১১ মার্চ কি দিবস
Mohammed
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?
এই সাইট থেকে ১১ মার্চ কি দিবস পান।
১১ মার্চ
১১ মার্চ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
<< মার্চ >>রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
২০২৩১১ মার্চ গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ৭০তম (অধিবর্ষে ৭১তম) দিন। বছর শেষ হতে আরো ২৯৫ দিন বাকি রয়েছে।ঘটনাবলী[সম্পাদনা]
১৩৯৯ - তৈমুর লঙ সিন্ধুনদ অতিক্রম করে ভারতে আসেন।
১৫০২ - পার্সিয়ার শাহ প্রথম ইসমাইলের অভিষেক হয় ।
১৭০২ - প্রথম ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা দ্য কোরান্ট প্রকাশিত হয় ।
১৭৮৪ - মহিশুরে টিপু সুলতানের সাথে ইংরেজদের শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত।
১৭৯৫ - কুর্দলার যুদ্ধে মারাঠাদের কাছে মোগল বাহিনী পরাজিত হয়।
১৮১২ - মার্শাম্যানের কলকাতার ছাপাখানা অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত হয়।
১৮২৩ - আমেরিকায় প্রথম সাধারণ স্কুল চালু হয়।
১৯১১ - রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তার পরলোকগত স্বামীর নামে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯১৭ - ব্রিটিশ বাহিনীর বাগদাদ দখল।
১৯১৮ - মস্কো বিপ্লবী রাশিয়ার রাজধানী হয় ।
১৯১৯ - ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত বাঙালি কৌতুক লেখক।
১৯২০ - আমির ফয়সলের নিজেকে সিরিয়ার রাজা ঘোষণা।
১৯৩৫ - ব্যাংক অব কানাডা চালু হয় ।
১৯৩৮ - জার্মান বাহিনী অস্ট্রিয়ায় অনুপ্রবেশ করে।
১৯৪০ - যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্রিটেনে মাংসের রেশন চালু হয়।
১৯৪৮ - পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা না দেয়ায় পূর্ব বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। পুলিশ ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
১৯৪৯ - বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ব বাংলায় রাষ্ট্রভাষা দিবস পালিত হয়।
১৯৪৯ - দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার (পরে বাংলাদেশ অবজারভার) প্রকাশিত হয়।
১৯৬৬ - ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুকর্নো সেনাবাহিনীর জেনারেল সুহার্তোর কাছে ব্যাপক ক্ষমতা অর্পণে বাধ্য হন। পরে সুকর্নোকে সরিয়ে সুহার্তো নিজেই প্রেসিডেন্ট হন।
১৯৭২ - বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গ্রিস।
১৯৭৪ - সিসিলির এটনা গিরিশৃঙ্গে অগ্নুৎপাত ঘটে।
১৯৭৭ - মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করায় ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার ২৫ বছরের সামরিক চুক্তি বাতিল করে।
১৯৭৯ - সেন্ট্রাল ট্রিটি অরগানাইজেশন বা সেন্টো থেকে ইরান নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়।
১৯৯০ - লিথুনিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৯৯২ - পাঞ্জাবে শিখ জঙ্গীদের হাতে ১৭ হিন্দু শ্রমিক নিহত।
১৯৯৪ - এদুয়ার্দো ফ্রেই চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত।
১৯৯৯ - “ইনফোসিস” প্রথম ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি হিসাবে নাসডাক স্টক মার্কেট অন্তর্ভুক্ত হয়।
২০০০ - ইউক্রেনে কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে ৮১ শ্রমিক নিহত।
২০০৪ - স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে তিনটি স্টেশনে ১০টি বোমা বিস্ফোরণে ১৯১ জন নিহত এবং দুই হাজারের বেশি আহত হয়।
২০০৬ - হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের কারাগারে বলকানের কসাই হিসেবে খ্যাত ৬৩ বছর বয়সী স্লোবোদান মিলোসেভিচ পরলোকগমন করেন।
২০১৫ - মার্কিন-কিউবা সরাসরি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত ৷
জন্ম[সম্পাদনা]
১৭৮৭ - রুশ জেনারেল আইজাক নবোকভ।
১৮০৭ - ফরাসী চিত্রশিল্পী লুই বুলাঝেঁ।
