if you want to remove an article from website contact us from top.

    শাবান মাসের করণীয় ও বর্জনীয়

    Mohammed

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    এই সাইট থেকে শাবান মাসের করণীয় ও বর্জনীয় পান।

    শা‘বান মাসের করণীয় বর্জনীয় – দারসে মানসূর

    শা‘বান মাসের করণীয় বর্জনীয়

    লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.শা‘বান মাসের করণীয় বর্জনীয়

    শবে বারা‘আতের কারনে শা‘বানের মাসের গুরত্ব আমাদের নিকট অনেক বেশী। অনেকে এই ব্যাপারে একবারেই উদাসীন আর কিছু লোক এই আমলকে সামনে রেখে অনেক শরী‘আত বিরোধী কাজ করে। কুরআন ও হাদীসের আলোকে এর যথার্থ বিশ্লেষণ নিন্মে দেয়া হলোঃ

    শরীআতের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআত

    লাইলাতুল বারা‘আতের ফযীলত নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সম্মিলিত কোন রূপ না দিয়ে এবং এ রাত উদযাপনের বিশেষ কোন পন্থা উদ্ভাবন না করে শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী বেশী বেশী ইবাদত করাও নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত দ্বারা প্রমাণিত। এখানে লাইলাতুল বারা‘আতের ফযীলত ও করণীয় বিষয়ের কিছু হাদীস যথাযথ উদ্ধৃতি ও সনদের নির্ভরযোগ্যতা সহ উল্লেখ করা হলো।

    প্রথম হাদীস

    হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল রাযি. বলেন. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন আল্লাহ তা‘আলা ১৫ই শা‘বানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান-৫৬৬৫, সিলসিলাতুল আহাদীছিস সহীহাহ-৩/৩১৫)

    দ্বিতীয় হাদীস

    হযরত আ‘লা ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলী নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলী নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন, তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা/হুমাইরা! তোমার কি এ আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না; ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা? নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন. তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। রাসূল তখন ইরশাদ করলেন, এটা অর্ধ শা‘বানের রাত। আল্লাহ তা‘আলা এ রাতে বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করেন ও অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষপোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। (শু‘আবুল ঈমান-হাদীস নং- ৩৬৩৫)

    তৃতীয় হাদীস

    একদা হযরত আয়েশা রাযি. হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে না পেয়ে খুঁজতে বের হলেন। তাকে জান্নাতুল বাকীতে পেলেন- তখন হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ১৪ই শা‘বান দিবাগত রাতে আল্লাহ তা‘আলা প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং ‘বনূ কালব’ গোত্রের পালিত ছাগল পালের শরীরের পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে দেন। (তিরমিযী শরীফ-হাঃ নং ৭৩৯, ইবনে মাযাহ- হাঃ নং ১৩৮৫)

    চতুর্থ হাদীস

    হযরত আলী ইবনে আবী তালেব রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন অর্ধ শা‘বানের রাত যখন আসে তখন তোমরা এ রাত্রি ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোযা রাখ। কেননা এ রাতের সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তা‘আলা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমা প্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোন রিযিক প্রার্থী? আমি তাকে রিযিক দিব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাকে ডাকতে থাকেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-১৩৮৪, শু’আবুল ঈমান-৩৮২৩-২২)

    মাত্র কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করা হলো। আরো বহু হাদীস কিতাবে বর্ণিত আছে। উল্লেখিত হাদীস সমূহের সনদ বিষয়ক আলোচনাঃ

    ১ম হাদীসের সনদ সহীহ, এ জন্য ইমাম ইবনে হিব্বান একে কিতাবুস সহীহ-এ বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুনযিরী, ইবনে রজব, কাস্তাল্লানী, যুরকাবী, নুরুদ্দীন হাইসামী এবং অন্যান্য হাদীস বিশারদ এ হাদীসটিকে আমলযোগ্য সহীহ বলেছেন। (দেখুন! তারগীব তারহীব ২/১১৮, ৩/৪৫৯ লাত্বাইফুল মা‘আরিফ ১৫১-৩, মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ৮/৬৫, শারহুল সাওয়াহিব-১০/৫৬১)

