if you want to remove an article from website contact us from top.

    স্বাধীনতা এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো

    Mohammed

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    এই সাইট থেকে স্বাধীনতা এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো পান।

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হল

    […]

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হল-নির্মলেন্দু গুণ

    সোনেলা রোদ্দুর ৭ মার্চ ২০১৪, শুক্রবার, ০১:৩৮:০৩পূর্বাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ ১৩ মন্তব্য

    একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

    লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

    ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

    এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

    এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

    এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷

    তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?

    তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে

    ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

    জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

    কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ

    কবির বিরুদ্ধে কবি, মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,

    বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,

    উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,

    মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷

    হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,

    শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

    একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

    লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷

    সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷

    না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,

    শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত

    ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷

    আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল

    এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷

    কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে

    এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

    লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,

    পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷

    হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,

    নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে

    আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷

    একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

    প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

    শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,

    রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

    অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷

    তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

    হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

    সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?

    গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:

    ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

    এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’

    সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷

    কবিতাটির আবৃত্তি শুনুন এই লিংক এপটভূমি: ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে আনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ৩১০ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকার গঠনে মত দিতে অস্বীকার করেন। জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ১ মার্চ দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। এর পর থেকেই স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। তখন জাতির জন্য দরকার ছিল একটি ঘোষণার, একটি আহ্বানের। অবশেষে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এল সেই ঘোষণা। নেতার এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। মুক্তিকামী বাঙালি নেয় চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্খিত মুক্তির লক্ষ্যে।

    শুধুমাত্র অদম্য মনোবলকে সম্বল করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে নিরস্ত্র বাঙালী মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তানের আধুনিক সমরসজ্জিত, প্রশিতি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। মৃত্যুপণ লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুঃসাহসে দীপ্ত মুক্তিকামী বাঙালী একাত্তরের মাত্র ন’ মাসে প্রবল পরাক্রমশালী পাক হানাদারদের পরাস্ত-পর্যুদস্ত করে ছিনিয়ে এনেছিল মহামূল্যবান স্বাধীনতা। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ, দুঃসাহসিকতা আর আড়াই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাঙালী অর্জন করে নিজস্ব মানচিত্র, লাল-সবুজের পতাকা।

    বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতাই নন, একটি ইতিহাস। নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে স্মরণ করে বলেছিলেন, আমার প্রায়ই মনে হয়, বঙ্গবন্ধু যদি আরও কিছুটা সময় পেতেন, যদি তিনি তাঁর জীবনীর কিছুটা হলেও লিখে যেতে পারতেন, তাহলে তা আমাদের জন্য একটা বিরাট সম্পদ হতে পারত। শুধু আমাদের জন্যই বা বলি কেন? সাম্রাজ্যবাদবিরোধী তৃতীয় বিশ্বের আপোসহীন নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী হতে পারত বিশ্বের মুক্তিকামী সকল মানুষের পাঠ্য। আমার খুব দুঃখ হয় এই ভেবে যে, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, ফিদেল কাস্ত্রো, হোচিমিন বা নেলসন মেন্ডেলার সমগোত্রীয় এই মহান নেতার মহাজীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই আমাদের অজানা রয়ে গেল।’

    ৪০৭৯৮জন ৩৯৮৮৪জন Share 104 104 SHARES

    ১৩টি মন্তব্য

    আদিব আদ্‌নান

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ৬:২০ পূর্বাহ্ন

    আগে না শোনা আবৃত্তিটি শুনে ভাল লাগল ।

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    সাতকাহন

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ন

    ধন্যবাদ লীলাবতী, কেউ একজন এই কবিতাটি পোস্ট না করলে আমিই করতাম। ভালো লাগলো, আপনি পোস্ট করেছেন দেখে।

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    নীহারিকা

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

    খুব ভালো একটি পোস্ট। কিছু কিছু অজানাকে জানলাম। ধন্যবাদ।

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    শুন্য শুন্যালয়

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ২:২৬ অপরাহ্ন

    ৭ ই মার্চের এই ভাষন শুনলেই আমার গায়ের লোমকূপ খাড়া হয়ে যায়, যারা সেদিন নিজে উপস্থিত ছিলেন, তাদের কথা ভাবি…