১৮৪০ - দার্শনিক, গণিতজ্ঞ ও বাংলা শর্টহ্যান্ড লিপির উদ্ভাবক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৯১৫ - বিজয় হাজারে, ভারতীয় ক্রিকেটার।
১৯১৮ - শিশুসাহিত্যিক ও আকাশবাণীর ঘোষিকা ইন্দিরা দেবী।(মৃ.১৯৯৫
১৯৩৭ - ভারতীয় বাঙালি মহিলা কবি বিজয়া মুখোপাধ্যায়।(মৃ.২০২০)
১৯৩৯ - সাহিত্যিক বাণী বসু।
মৃত্যু[সম্পাদনা]
১৭৫৯ - ইংরেজ জেনারেল জন ফোর্বস।
১৮০৯ - ইংরেজ নাট্যকার ও কবি হান্না কাউলি।
১৮৭৩- শের আলী, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতের ইংরেজ গভর্নর জেনারেল তথা বড়লাটকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
১৮৯৪ - রাজকৃষ্ণ রায় বিশিষ্ট নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক।(জ.২১/১০/১৮৪৯)
১৯১৯ - ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত বাঙালি কৌতুক লেখক।
১৯৩১ - জার্মান চিত্রপরিচালক ফ্রিডখি সুর্নাউ।
১৯৫৫ - নোবেল বিজয়ী স্কটিশ অণুজীব বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং।(জ.১৮৮১)
১৯৯১ - ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা অধ্যক্ষ আবুল কাশেম।
২০০৬ - হেগ অবস্থিত জাতিসংঘের কারাগারে বলকানের কসাই হিসেবে খ্যাত ৬৩ বছর বয়সী স্লোবোদান মিলোসেভিচের মৃত্যু হয়।
ছুটি ও অন্যান্য[সম্পাদনা]
আড়াল করুন দেস
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জীর সকল দিন এবং মাস
আজ: ১১ মার্চ ২০২৩জানুয়ারি
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
ফেব্রুয়ারি
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯
মার্চ
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
এপ্রিল
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০
মে
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
জুন
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০
জুলাই
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
আগস্ট
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
সেপ্টেম্বর
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০
অক্টোবর
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
নভেম্বর
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০
ডিসেম্বর
১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
প্রাসঙ্গিক তারিখসমূহ
০ জানুয়ারি৩০ ফেব্রুয়ারি৩১ ফেব্রুয়ারি০ মার্চ
বিষয়শ্রেণীসমূহ: গ্রেগরীয় পঞ্জিকার দিনমার্চ
১১ মার্চ ছিল প্রথম ভাষা দিবস
ঐতিহাসিক ১১ মার্চ। ইতিহাসে দিনটি একটি স্মরণীয় দিন। জেনে নেই ১১ মার্চ ইতিহাসে কেন এতো বিখ্যাত। ভাষা আন্দোলন তথা এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ১১ মার্চ একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।
১১ মার্চ ছিল প্রথম ভাষা দিবস
মো. আবু রায়হান
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২০, ০২:২১ PM , আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৫৪ PM
© ফাইল ফটো
আজ ঐতিহাসিক ১১ মার্চ। ইতিহাসে দিনটি একটি স্মরণীয় দিন। জেনে নেই ১১ মার্চ ইতিহাসে কেন এতো বিখ্যাত। ভাষা আন্দোলন তথা এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ১১ মার্চ একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।
এটাই ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তথা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এ দেশে প্রথম সফল হরতাল। ১১ মার্চ প্রতিবাদের যে ভিত রচনা হয়েছিল তারই সূত্র ধরে তৎকালীন সরকার ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় এবং এই সংগ্রামের পরিপূর্ণতা লাভ করে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের সিঁড়ি বেয়েই ৫২ 'র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং পরবর্তীকালে স্বাধীনতা আন্দোলন বিকাশ লাভ করে।