    বর্তমানে আহলে হাদীস ভাইদের প্রসিদ্ধ শাইখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রহ. সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ ৩/১৩৫-১৩৯-এ এই হাদীসের সমর্থনে আরো আটটি হাদীস উল্লেখ করার পর লেখেন, ‘এ সব রেওয়ায়েতের মাধ্যমে এ হাদীসটি নিঃসন্দেহে সহীহ প্রমাণিত হয়।’ এরপর শাইখ আলবানী রহ. ঐ সব লোকের বক্তব্য খণ্ডন করেন, যারা কোনধরনের খোঁজ-খবর ছাড়াই বলে দেন যে লাইলাতুল বরা‘আতের ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস নেই। তদ্রূপ শাইখ আব্দুর রহমান মুবারকপূরী তুহফাতুল আহওয়াজী -২/৫৩-এ লাইলাতুল বারা‘আতের হাদীসকে আমলযোগ্য প্রমাণিত করেন।

    ২য় হাদীসটি ইমাম বাইহাকী রহ. বর্ণনা করার পর সনদের ব্যাপারে বলেছেন, ‘মুরসালুন জায়্যিদুন’ অর্থাৎ, আমলযোগ্য। ৩য় হাদীসটি আমলের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। সকল রাবী সিক্কাত, সনদের মধ্যে ইনক্বিতা থাকায় ইমাম বুখারী রহ. যয়ীফ বলেছেন। (দেখুন! সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ-৩/৩১৮)

    ৪র্থ হাদীসটির সনদ যয়ীফ কিন্তু মুহাদ্দিসীনে কিরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হলো- ফাযায়েলের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদীস গ্রহণযোগ্য। দেখুন! (কিতাবুল আযকার-৭, ফাতহুল কাদীর-১/৪৬৭, আল আজবিবাতুল ফাযেলাহ-৫৭)

    ফুক্বাহায়ে কেরামের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআতফিক্বহে হানাফী

    আল্লামা শামী, ইবনে নুজাইম, আল্লামা শরমবুলালী, শাইখ আব্দুল হক দেহলভী, হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী, মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষনৌভী, মুফতী মুহাম্মদ শফী সাহেব রহ. সহ প্রমুখ উলামায়ে কেরামের মতে লাইলাতুল বারা‘আতে শক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী জাগ্রত থেকে একাকীভাবে ইবাদত করা মুস্তাহাব, তবে জমায়েত হয়ে নয়। (আদ দুররুল মুখতার-২/২৪-২৫, আল বাহরুর রায়িক-২/৫২, মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ-৩৬, মারাক্কিল ফালাহ-২১৯, জাওয়ালুস সিনাহ-১৭, লাইলাতুল বরা‘আতের হাক্বীক্বত- শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তাক্বী উসমানী)

    ফিক্বহে শাফেয়ী

    ইমাম শাফী রহ.-এর মতেও শা‘বানের ১৫তম রাতে অধিক অধিক দু‘আ কবূল হয়ে থাকে।  (কিতাবুল উম্ম-১/২৩১)

    ফিক্বহে হাম্বলী

    শাইখ ইবনে মুফলিহ হাম্বলী, আল্লামা মানসূর আল বাহুতী এবং ইবনে রজব হাম্বলী রহ. সহ প্রমূখ উলামায়ে কিরামের নিকট লাইলাতুল বারা‘আতে ইবাদাত করা মুস্তাহাব। (দেখুন! আল মাবদা-২/২৭, কাশশাফুল কিনা-১/৪৪৫, লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ-১৫১-৬০)

    ফিক্বহে মালিকী

    ইবনুল হাজ্জ্ব মালিকী রহ. বলেন সলফে সালিহীন তথা পূর্বযুগের আউলিয়াগণ এ রাতকে যথেষ্ট সম্মান করতেন এবং এর জন্য পূর্ব থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। (আল মাদখাল-১/২৯২-৯৩)

    সূত্র : www.darsemansoor.com

    মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয়

    মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয় হিজরী সনের ৮ম মাস হচ্ছে শাবান মাস। তার পরই আসে বছরের শ্রেষ্ঠ রামাযান মাস। সে হিসেবে মুসলিমের জীবনে এ মাসের যথেষ্ঠ গুরুত্ব রয়েছে। দীর্ঘ টানা একমাস তাকে সিয়াম সাধনা করতে করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন মানসিক, শারিরিক ও আর্থিক প্রস্তুতি। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানে…

    মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয়

    মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয় মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয়

    হিজরী সনের ৮ম মাস হচ্ছে শাবান মাস। তার পরই আসে বছরের শ্রেষ্ঠ রামাযান মাস। সে হিসেবে মুসলিমের জীবনে এ মাসের যথেষ্ঠ গুরুত্ব রয়েছে। দীর্ঘ টানা একমাস তাকে সিয়াম সাধনা করতে করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন মানসিক, শারিরিক ও আর্থিক প্রস্তুতি। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানে প্রস্তুতি স্বরূপ অন্য মাসের তুলনায় শাবান মাসে বেশী বেশী নফল রোযা রাখতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ

    فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلاَّ رَمَضَانَ ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِى شَعْبَانَ

    আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রামাযন ব্যতীত অন্য কোন পূর্ণ মাসে রোযা রাখতে দেখে নি। আর তাঁকে আমি শাবান মাসের চেয়ে অধিক রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখি নি। (বুখারী) সুতরাং শাবান মাসে আমরাও রাসূলের সুন্নাত অনুযায়ী বেশী বেশী করে রাখবো এবং আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে দুআ করবো, তিনি যেন আমাদেরকে রামাযান পর্যন্ত হায়াত দান করেন এবং রামাযানের ফজীলত ও বরকত হাসিল করার তাওফীক দেন।

    কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই শাবান মাস সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে প্রচলিত আছে সমাজের বিরাট এক অংশে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে কিয়াম করা তথা নফল নামায পড়া এবং পরের দিন ছিয়াম পালন করার চিরাচরিত নিয়ম। যদিও রাসূল (সাঃ) থেকে এই রাতের নফল নামায এবং দিনের বেলা রোযা রাখার ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীছ পাওয়া যায়না। এরাতকে আমাদের দেশের পরিভাষায় শবে বরাত বলা হয়ে থাকে। এ রাত সম্পর্কে মানুষের বিদআতী ধারণা এবং এরাতে মানুষ যেসমস্ত বিদআতী আমল করে তার বিস্তারিত বিবরণ প্রয়োজন। নিম্মে তার কিছু বিবরণ পেশ করা হলঃ

    শবে বরাতে কুরআন নাযিল হয়েছে বলে ধারণাঃ

    শবে বরাত পালনকারীদের বক্তব্য হল, শবে বরাতের রাতেই কুরআন নাযিল হয়েছে। সূরা দুখানের ৩নং আয়াতকে তারা দলীল হিসাবে পেশ করে থাকে। আল্লাহ বলেন,

    إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِىْ لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ

    “আমি কুরআনুল কারীমকে একটি বরকতপূর্ণ রাতে অবতীর্ণ করেছি। এবরকতপূর্ণ রাতই হল শবে বরাতের রাত। কতিপয় আলেম এভাবেই অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা করেছেন।

    তাদের এব্যাখ্যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এখানে বরকতপূর্ণ রাত বলতে লাইলাতুল ক্বদর উদ্দেশ্য। আল্লামা ইবনে কাছীর (রঃ) বলেন, অত্র বরকতপূর্ণ রাতই হল লাইলাতুল ক্বদর বা ক্বদরের রাত। যেমন অন্যত্র সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে। কুরআনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য কথা হল, কুরআনের কোন অস্পষ্ট আয়াতের ব্যাখ্যা যদি অন্য কোন আয়াতে সুস্পষ্টভাবে পাওয়া যায়, তাহলে কুরআনের ব্যাখ্যাই গ্রহণ করতে হবে। আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ সূরা কদরের শুরুতে বলেন,

    إِنَّ أَنْزَلْنَاهُ فِى لَيْلَةِ الْقَدْرِ

    “আমি কুরআনকে ক্বদরের রাতে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা কদরঃ ১) আর এ কথা সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত যে, লাইলাতুল ক্বদর রামাযান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে নয়। এমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা রামাযান মাসে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করে সূরা বাকারায় বলেন,

    شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِى أُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْآنُ

    “রামাযান মাস এমন একটি মাস, যাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। (সূরা বাকারাঃ ১৮৫) সুতরাং শবে বরাতে কুরআন নাযিল হওয়ার কথা গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।

    শবে বরাতের রাতে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসার ধারণাঃ

    শবে বরাতের ইবাদতের পক্ষের আলেমগণ বলে থাকে, এরাতের শেষের দিকে আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং ক্বলব গোত্রের বকরীগুলোর লোম সংখ্যার চেয়ে অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ ক্ষমা করে থাকেন।

    উপরোক্ত অর্থ বহনকারী হাদীছটি কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সকল বর্ণনাই যঈফ বা দূর্বল। দেখুনঃ ইমাম আলবানীর তাহ্কীকসহ মিশকাত (১/২৮৯) হাদীছ নং- ১২৯৯। ইমাম তিরিমিযী বলেনঃ আমি আমার উস্তাদ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারীকে বলতে শুনেছি যে, এই হাদীছটি যঈফ। দেখুন তিরমিযী (২/২৫৯) হাদীছ নং- ৭৪৪। নির্দিষ্টভাবে এরাতে আল্লাহর দুনিয়ার আকাশে নেমে আসার এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা চাওয়ার প্রতি আহবান জানানোর হাদীছটি সুনানের কিতাবে যঈফ ও জাল সনদে বর্ণিত হয়েছে।

    তাছাড়া হাদীছটি বুখারীসহ অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত সহীহ হাদীছের বিরোধী। সহীহ হাদীছের বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেনঃ কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি ক্ষমা করে দিব। অমুক আছে কি? অমুক আছে কি? এভাবে প্রতি রাতেই ঘোষণা করতে থাকেন। দেখুন বুখারী, হাদীছ নং- ১০৯৪, মুসলিম, হাদীছ নং- ১৬৮।

    সুতরাং জাল হাদীছের উপর ভিত্তি করে সহীহ হাদীছের মর্ম প্রত্যাখ্যান করে শবে বরাতের রাতে আল্লাহ্ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসার আকীদা পোষণ করা এবং সে রাতে বিশেষ ইবাদত করা সম্পূর্ণ বিদআত।

    মৃত ব্যক্তির রূহ দুনিয়াতে আগমণের বিশ্বাসঃ

    শবে বরাত পালনের পিছনে যুক্তি হল, এরাতে মানুষের মৃত আত্মীয়দের রূহসমূহ দুনিয়াতে আগমণ করে স্ব স্ব আত্মীয়দের সাথে সাক্ষাৎ করে। এটি একটি অবান্তর ধারণা, যা কুরআন-সুন্নার সুস্পষ্ট বিরোধী। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

    وَ مِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمٍ يُبْعَثُوْنَ

    “ওদের (মৃতদের) পিছনে রয়েছে অন্তরায়, তারা সেখানে কিয়ামত দিবস অবদি অবস্থান করবে। (সূরা মুমেনূনঃ ১০০)

    এরাত্রে মানুষের ভাগ্য লিখা হয় বলে ধারণাঃ

    তাদের এধারণাটিও ঠিক নয়। এ কথার পিছনে কুরআন হাদীছের কোন দলীল নেই। সহীহ হাদীছে রাসূল (সাঃ) বলেছেন,

    كَتَبَ اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلَائِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ

    “আসমান-জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা স্বীয় মাখলুকের তাকদীর লিখে রেখেছেন। (সহীহ মুসলিম)

    হালুওয়া রুটির রহস্যঃ

    তাদের বক্তব্য হচ্ছে শবে বরাতের দিন ওহুদ যুদ্ধে নবী (সাঃ) এর দাঁত মোবারক শহীদ হয়েছিল। তাই নবী (সাঃ) শক্ত খাবার খেতে না পারায় নরম খাদ্য হিসাবে হালুওয়া-রুটি খেয়েছিলেন। তাই আমরাও নবীর দাঁত ভাঙ্গার ব্যথায় সমবেদনা প্রকাশ করে হালুওয়া-রুটি খেয়ে থাকি। এটি একটি কাল্পনিক কথা। কারণ ওহুদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তৃতীয় হিজরীর শাওয়াল মাসে, শাবান মাসে নয়।

