে দেন। আর হিংসা-বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতায় লিপ্তদেরকে তাদের অবস্থায় ছেড়ে দেন (আম সুন্নাহ-২২৩-২২৪ পৃ)।

    হযরত আয়শা (রা.) বলেন, শবেবরাতে চলতি বছরে জন্মগ্রহণকারী আদম সন্তানদের নাম এবং চলতি বছরে মৃত্যুবরণকারী আদম সন্তানদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। এ রাতে আদম সন্তানদের আমল উঠিয়ে নেয়া হয় এবং তাদের রিযক অবতীর্ণ হয়। (বায়হাকী) আবূ উমামা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত আছে যে, পাঁচ রাতের দোয়া বিফল হয় না। শবেকদর, শবেবরাত, জুমার রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।”

    মহানবী (সা.) শবেবরাত অর্থাৎ ১৫ শাবানের দিনে রোজা রাখা এবং রাতে ইবাদত করার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন। মিশকাত শরীফে হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন : শাবানের ১৫তম রজনী উপনীত হলে তোমরা সে রাতে অধিক হারে আল্লাহ্র ইবাদত করো। অতঃপর দিনের বেলা রোজা পালন করো। সেদিন আল্লাহ্তায়ালা সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে প্রথম আকাশে অবতীর্ণ হন এবং আহ্বান করতে থাকেন- আছে কি কেউ ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করবো; আছে কি কোনো রিজিক অন্বেষণকারী, আমি তাকে রিজিক দান করবো; আছে কি কেউ বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে বিপদমুক্ত করবো। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আহ্বান করতে থাকেন। (মিশকাত-১/)।

    উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, এক রাতে আমি, রাসূল (সা.)কে পেলাম না। খুঁজতে বের হয়ে দেখি- তিনি মদিনা শরীফের সর্ববৃহৎ গোরস্তান ‘জান্নাতুল বাক্বি’তে আছেন। আমাকে দেখে তিনি বললেন, আয়েশা! তুমি কি জানো আজ কোন্ রজনী? আমি বললাম না। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বললেন, আল্লাহ্তায়ালা বরাত রজনীতে নিকটতম আকাশে অবতীর্ণ হন এবং ‘কল্ব’ গোত্রের মেষপালের পশম-সংখ্যারও অধিক ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন। আজ সেই রজনী। (মিশকাত-/পৃঃ)

    উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রাজি.) থেকে আরো বর্ণিত আছে- একদা নবী করিম (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন- ‘আয়েশা’! তুমি কি জানো বরাত রজনীতে কী ঘটে? তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ্ কী ঘটে? হুজুর (সা.) বললেন, এ রাতে নির্দিষ্ট হয় এ বছরে যতো মানুষ জন্মলাভ করবে, এ বছর যেসব মানুষ মৃত্যুবরণ করবে, এ রাতে উপস্থিত করা হয় মানুষের কর্মসমূহ এবং এ রাতে অবতীর্ণ করা হয় মানুষের রিজিকসমূহ। আল্লাহ্তায়ালা এ রজনীতে আদম সন্তানের ব্যাপারে ঘটিতব্য স্থিরিকৃত সকল ফয়সালা যেমন- জন্ম, মৃত্যু, রিজিক বণ্টন ইত্যাদি বিষয়াবলীর তালিকা পৃথকভাবে লিপিবদ্ধ করে নেন এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ফেরেশতাগণের কাছে তা’ অর্পণ করেন।

    হযরত আতা ইবনে ইয়াছার (রা.) বর্ণনা করেন, শবেবরাত উপস্থিত হলে মালাকুল মাওত নামক ফেরেশতাকে একটি তালিকা অর্পণ করে বলে দেয়া হয় যে, এ তালিকায় যতোগুলো নাম লিপিবদ্ধ আছে, তাদের আত্মাগুলো নিধন করে নেবে। অথচ মানুষ বৃক্ষরোপণ, বিবাহশাদি, গৃহনির্মাণ প্রভৃতি কাজ করে যাচ্ছে। হতে পারে তাদের নামও মৃত্যুবরণকারীদের তালিকাভুক্ত হয়ে আছে।

    হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) ফরমান, দুনিয়ার ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর নামে মুসলমানদের জন্যে দু’টি ঈদ রয়েছে, তেমনি উর্ধ্বাকাশসমূহে ফেরেশতাগণের জন্যেও দু’টি ঈদ রজনী রয়েছে। এর একটি হচ্ছে শবেকদর, অপরটি শবেবরাত। মুমিন বান্দাদের জন্যে ঈদ-উৎসব দিনে থাকে। আর ফেরেশতাদের ঈদ-উৎসব নির্ধারণ করা হয়েছে রাতে। কেননা মানুষ নিন্দ্রা যায় পক্ষান্তরে ফেরেশতাদের কোনো নিন্দ্রা নেই।

    এ রজনীতে আল্লাহতায়ালা কিছুসংখ্যক মানুষ ছাড়া সমস্ত ঈমানদার ব্যক্তির গুনাহ্ ক্ষমা করেন। পরিপূর্ণ তওবা ব্যতীত এ রাতে যাদের গুনাহ মাফ করা হবে না তারা হলো ঃ ১. মুশরিক ২. হিংসুক ৩. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান ৪. পায়ের নিচের গিরা ঢেকে কাপড় পরিধানকারী ৫. মদ্যপানকারী ৬. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ৭. যাদুকর ৮. গণক-ঠাকুর ৯. হস্তরেখা দেখে ভাগ্য নির্ণয়কারী ১০. গায়েবের সংবাদদাতা ১১. অন্যায়ভাবে ট্যাক্স আদায়কারী ১২. জালিম সৈনিক ১৩. ঢোল, তবলা হারমোনিয়াম ইত্যাদি বাদক ১৪. গায়ক-গায়িকা, বিদআতী ১৫. জুয়াখেলায় অভ্যস্ত ব্যক্তি।

    সূত্র : www.ekushey-tv.com

    আপনি উত্তর বা আরো দেখতে চান?
    Mohammed 19 day ago
    4

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    উত্তর দিতে ক্লিক করুন