যার চূড়ান্ত পরিণতি ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন করাচিতে অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তান গণপরিষদের এ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই পূর্ব বাংলায় ( বাংলাদেশ) বাংলাকে অফিস-আদালতের ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম করার জন্য ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলনেরই প্রতিফলন ঘটে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত বাঙালি সাংসদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কর্তৃক উত্থাপিত ভাষা বিষয়ক একটি প্রস্তাবের মধ্যে। প্রস্তাবটিতে তিনি বলেন, ‘উর্দু ও ইংরেজির সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহারের অধিকার থাকতে হবে’।তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন, পাকিস্তানের পাঁচটি প্রদেশের ছয় কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে চার কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাংলা ভাষাভাষী। সুতরাং বিষয়টিকে প্রাদেশিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাংলাকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে দেখা উচিত। তাই তিনি গণপরিষদে উর্দু ও ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে অন্তর্ভূক্তির দাবি করেন।
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবটি পাকিস্তান গণপরিষদে আলোচিত হয় ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ বাঙালি পার্লামেন্ট সদস্যদের একাংশ এর পক্ষে সমর্থন দিলেও মুসলিম লীগ সমর্থিত এমপিরা এর বিপক্ষে অবস্থান নেন। প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান, মোহাজের ও পুনর্বাসনমন্ত্রী গজনফর আলী খান, পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন এবং গণপরিষদের সহ-সভাপতি তমিজউদ্দিন খান।প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান তার বক্তৃতায় বলেন, ‘পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা ও একটি সাধারণ ভাষার দ্বারা ঐক্যসূত্র স্থাপনের প্রচেষ্টা হইতে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করাই এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য।’ খাজা নাজিমুদ্দীন বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ অধিবাসীরই এই মনোভাব, ‘একমাত্র উর্দুকেই রাষ্ট্র ভাষারূপে গ্রহণ করা যাইতে পারে।’মুসলিম লীগ সংসদীয় দলের নেতাদের এসব বক্তব্যের জবাবে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাব সমর্থন করে গণপরিষদে কংগ্রেস দলের সেক্রেটারি রাজকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘উর্দু পাকিস্তানের কোনো প্রদেশেরই কথ্য ভাষা নয়। তা হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানের উপরতলার কিছুসংখ্যক মানুষের ভাষা। আসলে এ হলো অন্যদের উপর উচ্চশ্রেণির আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা। বাংলাকে আমরা দুই অংশের সাধারণ ভাষা করার জন্য চাপ দিচ্ছি না। আমরা শুধু চাই পরিষদের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি। ইংরেজিকে যদি সে মর্যাদা দেয়া হয়, তাহলে বাংলা ভাষাও সে মর্যাদার অধিকারী।’
কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ তারিখে প্রস্তাবটি মুসলিম লীগ নেতাদের অদূরদর্শিতা ও চাটুকারিতার কারণে বাতিল হয়ে যায়। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দমে না গিয়ে তিনবার বিভিন্ন সংশোধনীসহ বিলটি পুনরায় উত্থাপন করেন কিন্তু প্রতিবারই তা একই ভাগ্যবরণ করে।
গণপরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ার প্রতিবাদে ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের এক সভায় মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, পাকিস্তান গণপরিষদের সরকারি ভাষার তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দেয়া, পাকিস্তানের মুদ্রা ও ডাকটিকিটে বাংলা ভাষা ব্যবহার না করা এবং নৌবাহিনীতে নিয়োগের পরীক্ষা থেকে বাংলাকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদে ১১ মার্চ সমগ্র পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘট পালন করা হবে। সভায় আরো দাবি করা হয় যে, বাংলাকে অবিলম্বে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা বলে ঘোষণা করা হোক। এই সভা ও সভার সিদ্ধান্ত ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১১ মার্চের ধর্মঘটের প্রতি চতুর্দিক থেকে জন সমর্থন আসতে থাকে।