    সূত্র : alheraralo.wordpress.com

    শাবান মাসের গুরুত্ব ও করণীয়

    হিজরি বর্ষপঞ্জির অষ্টম মাসের নাম শাবান। মাসটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মাসটির নামকরণের প্রতি লক্ষ করলেই এর গুরুত্বের বিষয়টি বোঝা যায়। ‘শাবান’ আরবি শব্দটির অর্থ ছড়িয়ে পড়া। বস্তুত শাবান মাসের আগের মাস, অর্থাৎ রজব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ বা হারাম হওয়ার কারণে আরবদের ওই সময়ে ঘরে বসে সময় কাটাতে হতো। আর শাবান মাসের পরের মাস রমজান ছিল প্রচণ্ড গরমের মৌসুম। বিধায় প্রকৃতির রুক্ষতার কারণে

    ছবি @=img=@#=img=#

    আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘মুক্ত করো ভয়’

    @=img=@#=img=#

    ভাষাশহীদদের প্রতি জনতার শ্রদ্ধা

    @=img=@#=img=#

    তারকাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদের

    রাজধানীর লালবাগে সড়কে দুর্ভোগ

    পূজা উৎসবে ওবায়দুল কাদের

    একুশে বইমেলার প্রস্তুতি

    বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু

    রাজধানীতে শীতের প্রকোপ

    মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী

    স্বপ্নের মেট্রোরেলের যুগে বাংলাদেশ

    ভিডিও

    আপনার জিজ্ঞাসা : অতিথি ড. মুহম্মদ সাইফুল্লাহ, পর্ব ২৯৯৩

    মা বাবা ভাই বোন : পর্ব ১৭৯

    কোরআন অন্বেষা, পর্ব ১৩৩

    একক নাটক : ইতি তোমার মেয়ে

    এক্সপার্ট টুডে'স কিচেন : পর্ব ১৮৯

    আমরা আমরাই : পর্ব ১৩

    রূপকথার রাত : (সরাসরি) পর্ব ১২০

    কনকা সেরা পরিবার : পর্ব ১০

    ছুটির দিনের গান : পর্ব ৩০৪

    গানের বাজার : পর্ব ১২৬

    আরও খবর

    আপনার জিজ্ঞাসা: কারও জন্য দোয়া করলে জানিয়ে করা জায়েজ কি?

    আপনার জিজ্ঞাসা : টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা জায়েজ? 

    আপনার জিজ্ঞাসা: বিপদগামী বন্ধুর ভালোর জন্য কোনো আমল আছে কি?

    আপনার জিজ্ঞাসা: অহংকার প্রকাশ করলে কেমন শাস্তি হবে?

    আপনার জিজ্ঞাসা: বিলাপ করে কান্না করলে কি মৃত ব্যক্তির শাস্তি হবে?

    শাবান মাসের গুরুত্ব ও করণীয়

    মোহাম্মদ মাকছুদ উল্লাহ

    ১১:১০, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

    Share to Facebook Share to Twitter Share to Pinterest Share to LinkedIn Share to Gmail Share to More @=img=@#=img=#

    হিজরি বর্ষপঞ্জির অষ্টম মাসের নাম শাবান। মাসটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মাসটির নামকরণের প্রতি লক্ষ করলেই এর গুরুত্বের বিষয়টি বোঝা যায়। ‘শাবান’ আরবি শব্দটির অর্থ ছড়িয়ে পড়া। বস্তুত শাবান মাসের আগের মাস, অর্থাৎ রজব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ বা হারাম হওয়ার কারণে আরবদের ওই সময়ে ঘরে বসে সময় কাটাতে হতো। আর শাবান মাসের পরের মাস রমজান ছিল প্রচণ্ড গরমের মৌসুম। বিধায় প্রকৃতির রুক্ষতার কারণে রমজানেও তারা ঘর থেকে বের হতে পারত না। মাঝখানের এই মাসটিই ছিল তাদের জন্য জীবিকা উপার্জনের মোক্ষম সময়। তাই তারা এই সময়ে জীবিকার সন্ধানে এই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ত।