    অসাধারন এই কবিতার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ লীলাবতী দি…

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    বনলতা সেন

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ৩:৩০ অপরাহ্ন

    বারবার শুনব , শুনতেই হয় ।

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    প্রিন্স মাহমুদ

    মার্চ ৭, ২০১৪ at ৭:৪৭ অপরাহ্ন

    প্রিয় কবিতা -{@

    জবাব দেবার জন্য প্রবেশ করুন

    সূত্র : www.sonelablog.com

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবি- নির্মলেন্দু গুণ কটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর

    Skip to content

    Latest:

    তুই কি আমার দুঃখ হবি? – আনিসুল হক

    তখন সত্যি মানুষ ছিলাম – আসাদ চৌধুরী

    কবি-রাণী – কাজী নজরুল ইসলাম

    আলাপ – জসীম উদ্দীন

    বঙ্গ-বন্ধু – জসীম উদ্দীন

    কবি ও কবিতা

    বাংলা সাহিত্যের নির্বাচিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, কবি – লেখকদের জীবনী নিয়ে ব্লগটি সাজানো হয়েছে।

    কবিতা ছোটদের কবিতা দেশাত্মবোধক কবিতা বিদ্রোহী কবিতা

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো – নির্মলেন্দু গুণ

    28/11/2020 Admin নির্মলেন্দু গুণ

    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

    কবি- নির্মলেন্দু গুণ

    একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

    লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

    ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

    এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

    এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

    এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷

    তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?

    তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে

    ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

    জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

    কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ

    কবির বিরুদ্ধে কবি, মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,

    বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,

    উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,

    মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷

    হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,

    শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

    একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

    লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷

    সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷

    না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,

    শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত

    ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷

    আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল

    এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷

    কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে

    এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

    লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,

    পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷

    হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,

    নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে

    আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷

    একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

    প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

    শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,

    রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

    অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷

    তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

    হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

    সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?

    গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:

    ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

    এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’

    সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷

    কবিতাটির আবৃত্তি শুনুন

    আরও দেশাত্মবোধক কবিতা পড়তে ক্লিক করুন।

    আমাদের Youtube চানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।

    পোস্টটি শেয়ার করুন

    ← অসমাপ্ত কবিতা – নির্মলেন্দু গুণ

    আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় বৃদ্ধির আবেদন ফরম। →

    আরও পড়ুন-

    আযান – কায়কোবাদ

    19/11/2011

    স্বাধীনতার সুখ – রজনীকান্ত সেন

    19/11/2011

    গ্রীষ্মের দুপুরে – ফজলুর রহমান

    25/06/2019

    সূত্র : banglakobita.com.bd

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতার ব্যাখ্যা!

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো ? এটি নির্মলেন্দু গুণের লেখা একটি কবিতা । এখানে তিনি স্বাধীনতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং...

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতার ব্যাখ্যা!

    December 18, 2022 by istiak

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো ? এটি নির্মলেন্দু গুণের লেখা একটি কবিতা । এখানে তিনি স্বাধীনতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং স্বাধীনতার সময়কার মানুষের আত্মত্যাগ এর কথা তুলে ধরেছেন ।

    আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো শীর্ষক কবিতাটি সম্পর্কে । এই কবিতাটি সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব যেন পরীক্ষায় কোন ধরনের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই দেওয়া যায়, কেননা এতে করে যেন আমাদের পাঠক শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারে ।

    শুরুতেই জেনে নিন  স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো শীর্ষক কবিতার কবি নির্মলেন্দু গুণ এর জীবনী সম্পর্কেঃ

    সূচীপত্র

    কবি নির্মলেন্দু গুণ 

    কবি নির্মলেন্দু গুণ ১৯৪৫ সালে ২১ জুন নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই প্রকাশের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন এবং তার জীবনে স্বাধীনতা ভিত্তিক প্রচুর পরিমাণে কবিতা এবং প্রবন্ধ রচনা করেছে ।