১১ মার্চের হরতাল সফল করতে ১ মার্চ, ১৯৪৮ তারিখে প্রচার মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন অধ্যাপক আবুল কাশেম (তমদ্দুন মজলিস সম্পাদক), শেখ মুজিবুর রহমান (পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য), নঈমুদ্দীন আহমদ (পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বায়ক) এবং আবদুর রহমান চৌধুরী (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া যুব সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের নেতা)। জাতীয় রাজনীতি এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এ বিবৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। ওই বিবৃতিতে ১১ মার্চের হরতালকে সফল করার আহ্বান জানানো হয়।১১ মার্চের হরতালকে সামনে রেখে তমদ্দুন মজলিস ও মুসলিম ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে ২ মার্চ ফজলুল হক হলে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কামরুদ্দীন আহমদ। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন রণেশ দাসগুপ্ত, অধ্যাপক আবুল কাশেম, অজিত কুমার গুহ, আজিজ আহমদ, সরদার ফজলুল করিম, নঈমুদ্দীন আহমদ, তফাজ্জল আলী, শামসুদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, আলী আহমদ, শহীদুল্লাহ কায়সার, অলি আহাদ, শওকত আলী, তাজউদ্দীন আহমদ,শামসুল হক, লিলি খান, আনোয়ারা খাতুন, মহিউদ্দিন, শামসুল আলম, কাজী গোলাম মাহবুব, আবদুল আউয়াল, প্রমুখ। সভায় ২৮ জন সদস্য নিয়ে প্রথম সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এর আহ্বায়ক নিযুক্ত হন শামসুল আলম। ওই সভায় ১১ মার্চ সমগ্র পূর্ব বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১১ মার্চের কর্মসূচি সফল করার জন্য ১৯৪৮ সালের ১০ মার্চ ফজলুল হক হলে অধ্যাপক আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় পরের দিনের ধর্মঘটের বিস্তারিত কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এভাবেই ১১ মার্চের হরতাল সফল করার কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছিল।
১১ মার্চ পালিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’
জ্ঞান তাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বক্তব্যে হইচই পড়ে যায়। একসময় ব্রিটিশদের কাছে লিখিত প্রস্তাব করা হয়, ভারতের রাষ্ট্রভাষা যাই হোক,
১১ মার্চ পালিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’
জ্ঞান তাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বক্তব্যে হইচই পড়ে যায়। একসময় ব্রিটিশদের কাছে লিখিত প্রস্তাব করা হয়, ভারতের রাষ্ট্রভাষা যাই হোক, তবে বাঙালিদের ভাষা হবে বাংলা। এরপর কোনো একসময় ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী ঘোষণা দিলেন, ভারতের রাষ্ট্রভাষা হবে হিন্দি। হিন্দিকে সমগ্র ভারতের ভাষার দাবি উঠার পর থেকে ভারতের মুসলমানরা ক্ষেপে যায়। তাদের পক্ষ থেকে দাবি উঠে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার।
উপমহাদেশে তখন ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছিল। হিন্দি হিন্দুদের ভাষা; অন্যদিকে উর্দু-আরবি মুসলমানদের ভাষাÑএ ধরনের মতবাদ ছিল। যদিও পশ্চিম পাকিস্তানিরা মনে করত বাংলাও হিন্দুদের ভাষা। তাই ধর্মীয় মতবাদের ওপর দেশভাগের পর পাকিস্তানিরা চাপ সৃষ্টি করে বাংলা ভাষার ওপর; যার ফলেই জন্ম হয় ভাষা আন্দোলনের।