    সুতরাং মাসটির নামকরণ করা হয়েছে শাবান। জীবন ও জীবিকার জন্য আরবদের কাছে শাবান মাসটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, ধর্মীয় দিক দিয়ে মুসলিম সমাজের কাছে তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর অতীব গুরুত্বের কারণেই রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবানকে নিজের মাস বলে অভিহিত করেছেন। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছে। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রজব হলো আল্লাহর মাস। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর মাস রজবকে সম্মান করল, সে আল্লাহর বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল। আর যে আল্লাহর বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতুন নাঈমে প্রবেশ করাবেন। আর শাবান হলো আমার মাস। আর যে ব্যক্তি শাবান মাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল সে আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল। আর যে আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, কিয়ামতের দিন আমি হব তার অগ্রবর্তী এবং নেকির ভাণ্ডর। আর রমজান মাস হলো আমার উম্মতের মাস। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৫৩২)

    বস্তুত মাহে রমজানের প্রস্তুতির মাস হিসেবে শাবান মাসের ফজিলত অনেক বেশি এবং সে উদ্দেশ্যে শাবান মাসে মুমিন মুসলমানের জন্য বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। বিশেষ করে ‘শবেবরাত’ মাসটিকে বিশেষ মহিমায় মহিমান্বিত করেছে। মহিমান্বিত এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহান সুয়োগ এনে দেয়। ওই রাতে মুমিন বান্দা তার জীবনের গুনাহ থেকে পরিত্রাণ লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ লাভ করে। একটি বছরের দীর্ঘ পরিক্রমা অতিক্রম করে আসা মাহে রমজানে নিরবচ্ছিন্ন ইবাদতকে গতিশীল করতে এবং স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে শাবান মাসে যে সমস্ত করণীয় রয়েছে সেগুলো হলো :- (১) দিন গণনা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের (প্রস্তুতির উদ্দেশ্যে) শাবানের দিনগুলো গণনা করতে থাকো। (মুসান্নেফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৩০৩, সুনানে তিরমিযি, হাদিস : ৬৭৮, আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৮২৪২)। (২) বেশি বেশি করে নফল রোজা রাখা : রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় বেশি নফল রোজা রাখতেন। হজরত আয়েশা (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে পুরো মাস রোজা রাখতে দেখিনি এবং আমি তাঁকে শাবান মাসের মতো এত অধিক নফল রোজা অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। (সহিহ আল-বোখারি, হাদিস : ১৯৬৯, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৫৬, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৩৪, সুনানে তিরমিযি, হাদিস : ৭৩৬)। (৩) নামাজ, রোজা, জিকির, তিলাওয়াতসহ বেশি বেশি নফল ইবাদত করা। যেন মাহে রমজানের আমলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয় এবং গতিশীলতা হারিয়ে না যায়। (৪) স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ করে লক্ষ রাখা। যেন সুস্থ থেকে স্বাভাবিকভাবে গোটা মাহে রমজানের যাবতীয় আমল পালন করা যায়। (৫) শাবান মাসের ১৫ তারিখের পরে আর বেশি নফল রোজা না রাখা। হজরত কাতাদাহ (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজান মাস ও শাবান মাসের মাঝে এক বা দুই দিনের ব্যবধান বজায় রাখো (রোজা রাখা বর্জন করে)। ( মুসান্নেফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৩১৬)। (৬) নফল সাদাকাহ করা : শাবান মাসে বেশি বেশি দান-খায়রাত করা। যাতে সমাজের দরিদ্র শ্রেণির মুসলমানরা প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সংগ্রহ করে মাহে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। (৭) বেশি বেশি দোয়া করা : মহান আল্লাহর দরবারে রমজান মাসপ্রাপ্তির জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রজব মাস আরম্ভ হলেই রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করতেন, হে আল্লাহ। আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করো এবং রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের পোঁছে দাও। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৪৭, মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ৬৪৯৬, আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৩৯৩৯)

    লেখক : পেশ ইমাম, রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদ।

    Share to Facebook Share to Messenger Share to LinkedIn Share to WhatsApp Share to Gmail Share to More

    পাঠকের পছন্দ

    দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ৫ খাবার

    সূত্র : www.ntvbd.com

    আপনি উত্তর বা আরো দেখতে চান?
    Mohammed 27 day ago
    4

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    উত্তর দিতে ক্লিক করুন