    পেশা জীবনে তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন । যদিও কবি নির্মলেন্দু গুণের বাবা চেয়েছিলেন তার সন্তান একজন আদর্শ ডাক্তার হিসেবে গড়ে উঠবে তবে ডাক্তারি পেশা কবি নির্মলেন্দু গুণের একদমই অপছন্দ ছিল। যদিও তিনি পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তবে সেই সময় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার কারণে তিনি ভর্তি হতে ব্যর্থ হন এবং তার দেশের বাড়ি ফিরে আসেন । তুখোর মেধাবী শিক্ষার্থী ম্যাক্সিকুলার এবং ইন্টারে দেশের মধ্যে অন্যতম একটি ফলাফল করলেও তিনি স্নাতকে ভর্তি হতে পারেননি যে তার জীবনের অন্যতম একটি ব্যর্থ বলে বিবেচিত ।

    মূল কবিতা-

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো

    একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

    লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

    ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

    এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

    এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

    এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷

    তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?

    তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে

    ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

    জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

    কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ

    কবির বিরুদ্ধে কবি, মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,

    বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,

    উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,

    মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷

    হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,

    শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

    একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

    লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷

    সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷

    না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,

    শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত

    ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷

    আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল

    এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷

    কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে

    এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

    লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,

    পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷

    হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,

    নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে

    আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷

    একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

    প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

    শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,

    রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

    অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷

    তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

    হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

    সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?

    গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:

    ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

    এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’

    সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷

    “স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো” সম্পর্কে বিস্তারিত- 

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতাটি কোথা থেকে সংকলিত? 

    স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতাটি সংকলন করা হয়েছে নির্মলেন্দু গুণ এর অন্যতম কাব্যগ্রন্থ  চাষাভূষার কাব্য থেকে। এটি মূলত কবি নির্মলেন্দু গুণের লেখা একটি কবিতা যেটি সমসাময়িক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সমাজের সার্বিক অবস্থাকে তুলে ধরেছিল । মূলত কবি এখানে কবিতার মাধ্যমে তার মনের ভাব মুক্তভাবে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছে । এটি ১৯৮১ সালে সবুজপাতা প্রকাশনীতে প্রকাশ করা হয়েছিল ।

    যদিও সেই সময় কবি নির্মলেন্দু গুণের ওপর বিভিন্ন ধরনের সামাজিক চাপ প্রদান করা হয়েছিল তবে কবি নির্মলেন্দু গুণ এগুলো কোন কিছু তোয়াক্কা না করে নিজের মত তার সাহিত্য কর্ম চালিয়ে গিয়েছেন।

    স্বাধীনতা এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতায় কোন কবির কথা বলা হয়েছে?

    স্বাধীনতা এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতায় যে কবির কথা বলা হয়েছে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । মূলত এই কবিতার শেষ অংশে তাকে নিয়ে ভাব অবতারণা ঘটেছে ।

    এবং কবিতা বলতে বোঝানো হয়েছে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ভাষণকে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অধিকাংশ সাহিত্যিকদের কাছেই একটি অত্যন্ত ভালবাসার নাম । তবে কবি নির্মলেন্দু গুণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশেষ ভাবে উপস্থাপন করেছিলেন তাঁর কবিতা এবং লেখায় ।

    শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প বলতে কি বোঝানো হয়েছে?

    শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প বলতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত স্বাধীনতার ভাষণ কে বোঝানো হয়েছে।১৯৭১ সালের সেই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেলা ৩ ঘটিকায়, 18 মিনিটের একটি বক্তব্য উপস্থাপন করেন । এখানে তিনি তৎকালীন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে মোট চারটি দাবি তুলে ধরেন । যে দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল

    সূত্র : niyoti.com

    আপনি উত্তর বা আরো দেখতে চান?
    Mohammed 19 day ago
    4

    বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?

    উত্তর দিতে ক্লিক করুন