ভাষার জন্য বাঙালির আন্দোলন ধীরে ধীরে এসে দাঁড়ায় বিশ দশকে। বিশেষ করে বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১৯৪৯ সাল নানাভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ সময়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পর্বে উপনীত করে ভাষা আন্দোলনকে। বাতলে দেয় বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তির পথ। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে প্রথম সফল গণবিস্ফোরণের স্মৃতি উজ্জ্বল করে রাখতে ১৯৪৯ সালের ১১ মার্চ পালিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’। চলে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত।
পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাকে সরকারি কর্মকান্ড ও শিক্ষার একমাত্র ভাষা এবং উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবিতে উত্তাল তখন পূর্ব পাকিস্তান। ঠিক তখনই ১৯৪৯ সালের ৯ মার্চ, আরবি হরফে বাংলা লেখার এক উদ্ভট প্রস্তাব করে পাকিস্তান সরকার। খাজা নাজিমুদ্দিনের উদ্যোগে দেওয়া এ প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুয়ানি বাংলা হরফ থেকে বাংলাকে মুক্ত করে ইসলামী ভাবাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রচলন করা।
সে লক্ষ্যে মওলানা আকরাম খানকে চেয়ারম্যান করে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। সরকারি উদ্যোগেই তৈরি হয় একটি বড় আকারের তহবিলও।
এ উদ্ভট প্রস্তাবের পক্ষে পার্লামেন্টে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের জাতীয় ঐক্য ও সাধারণ শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই সরকার গোটা পাকিস্তানে একই হরফ প্রচলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এ কাজের জন্য আরবি হরফই সবচেয়ে উপযুক্ত। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ পূর্ব পাকিস্তানের সব ভাষাতত্ত্ববিদ একযোগে আরবি হরফে বাংলা লেখার এ উদ্ভট প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে তমদ্দুন মজলিস ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। শেষ পর্যন্ত সে উদ্যোগ থেকে পিছু হটে সরকার। তবে অনড় থাকে রাষ্ট্রভাষা উর্দুর পক্ষেই।
আসে ২৩ জুন। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত উন্নাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ন্যায্য দাবি-দাওয়া পূরণে অস্বীকৃতিÑধীরে ধীরে বিক্ষুব্ধ করে তোলে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে। বিশেষ করে ভাষার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতি মুসলিম লীগের পক্ষপাতিত্ব নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিকদের।
মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক (টাঙ্গাইল) এবং যুগ্ম সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ।
একই সময়ে পীর মানকি শরীফের নেতৃত্বে পশ্চিম পাকিস্তানেও গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে এই দুই দল একীভূত হয়ে পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করে। আহ্বায়ক হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।
মাওলানা ভাসানী ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। নেতৃত্ব দেন ভাষা আন্দোলনসহ পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। পূর্ব পাকিস্তানি রাজনৈতিক নেতৃত্বে গড়ে ওঠা পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগ ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজপথের আন্দোলন সংগঠনের পাশাপাশি পার্লামেন্টেও সংগঠনটি সোচ্চার ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে।
"
বঙ্গবন্ধুকে ভুট্টোর তারবার্তা
জার্মানিতে গির্জায় এলোপাতাড়ি গুলি নিহত ৭
দূষণে এবার ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেল কুমিল্লা
প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
চাঁপাইয়ে ছিনতাইকারীদের বাঁচানোর তদবির
নিত্যপণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়বেন না
প্রধানমন্ত্রী আজ বিজনেস সামিট উদ্বোধন করবেন
যোগ্যতার শর্ত বাড়ায় মেডিকেলে পরীক্ষার্থী কমেছে
ময়মনসিংহে খুশির বন্যা
সড়কের একপাশ এখনো বন্ধ, যানজটে ভোগান্তি
বন্ধুরা, কেউ কি উত্তর জানেন?